রবীন্দ্র সরোবরে ভেসে উঠেছে মরা মাছ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি রবীন্দ্র সরোবর। বিস্তীর্ণ এই লেক সংরক্ষিত। সেই সরোবরের জলেই গত রোববার এবং সোমবার ভেসে উঠেছে মরা মাছ। এর আগে ২০২১ সালেও একই ঘটনা ঘটেছিল। কেন এমন ঘটছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন কর্তৃপক্ষ। জলে অক্সিজেনের মাত্রা আচমকা কমে যাওয়ায় কি এমন ঘটনা ঘটল? বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জলে কোনোভাবে বিষাক্ত পদার্থ মিশেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরোবরের জল পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সাধারণত রবীন্দ্র সরোবরের জলে অক্সিজেনের মাত্রা ছয়ের কাছাকাছি থাকে। জলে অক্সিজেনের মাত্রা সাত থেকে আটের মধ্যে থাকার কথা। রবীন্দ্র সরোবরে অক্সিজেনের মাত্রা খারাপ নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। কিন্তু গত কয়েকদিন আকাশ মেঘলা থাকায় অক্সিজেনের মাত্রা আচমকা নেমে গেছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। আর সে কারণেই মাছের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, পরিস্থিতি বুঝে জলের ফোয়ারা বেশিক্ষণ চালানো হয়নি কেন? ফোয়ারা জলে অক্সিজেনের মাত্রায় ভারসাম্য তৈরি করে বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। একইসঙ্গে দেখা হচ্ছে, কোনোভাবে জলে বিষক্রিয়া হয়েছে কি না।
কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট সংখ্যা না বললেও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, অন্তত দেড় টন মরা মাছ ভাসতে দেখা গেছে জলে। দ্রুত সেই মাছ জল থেকে তুলে ফেলা হয়েছে। ফোয়ারাও চালানো শুরু হয়েছে তারপর।
পরিবেশবিদ দীপায়ন দে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''জলে অক্সিজেনের মাত্রা ছয় থাকলে মাছ মরে যাওয়ার কথা নয়। ফলে বিষক্রিয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেয়া যায় না।'' তবে পরিবেশবিদদের একাংশের বক্তব্য, বেশ কিছুদিন আকাশ মেঘলা থাকলে জলে অক্সিজেনের পরিমাণ আচমকা হ্রাস পাওয়ার ঘটনা ঘটে। বর্ষাকালে এমন ঘটনা অনেক সময়েই ঘটে থাকে।
উল্লেখ্য এর আগেও ২০২১ সালে রবীন্দ্র সরোবরে এমন ঘটনা ঘটেছিল। বস্তুত, জলের দূষণ কমাতে রবীন্দ্র সরোবরে সমস্ত রকম উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছটপুজোর সময় সরোবরের জলে ভেলা ভাসানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সরোবরের স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ ফেরেনি বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিবেশের দিক থেকে রবীন্দ্র সরোবরের গুরুত্ব অপরিসীম। দক্ষিণ কলকাতার আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে এই জলাভূমির গুরুত্ব অনেক। সেখানেই এমন ঘটনা ঘটায় চিন্তায় পরিবেশবিদেরা।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)