ঋণখেলাপী হীরে ব্যবসায়ীকে কি দেশে ফেরাতে পারবে ভারত?
১৫ এপ্রিল ২০২৫সম্প্রতি ভারতীয় হীরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে গ্রেপ্তার করেছে বেলজিয়ামের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে টাকা নয়-ছয়ের একাধিক অভিযোগ আছে। বস্তুত, ভারতীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর অবশেষে তাকে বেলজিয়ামের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আর চোকসি গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই তার প্রত্যার্পণ চেয়ে বেলজিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ভারত। কিন্তু চোকসিকে আদৌ ভারত নিজেদের হাতে পাবে কি না, পেলেও কবে পাবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
বেলজিয়াম প্রশাসনের কাছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন চোকসির আইনজীবী। বলা হয়েছে শারীরিকভাবে চোকসি অসুস্থ এবং ভারত তাকে রাজনৈতিক কারণে দেশে ফেরাতে চাইছে। উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বেলজিয়ামের যে বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তি আছে, তাতে এই দুটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক কারণে বেলজিয়াম কোনো বন্দিকে প্রত্যার্পণ করে না। কোনো বন্দি অসুস্থ হলেও তাকে প্রত্যার্পণ করা হয় না। এখন প্রশ্ন হলো, চোকসির আইনজীবীর করা এই আবেদন বেলজিয়ামের আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে কি?
ভারতের প্রাক্তন সলিসিটার জেনারেল আমন লেখি মনে করেন, আদালতের কাছে চোকসির আইনজীবী রাজনৈতিক বিষয়টি উল্লেখ করলেও আদতে তা ধোপে টিকবে না। কারণ, চোকসি কোনো রাজনীতিবিদ নন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। ঋণ খেলাপি হয়ে তিনি যে বিদেশে পালিয়েছেন, তা সকলেরই জানা। তবে শারীরিক বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে চোকসিকে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি অসুস্থ।
এছাড়াও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। বেলজিয়ামের আদালতে প্রমাণ হতে হবে যে চোকসি অপরাধী। অর্থাৎ, ভারত যে কারণে চোকসিকে অপরাধী বলছে, বেলজিয়ামের কাছেও তা তা অপরাধ বলে প্রমাণিত হতে হবে। আর এই কারণেই প্রত্যার্পণ সহজে হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেলজিয়ামে চোকসির শুনানি হওয়ার পরেই প্রত্যার্পণের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল। বস্তুত, তাহাউর রানাকে হাতে পেতেও দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে ভারতকে। অ্যামেরিকার কাছে বহুবার আবেদন জানানোর পর অবশেষে গত সপ্তাহে তাকে দেশে আনতে পেরেছে ভারত। চোকসির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)