হাওড়ায় সাতটি কারখানা ও গুদামে আগুন, অসহায় শ্রমিকরা
শুক্রবার ভোরে হাওড়ার ফোরশোর রোডে আগুন লেগে মোট সাতটি কারখানা ও গুদাম পুড়ে গেছে। দিওয়ালির আগে দুরবস্থায় শ্রমিকরা।
ভোরে আগুন
ভোর পাঁচটা নাগাদ প্রথমে একটি চটকলে আগুন লাগে। ভোরের দিকে প্রবল হওয়া বইছিল। ফলে সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পাশে একের পর এক গুদামে আগুন ধরে যায়। কীভাবে এই আগুন লাগলো তা এখনো জানা যায়নি।
দমকলের চেষ্টা
প্রথমে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। তারপর আরো পাঁচটি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। তবে বেলা এগারোটার পরেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ধোঁয়াও বেরোচ্ছিল।
দাহ্য় পদার্থের জন্য
প্রথমে যে কারখানায় আগুন লেগেছিল, সেটি একটি চটকল। তারপর চট, গেঞ্জির গুদামে আগুন লাগে। যেসব গুদামে আগুন লেগেছিল, সেখানে রাখা জিনিস দ্রুত পুড়ে যায়। কারখানার যন্ত্রপাতির খুবই ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবয়াসীদের মাথায় হাত
দিওয়ালির আগে এরকমভাবে কারখানা ও গুদামে আগুন লাগার ফলে ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। তারা আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে চলে আসেন। কিন্তু কোনো জিনিস বের করার উপায় ছিল না। অনেকেই চোখের সামনে সব পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন। খুবই ভেঙে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কী বললেন শ্রমিক শঙ্করলাল
শহ্করলাল সাউ গেঞ্জির কারখানাতে কাজ করতেন। আগুন লাগার খবর পেয়েই দ্রুত এসেছেন। সবকেলাল জানালেন, ''পরশু দিওয়ালি। এর মধ্যে কারখানায় আগুন লাগলো। কোন মুখে পয়সা চাইব? কতদিন পরে কাজ পাব, ততদিন কী ভাবে রুজি-রোজগার চলবে কিছুই জানি না।''
অনামিকার কথা
অনামিকা নাগও গেঞ্জি কারখানায় কাজ করতেন। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে। তিনি বললেন, ''কী হবে জানি না। কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন অন্য কোথাও কাজও পাব না। খুব চিন্তায় আছি।''
'আগুন নেভানোর ব্যবস্থা ছিল না'
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেছেন, ''কারখানা ও গুদামে আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তারপর শাস্তিমূলক ব্যবস্তা নেয়া হবে।'' কিন্তু প্রশ্ন হলো, কারখানা ও গুদাম সবই পুরনো। এখানে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা আছে না নেই, তা খতিয়ে দেখা হয়নি কেন?
কেন বারবার এই আগুন?
কলকাতা ও তার পাশের শহর হাওড়ায় প্রায়ই আগুন লাগে। বাজারে, কারখানায়, বাড়িতে, হাসপাতালে। আগুন লাগার পর কয়েকদিন হইচই হয়। তারপর যে কে সেই। না কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়, না ব্যবসায়ীরা সচেতন হন, না পুরসভা তার দায়িত্ব পালন করে। ফলে আবার আগুন লাগে, লাগতেই থাকে।