সাত দিনের মধ্যে অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ
২৯ আগস্ট ২০২৫নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাকরি হারিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারী। আদালতের নির্দেশ ছিল, এর মধ্যে যারা যোগ্য তারা আবার পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন। আগামী সেপ্টেম্বরে সেই পরীক্ষার নোটিফিকেশন জারি করেছে রাজ্য। সেই নোটিফিকেশনের ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিলেন যোগ্যপ্রার্থীদের আইনজীবী।
আদালতে অভিযোগ করা হয়, যারা অযোগ্য প্রার্থী, অর্থাৎ, যারা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছিলেন, তারাও এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছে কারণ, পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন অথবা রাজ্য সরকার এখনো পর্যন্ত অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করেনি।
রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন এই তালিকা প্রকাশ্যে আনা হয়নি। কিন্তু আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, তালিকা প্রকাশ না করার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা নেই। এরপরেই স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্যকে সাতদিনের মধ্যে তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয় আদালত। তালিকা প্রকাশ না হলে যোগ্যপ্রার্থীরা তা সুপ্রিম কোর্টের গোচরে আনতে পারবে বলেও জানিয়েছে আদালত। পাশাপাশি এতদিন তালিকা প্রকাশ না করার জন্য রাজ্যকে ভর্ৎসনাও করে আদালত।
সুপ্রমি কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে এদিন এই শুনানি হয়। যোগ্য প্রার্থীদের অবশ্য আদালত জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের পরীক্ষায় তাদের বসতেই হবে। ওই দিন পিছনো যাবে না। পরীক্ষা না দেওয়ার আবেদনও মানা হবে না। অন্যদিকে শুনানির সময় রাজ্য সরকারকে বিচারপতিরা জানান, তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর আদালত নিয়মিত নজর রাখছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ পাওয়ার পরে কল্যাণ জানিয়েছেন, রায় মেনে তারা তালিকা প্রকাশ করবেন। যাদের অযোগ্য শিক্ষক বলে রাজ্যের মনে হয়েছে, তাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এদিকে আইনজীবী এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''রাজ্য আদৌ এই তালিকা প্রকাশ করবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারা আবার কোনো বাহানা তৈরি করার চেষ্টা করবে। কারণ, এই তালিকা প্রকাশ করলে তৃণমূল দলটাই উঠে যাবে। সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত নেতামন্ত্রীদের পরদা ফাঁস হয়ে যাবে।''
বস্তুত দীর্ঘদিন ধরেই অযোগ্যদের নামের তালিকা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টও বার বার রাজ্যের কাছে এই অযোগ্যদের অথবা দুর্নীগ্রস্তদের নামের তালিকা চেয়েছে। কিন্তু রাজ্য সে তালিকা দেয়নি। এবার সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি সেই তালিকা স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ দিল।
এসজি/জিএইচ (লাইভ ল)