যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান-পাকিস্তান বিষয়ক নতুন সমন্বিত নিরাপত্তা নীতি
৩ জুন ২০০৯কিন্তু প্রশ্ন হলো - ঐ অঞ্চলের জন্য অসামরিক কোন কৌশল কি আছে ?
গত এপ্রিল মাসেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন খুব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের দিকে সাঙ্ঘাতিক রকমের এক বিপদ সৃষ্টি হয়েছে৷ পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ঘাঁটি গেড়ে বসা উগ্র ইসলামপন্থী তালেবান গোষ্ঠী রাজধানী ইসলামাবাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে৷ ক্লিন্টন মনে করেন, তালেবান এবং ইসলামী জঙ্গিরা এই-যে এত দূর পর্যন্ত পৌঁছোতে পেরেছে, এটা জারদারি সরকারের ব্যর্থ রাজনীতির ফল৷
নয়া মার্কিন কৌশলের প্রভাব অবশ্য ইতিমধ্যে পাকিস্তানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সীমান্ত অঞ্চলে চালিত তাদের অভিযানের নতুন নতুন সাফল্যের খবর দিচ্ছে প্রতিদিন৷ সন্ত্রাসী হামলাও কমছে৷ তবে যুদ্ধ এলাকা থেকে হাজার হাজার অসামরিক মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে৷ এই পরিস্থিতি বেসামরিক ত্রাণকর্মীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে৷ জার্মানির উন্নয়ন সাহায্য ক্ষেত্রে বিষয়টি স্বভাবতই গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে৷
উন্নয়ন সাহায্যমন্ত্রী হাইডেমারি ভিৎসরেক সয়েল বলছেন : সংঘাতগুলি অবশ্যই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত৷ তবে খেয়াল রাখতে হবে এই সংঘাত যেন এখন আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের দিকে না চলে যায়৷ বিশেষ করে সামরিক সংঘাত যেখানে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বহু মানুষ পাকিস্তানে উদ্বাস্তু হয়ে পড়ছে৷ বিদ্রোহীদের সামরিকভাবে মোকাবেলা করার বিষয়ে আমার সমর্থন আছে৷ তবে সব সময়ই খেয়াল রাখতে হবে, জনসাধারণ যাতে তার শিকার না হয়৷ বিশেষ করে, অসামরিক মানুষ যেন উদ্বাস্তু হয়ে না পড়ে৷ উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে আমরা জাতিসংঘের শরণার্থী কমিশনার-এর সঙ্গে একযোগে কাজ করছি৷ তাছাড়া, শিক্ষা এবং নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রেও আমরা সক্রিয়৷
শান্তি নিয়ে গবেষণা করেন যাঁরা, তাঁরা কিন্তু এই নতুন সামরিক কৌশলের ব্যাপারে সংশয়ী৷ গত মে মাসে জার্মানির পাঁচটি শীর্ষ শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই নীতির সমালোচনা করেছে৷ বলেছে, অসামরিক ক্ষেত্রে কৌশলের ঘাটতি রয়ে গেছে৷ এতে আরো মন্তব্য করা হয়েছে, ''৮ বছর ধরে আফগানিস্তানে ন্যাটোর এমন এক যুদ্ধে জার্মানি অংশ নিচ্ছে, যে-যুদ্ধ সামরিকভাবে জয় করা সম্ভব নয়''৷
জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তরের আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ব্যার্ন্ট মুৎসেলবুর্গ অবশ্য মনে করেন, আফগানিস্তানে শুধুমাত্র নিরাপদ এক পরিবেশে দেশের পুনর্গঠন ও উন্নয়ন সম্ভব৷ সেই নিরাপত্তাই নিশ্চিৎ করতে সক্রিয় জার্মান সৈন্যরা৷ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, সেখানে জার্মান তৎপরতায় অসামরিক দিকটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক