যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতি দিতে চলেছে নিরাপত্তা পরিষদ
৯ জানুয়ারি ২০০৯ফিলিস্তিনি ছিটমহলে আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যেই একটি সম্ভাব্য চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি পাশ হতে পারে বলে আশা করছেন আরব ও পশ্চিমী দেশের কূটনৈতিকরা৷ এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রাক্তন নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা এইল্যান্ড জানান : হামাসের সঙ্গে এক্ষুনি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়া নিশ্চয়ই সম্ভব৷ কিন্তু এরজন্য হামাসকে তিনটি শর্ত মেনে নিতে হবে৷ প্রথমত, তারা ইসরায়েলের মাটিতে যা যা ধ্বংস করেছে – তা আবার পুনর্গঠন করবে৷ দ্বিতীয়ত, পরবর্তীতে আবারো কোন হামলা হলে, যারা এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, অর্থাৎ মিশর, ফ্রান্স এবং অন্যান্যদের উত্তর দিতে বাধ্য থাকবে হামাস৷ এবং তৃতীয়ত, মানবিক সাহায্য যাতে ঠিক মতো পৌঁছোতে পারে – তার জন্যও সাহায্য করবে তারা৷
উল্লেখ্য, এর আগে, একটি তাৎক্ষনিক যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আরব প্রতিনিধিদলের আহ্বান এবং হামাসের অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধের গ্যারান্টি দেওয়ার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের আহ্বানের পর, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা বিভক্ত হয়ে পরে৷ এমনকি কায়রোতে মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের প্রস্তাবিত ফ্রাঙ্কো-মিশরীয় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাটিও বাতিল হয়ে যায়৷
এদিকে, বুধবার গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর আবার পুরোদমে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল৷ গাজায় বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলী যুদ্ধবিমান৷ স্থল অভিযানে হামাস গেরিলাদের ওপর গোলাবর্ষণও করেছে ইসরায়েলী ট্যাংক৷ এছাড়া, বৃহস্পতিবার গাজায় চলমান হামাস-ইসরায়েল লড়াইয়ের মধ্যে, লেবানন থেকে ছোড়া কয়েকটি রকেট ইসরায়েলে আঘাত হেনেছে বলে প্রকাশ৷
তবে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে লেবানন৷ যদিও ইসরায়েল বলছে, ঐ রকেট হামলায় কমপক্ষে ২ জন আহত হয়েছে৷ ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলেও খবর৷
অন্যদিকে, গাজায় সব ধরনের ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করে দিয়েছে জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা৷ দৃশ্যত, বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন ট্রাক চালককে ইসরায়েলী ট্যাংক থেকে সৈন্যরা গুলি করে হত্যা করার পর, জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্ত নেয়৷ এ বিষয়ে জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থার মুখপাত্র ক্রিস গুননেস বলেন : গাজা অঞ্চলের মানুষের ভয়াবহতা কমাতে হলে, সেখানকার জনজীবনে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে হলে অবিলম্বে একটি চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন৷ আর একমাত্র তারপরই জাতিসংঘ পুণরায় তার সাহায্য কর্মসূচী শুরু করবে৷ কারণ, এ হেন নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমরা ট্রাক চালক বা সাধারণ মানুষকে কিছুতেই ফেলতে পারিনা৷
তাই এখন জাতিসংঘের সাহায্য তৎপরতা অব্যাহত রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন৷ প্রসঙ্গত, ২৭-শে ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬৫ জনে৷