শাহজাহানের বাড়িতে ১৯টি তালা ভেঙে ইডি প্রায় কিছুই পেল না
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়ির দরজার তালা ভেঙে ইডি তল্লাশি করলো। কিন্তু প্রায় কিছুই পেল না।
প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে
গতবার শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে সমর্থকদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয় ইডি-র কর্মকর্তাদের। একজন কর্মকর্তার মাথা ফাটে। তাদের তাড়া করে শাহজাহানের সমর্থকরা। তাই এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেড়শ জন জওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে গেছিলেন তারা। তাছাড়াও ছিল পুলিশবাহিনী।
১৯টি তালা ভেঙে
বাইরের গেট থেকে বাড়ির ভিতর আলমারি, ড্রয়ার মিলিয়ে মোট ১৯টি তালা ভাঙেন ইডির কর্মকর্তারা। সব দরজা, আলমারি, ড্রয়ারে তালা লাগানো ছিল। উপরের ছবিতে বাড়িতে প্রবেশের প্রধান দরজার তালা ভাঙা হচ্ছে।
কী পাওয়া গেল?
নিচের তলার ঘর থেকে কিছু নথি ও পাঁচশ টাকার পুরনো নোট পাওয়া গেছে। সেই সব নোট এখন অচল। সে সব বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আলমারি ও ড্রয়ারে বাড়ির সরঞ্জাম ও পোশাক ছিল। ইডি যে জিনিস পেয়েছে, তার মধ্য়ে আছে, এলআইসি সার্টিফিকেট। তারা দুইটি গয়নার বিল পেয়েছে, যে দোকান থেকে তা কেনা হয়েছিল, তা খুবই নামকরা। বিমা সার্টিফিকেট, বিমানের টিকিট, নির্বাচনী ফর্ম ও অন্য কিছু নথিও তারা পেয়েছে।
কোথায় শেখ শাহজাহান?
ইডি যখন তল্লাশি চালাচ্ছে, তখন শেখ শাহজাহান বা তার পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিলেন না। গত ৫ জানুয়ারি ইডি-র কর্মকর্তারা যখন শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করার জন্য গেছিলেন, সেদিন তিনি বাড়ি ছিলেন। গোলমালের মধ্যে সপরিবারে পালান।
ইডির নোটিশ
এই নোটিশটি শাহজাহানের বাড়ির দেওয়ালে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২৯ জানুয়ারি শাহজাহানকে ইডি-র অফিসে যেতে হবে।
বাড়ি সিল
শাহজাহানের বাড়ি সিল করে দেয় ইডি। দরজায় তালা লাগিয়ে তা সিলমোহর করে আটকে দেয়া হয়েছে। ইডি বা আদালতের নির্দেশ ছাড়া কেউ এই তালা খুলতে পারবে না।
জিনিস কোথায় গেল?
শাহজাহানের এক ঘনিষ্ঠ অনুগামী আনন্দবাজারকে বলেছেন, মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক ও রেশনকাণ্ডে অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানকে ইডি গ্রেপ্তার করার পরেই শাহজাহান সব কাগজপত্র ও জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। বাকি যা জিনিস ছিল, তা পাঁচ জানুয়ারি রাতে শাহজাহানের অনুগামীরা সরিয়ে ফেলে।
শাহজাহানের নামে বাজার
সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের নামে একটা বাজার আছে। এছাড়া তার বিপুল সম্পত্তি আছে। এই সময়ের রিপোর্ট বলছে,পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ার সময় শাহজাহান য়ে সম্পত্তির হিসাব দিয়েছিলেন তার মধ্যে চার কোটি টাকার ৪৩ বিঘে জমি, ন্যাজাটে দেড় কোটি টাকা দামের বাড়ি, ১৭টি গাড়ির কথা বলা হয়েছে। বছরে আয় দেখানো হয়েছিল ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩২ টাকা। দুই কোটি ৩৯ লাখ টাকার গয়না এবং প্রায় দুই কোটি টাকার ব্য়াংক ও অন্য সংস্থায় জমা আছে।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিয়োগ, তিনি রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া বছর দুয়েক আগে কলকাতা বন্দরে দুইশ কোটির হেরোইন ধরা পড়ে। তাতেও শেখ শাহজাহানের নাম ছিল। ২০২০ সালে বিডিওকে গাছে বেঁধে রাখার পিছনেও শেখ শাহজাহান ছিল বলে অভিয়োগ। তার বিরুদ্ধে তিন বিজেপি কর্মীকে খুন করার অভিযোগও আছে। তার বিরুদ্ধে জোর করে জমি নেয়ার অভিযোগও আছে।