সব কিছুর উর্ধ্বে টাকা পয়সা!
২ জুলাই ২০০৮ভিন্ন একটি দেশে, ভিন্ন একটি সংস্কৃতিতে ব্যবসা করা সহজ নয় এবং বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো অর্জন করছে নানা ধরনের অভিজ্ঞতার৷ জার্মান সংস্হা Stihl ইলেকট্রিক করাত প্রস্তুত করছে চীনের কিংডাও শহরে৷
মেশিনের এই শব্দ খুবই পরিচিত৷ জার্মানি, আমেরিকা বা অন্য যে কোন দেশেও তা হতে পারে৷ দক্ষতা এবং অর্থনৈতিক দিকের বিভিন্ন খুটি-নাটি বিষয়ের পরিচয় দেয় এই শব্দ, চীনে এই সংস্হাটি বেশ সফলভাবেই কাজ করছে৷ উত্পাদন খরচ কম, শ্রম খরচও ইউরোপের তুলনায় সুলভ৷ পশ্চিমীদের তুলনায় চীনের মানুষরাও বেশ আলাদা৷
Jürgen Lehmann বলেন এখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ জড়ো হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি এসে মিশেছে এখানে৷ পশ্চিমের যে দেশগুলো এখানে ব্যবসা করছে তাদের মধ্যে থেকে জার্মানদের খুব সহজেই আলাদা করা সম্ভব৷ কারণ জার্মানদের সংস্কৃতি অন্য সব সংস্কৃতি থেকে ভিন্ন৷ আমরা সরাসরি কথা বলি, সমালোচনা করি খোলাখুলিভাবেই, যুক্তি দিয়ে তর্ক করি৷ আলোচনা করি সব কিছু নিয়ে৷ আমাদের এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে, শিখতে হবে৷ কর্মজীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবনকে আমরা আলাদা করতে পারি, কোন সমস্যা হয়না৷
Jürgen Lehmann Stihl কোম্পানির পণ্য উত্পাদনের বিষয়টি দেখাশোনা করেন৷ দুটি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে, কাজের ধরন শিখে নিচ্ছে অথচ একসময় ইউরোপীয় বেশ কিছু দেশের সঙ্গে চীনের শত্রুতা ছিল৷ সরাসরি বা খোলাখুলি সমালোচনা করা চীনের সমাজে এখন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য নয়৷ সন্তানরা কখনোই তাদের বাবা মায়ের সামালোচনা করে না, এমনকি সরকারের সমালোচনাও কখনো করা হয় না৷ অন্যের আত্মসম্মানবোধ এভাবেই রক্ষা করা হয়৷
লেমান আরো বলেন, এর ফলে আমরা জার্মানরা কোন কোন ক্ষেত্রে বেশ সমস্যায় পড়ি এবং তাতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়৷ এছাড়া সহকর্মীরাও সরাসরি সমালোচনায় অভ্যস্ত নয়৷ মাঝে মাঝে তাতে বেশ সমস্যা হয়৷ তারা মনে করে শুধু শুধু এবং অন্যায়ভাবে সমালোচনা করা হয়েছে৷ এর ফলে যা প্রয়োজন তা হল ধীরে ধীরে সময় নিয়ে একে অপরকে বোঝা তাহলেই একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব, সাফল্যও আনা সম্ভব৷
Stihl কোম্পানি ২০০৬ সাল থেকে ব্যবসা করছে চীনে এবং চীনের সমাজ সম্পর্কে তাদের কোন ধারনা ছিল না৷ এককভাবে কেউই সেখানে কিছু নয়, সব সময় দল বা গোষ্ঠী হিসেবে তারা নিজেদের উপস্হাপন করে৷ কে কার অপরে অবস্হান করছে তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ চীনে৷ একজন ইঞ্জিনিয়ার কখনোই স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে কাজ করতে বসবে না সেটার জন্য অন্য সাধারণ লোকজন রয়েছে৷
জার্মান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা চেষ্টা করছে চীনের সমাজের বিভিন্ন দিক জানতে, নতুন কিছু শিখতে৷ কারণ শুধুমাত্র ভাবের আদান প্রদান এবং সম্মান প্রদর্শনের মধ্যে দিয়েই সেখানে কাজ করা, ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব৷