রাজনীতি ছাড়ছেন না ল্য পেন, আইনি লড়াই করবেন
১ এপ্রিল ২০২৫সংবাদমাধ্যম টিএফওয়ানকে তিনি বলেন, "আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল ঠিকই কিন্তু একই সঙ্গে অসংখ্য ফরাসি নাগরিকের কণ্ঠরোধ করা হল।" তিনি জানিয়েছেন ২০২৭-এর ফরাসি প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের আগের কোনো আইনি আবেদনের উপর তার ভরসা নেই।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তহবিলের টাকা নয় ছয় করার জন্য ফ্রান্সের অতি ডানপন্থি নেত্রী মারিন ল্য পেনের সরোকারই কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। ল্য পেনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত জানিয়েছে তিনি এবং তার দল ন্যাশানাল র্যালি পার্টি বা আরএন তহবিলের প্রায় তিরিশ লক্ষ ইউরো নয়ছয় করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই তহবিল একমাত্র পার্লামেন্টের কাজেই ব্যবহার হওয়ার জন্য বরাদ্দ থাকে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন ল্য পেন। তিনি স্পষ্ট জানান রাজনীতি এখনই ছাড়ছেন না তিনি। তিনি বলেন, "আমি নির্দোষ। আমি আইনি পথ ছাড়ব না। আবেদন করব। আইনের যেটুকু রাস্তা খোলা আছে, তা সে যতই ছোট হোক, আমি সেই পথ ছাড়ব না।"
তিনি দাবি করেছেন, ''এই রায় গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ংকর। আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভ হয়নি। তাই দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না।''
ল্য পেন সাংসদ থাকতে পারবেন। তিনি পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।
এবার কী হবে?
ল্য পেনের উপর এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মধ্যে চার বছর তাকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার শুনানি চলাকালীন রায় দান শেষ হওয়ার আগেই উত্তেজিত লে পেনকে আদালতকক্ষ থেকে চলে যেতে দেখা যায়। এই রায়ের পর আগামী নির্বাচনে লে পেনের লড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
ল্য পেনের উপর নিষেধাজ্ঞার পর তার দলের প্রেসিডেন্ট ২৯ বছরের জর্ডন বারদেলাকে ২০২৭-এর প্রার্থী করা হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। জনপ্রিয়তার নিরিখে ল্য পেনের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন তিনি। আদালত ল্য পেনের সঙ্গে তার দলের আরো আট জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। একই সঙ্গে আর ১২ জন পার্লামেন্টারি অ্যাসিস্ট্যান্টকেও দোষী সাব্যস্ত করেছে এই আদালত।
রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এই রায়ের পর ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু-সহ একাধিক রাজনীতিবিদ আদালতের ভোটে লড়তে দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে 'খুব বড় ব্যাপার' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, 'ল্য পেনের উপর পাঁচ বছর ভোটে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এরকম হয়েছে।"
রাশিয়া এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেছে এই রায় ইউরোপের গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।
এসসি/জিএইচ(রয়টার্স, এএফপি)