শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ, ৮ হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র
১ জুন ২০২৫জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রোববার এই আদেশ দেন৷ ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী৷ ১৬ জুন এই মামলার তিন আসামিকে হাজির করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল৷ মামলার অপর আসামি পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন গ্রেপ্তার রয়েছেন৷
এর আগে রোববার দুপুর ১২টায় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে প্রসিকিউশন৷ শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করা হয়েছে৷
আইসিটি'র প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শেখ হাসিনারবিরুদ্ধে সাড়ে আট হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র আইসিটিতে জমা দেওয়া হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে৷ আদালত অভিযোগ আমলে নেয়ায় জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷
পাঁচ অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া, আন্দোলনকারীদের দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় নির্দেশ, প্ররোচনা, উষ্কানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা, ষড়যন্ত্র, অন্যান্য অমানবিক আচরণে মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন৷
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে বিচারকাজটি সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে৷
এর আগে ১২ মে চিফ প্রসিকিউটর বরাবর অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা৷
এই মামলা ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুইটি মামলা রয়েছে৷ যার মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে৷ রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্য মামলাটি হয়েছে৷
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার৷ অভ্যত্থানে সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে সেখানেই শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগের বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার৷
এফএস/আরআর (প্রথম আলো, ডেইলি স্টার)