সিরিয়ার সওয়েইদায় ৫ দিনের সংঘর্ষে নিহত ৩৬০
১৭ জুলাই ২০২৫সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ৩৬০ জনে দাঁড়িয়েছে৷ যুদ্ধ পর্যবেক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক দিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক রক্তপাতের পর সিরিয়ার সরকারি বাহিনী পুরো সওয়েইদা প্রদেশ ছেড়ে চলে গেছে।
সংঘর্ষের কারণ
রবিবার দামেস্ক ও সওয়েইদার মধ্যবর্তী একটি হাইওয়েতে সুন্নি বেদুইন সম্প্রদায়ের সদস্যরা একজন দ্রুজ যুবককে মারধর ও ছিনতাই করে। এই ঘটনার পর সংঘর্ষ শুরু হয়৷ এর প্রতিক্রিয়ায় দ্রুজ যোদ্ধারা বেদুইনদের অপহরণ করে, যা আরও সংঘাতের জন্ম দেয়৷
সরকারি হস্তক্ষেপ
সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে সরকার রাজধানী দামেস্ক থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই এলাকায় সৈন্য পাঠায়৷ প্রাথমিকভাবে দ্রুজ যোদ্ধারা সৈন্যদের প্রতিরোধ করলেও পরবর্তীতে তারা অস্ত্র সমর্পণ করে৷ মঙ্গলবার, সরকারি বাহিনী ১৯ জন দ্রুজ বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ
দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষার দাবি করে ইসরায়েল বুধবার দামেস্ক ও সওয়েইদা অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে আক্রমণ চালায়৷ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘‘এই হামলার উদ্দেশ্য দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া৷''
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সিরিয়াকে যুদ্ধের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার ও দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন৷
দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংঘর্ষ সিরিয়ার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের ফল৷ প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা'র সরকারের পক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোকে সুরক্ষা দেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷
জার্মানির হাইনরিশ বল ফাউন্ডেশনের মধ্যপ্রাচ্য বিভাগের প্রধান বেন্তে শেলার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সিরিয়ায় অনেক গোষ্ঠী মনে করে তাদের উদ্বেগ বা অধিকারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না৷'' অর্থনৈতিক সমস্যা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠন এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের দাবি মেটানো সরকারের জন্য কঠিন কাজ বলে মনি করেন তিনি৷
এসএসজি/এপিবি (ডিপিএ, এএফপি)