বিকৃত ছবি ফেসবুকে প্রকাশ
১৩ জুলাই ২০১২শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে বাজে মন্তব্য বা তাঁর নকল ছবি প্রকাশের দায়ে সবর্শেষ আটক হয়েছেন শরিফুল ইসলাম৷ ব্যবসায়ী এই ব্যক্তির বাড়ি মাইজদি এলাকায়৷ রাজধানী ঢাকা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এই এলাকার অবস্থান৷ ইতিমধ্যে পুলিশ ইসলাম'এর বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে এবং তার কম্পিউটারে প্রধানমন্ত্রীর নকল ছবিটির সন্ধান পেয়েছে৷ কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি যোগ করে বিকৃত একটি ছবি তৈরি করা হয়েছে৷ এরপর সেটি ফেসবুকে ব্যবহার করেছেন শরিফুল৷
স্থানীয় পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবুল কালাম বলেছেন, ‘‘আমরা তাকে (শরিফুল ইসলাম) তার ফেসবুক পাতায় প্রবেশ করতে বলি৷ সেই পাতায় প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবির সঙ্গে অন্য এক অর্ধনগ্ন নারীর দেহ জুড়ে দিয়ে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল৷''
শরিফুল ইসলাম'এর একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা রয়েছে৷ পুলিশের দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরো কয়েক মন্ত্রীর ছবি এভাবে বিকৃত করেছেন৷ আবুল কালাম বলেছেন, ছবি বিকৃতের এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে শরিফুলের দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷
বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে ফেসবুকে বিভিন্ন রকমের বিকৃত প্রচারণা ক্রমশ বাড়ছে৷ বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ চলতি বছর এধরনের প্রচারণা রোধে বেশ কিছু আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এধরনের বিকৃত চর্চা বন্ধ করতে হলে ধারাবাহিক ‘মনিটরিং' এর ব্যবস্থা করতে হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি জাতীয় পর্যায়ে আমাদের একটি ‘মনিটরিং সেল' থাকা উচিত৷ নতুন নতুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বিভিন্ন ইস্যুও তৈরি হচ্ছে৷ ফলে একটি মনিটরিং সেল ধারাবাহিকভাবে এসব নেটওয়ার্ক মনিটর করতে পারে৷ তাছাড়া বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনি প্রক্রিয়া চালাতে ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে৷''
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় গত মাসে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ৷ এর আগে গত জানুয়ারী মাসে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে ১৯ বছর বয়েসি তরুণ আল নায়িম জুবায়েরকে আটক করা হয়৷ একই মাসে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক রুহুল খন্দকারকে ছয়মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত৷ প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করে ফেসবুকে মন্তব্য পোস্ট করার পর ঢাকার আদালতে তাঁকে তলব করা হয়েছিল৷ কিন্তু খন্দকার আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাঁকে এই শাস্তি প্রদান করা হয়৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম (এএফপি)
সম্পাদনা: জাহিদুল হক