যে কারণে নামলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট
দায়িত্ব নিয়েছিলেন মাত্র পাঁচদিন আগে৷ কিন্তু দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট মানুয়েল মেরিনো৷ ছবিঘরে বিস্তারিত৷
পদত্যাগের ঘোষণা
রোববার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে পেরুর প্রেসিডেন্ট মানুয়েল মেরিনো পদত্যাগের ঘোষণা দেন৷ ১০ নভেম্বর রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি৷ কংগ্রেস প্রধান লুইস ভালদেজ রোববার সকালে মেরিনোকে পদত্যাগের আহ্বান জানান৷ তিনি নিজেও পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে৷ তাঁর মতে, পেরুর প্রত্যেকটা জীবনের মূল্য তার কাছে দামি৷
তদন্তের আহ্বান
দেশজুড়ে বিক্ষোভ এত ভয়াবহ রূপ নেয়ার পেছনে কারো ইন্ধন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন মেরিনো৷ তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেছেন বৈধভাবে তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন৷ যদিও বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সংসদীয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকাররাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে৷
অভিশংসন
প্রেসিডেন্ট ভিজকাররাকে ঘুষ নেয়া ও সরকারি অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে অভিশংসন করা হয়৷ ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোকুয়েগুয়ার গভর্নর ছিলেন ভিজকাররা৷ সে সময় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ইউরো ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে৷
দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ
এরপরই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মেরিনো৷ তবে, ভিজকাররা তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করলে বিক্ষোভ শুরু হয় দেশজুড়ে৷ আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত দুই দশকের মধ্যে পেরুতে এত বড় বিক্ষোভ আর হয়নি৷
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট মার্টিন ভিজকাররার পক্ষে বিক্ষোভে রাস্তায় নামেন হাজারো সমর্থক৷ পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে বিক্ষোভকারীরা তাদের দিকে পাথর ছুড়ে মারে৷ ফলে শনিবার রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানী লিমা৷
নিহত ও আহত
পুলিশ ও বিক্ষোভকারীর সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১২ জন আহত হয়েছে, নিখোঁজ ৪১ জন৷ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি শহরে৷ শনিবার বিক্ষোভ চলাকালে নিহত হয় দুই জন৷
মানবাধিকার সংগঠন গুলোর অভিযোগ
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং স্থানীয় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের অভিযোগ, গত কয়েকদিনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি শক্তি প্রয়োগ করেছে৷
সরকারের উপর চাপ
এই বিক্ষোভের ফলে পেরুর বিভক্ত কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্ট মেরিনোর নতুন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি হয়৷ বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নিলে পদত্যাগে বাধ্য হয় মেরিনো৷
আনন্দের বন্যা
মেরিনোর পদত্যাগের পরই পেরুর রাজধানীজুড়ে শুরু হয় আনন্দ মিছিল৷ গাড়িতে হর্ন বাজিয়ে উল্লাস করতে থাকে জনগণ৷
১১ এপ্রিল নির্বাচনের কথা ছিলো
দায়িত্ব নেয়ার পর আগামী বছরের ১১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছিলেন মেরিনো৷ ততদিন পর্যন্ত সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ আগামী রোববার কংগ্রেস নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেবে৷