আহমদিয়াদের সামনে পাকিস্তানে ফেরা ও মৃত্যুর আশঙ্কা
১৭ মার্চ ২০২১জার্মানিতে আহমদিয়াদের মুখপাত্র সুলেমান মালিক ডয়চে ভেলেকে জানান, ১৭ মার্চ ওই ৫৩৫ জনকে ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানে ফেরানো শুরু করার কথা৷ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের প্রত্যেককে পাকিস্তানে সবচেয়ে বেশি আহমদিয়ার বাস যেখানে সেই রাবওয়া অঞ্চলে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে জার্মানির প্রশাসনিক কআদালত৷
কিন্তু সাহার কালসুন নামের এক আহমদিয়া নারী কাঁদতে কাঁদতে জানান, তার স্বামীর এক চাচাকেও ব্রিটেন থেকে এভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছিল ২০০৫ সালে এবং তিনি বাঁচতে পারেননি্৷ তার ফেরার খবর সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে৷ গ্রামে এক বিদেশি গুপ্তচর এসেছে- এমন গুজব ছড়ানোয় গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে কালসুনের চাচাশ্বশুরকে৷
কালসুন এবং তার স্বামী আহমাদের আরেকজন নিকটাত্মীয়কেও মেরে ফেলা হয় শুধু আহমদিয়া হওয়ার কারণে৷ কালসুন জানান, স্কুলে অন্যরা তাকে ‘কাফের’ বলতো, নানাভাবে অপমান করতো বলে লেখাপড়াই শেষ করতে পারেননি৷ এক চাচাতো ভাইকে স্থানীয়রা নির্মমভাবে হত্যা করার পর আতঙ্কে খুরেয়ানওয়ালা গ্রাম ছাড়ে তার পরিবার৷ তারপর প্রকৌশলী স্বামীর সঙ্গে জার্মানিতে এসে ভেবেছিলেন বাকি জীবন শান্তিতে কাটাবেন৷ হঠাৎ দেশে ফেরার আশঙ্কা দেখা দেয়ায় কালসুন ও তার পরিবার এখন আতঙ্কিত৷ তাদের প্রশ্ন, যে দেশের সংবিধান আহমদিয়াদের মুসলিম হিসেবে স্বীকার করে না, আহমদিয়ারা মুসলিম হিসেবে সালাম দিলে সেই ‘অপরাধে’ মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে যে দেশে, যে দেশে আহমদিয়াদের মানুষ হিসেবে ন্যূনতম মর্যাদারও নিশ্চয়তা নেই- সেই পাকিস্তানে ফিরে গেলে তারা বাঁচবেন কী করে?
সব ভোটের জন্য...
আহমদিয়ারা মনে করেন, জার্মানিতে নির্বাচন আসন্ন বলে কঠোর অভিবাসন নীতি এবং তার প্রয়োগ দেখিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার৷
অন্যদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, আহমদিয়াদের দেশে ফেরালে তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পরে, কারণ, পাকিস্তানের সরকার অতীতে কখনো আহমদিয়া-নির্যাতনের ঘটনাকে গুরুত্ব দেয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রে হামলায় পরোক্ষ ইন্ধন জুগিয়েছে৷
লুইজা ফন রিশ্টহফেন/এসিবি