মোদী এবং নিজের অবসর নিয়ে কী বললেন আরএসএস প্রধান
২৯ আগস্ট ২০২৫আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ৭৫ বছর বয়স হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ বলছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) নিয়ম মেনে ৭৫ হয়ে গেলে পদত্যাগ করবেন মোদী। সংঘের নির্দেশেই সে কাজ করতে বাধ্য হবেন তিনি। বস্তুত, সেপ্টেম্বরে ৭৫ বছর হবে সংঘপ্রধান মোহন ভাগবতেরও। তিনিও নিজের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন, এমন আলোচনা চলছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভাগবত জানিয়ে দিলেন, নিজের অবসর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তিনি, ৭৫ হলে অন্য কাউকে অবসর নিতে হবে, এমন কথাও কখনো বলিনি। তার কথায়, ''আমরা সেকাজই করবো, সংঘ আমাদের যা করতে বলবে।''
ভগবৎ বলেছেন, ''সংঘ আমাদের যে কাজের দায়িত্ব দেয়, আমরা সেকাজ করতে বাধ্য থাকি। পছন্দ না হলেও। ৮০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পরেও যদি সংঘ আমায় নিজের কাজ চালিয়ে যেতে বলে, আমি তা করতে বাধ্য থাকবো।''
মোদীর অবসর বিষয়ে
এদিনের অনুষ্ঠানে একাধিক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অবসর নিয়ে ভাগবতকে প্রশ্ন করেছেন। এবিষয়ে বিজেপির নেতৃত্বের কাছেও একাধিকবার প্রশ্ন করা হয়েছে। ভাগবতের মতোই বিজেপির নেতৃত্বও মোদীর অবসরের প্রশ্ন কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, বিজেপিতে এমন কোনো নিয়ম নেই। এবিষয়ে উত্তর দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার এমন এক মন্ত্রী আছেন, যার বয়স ৮০ বছর। বিজেপি তাকে সরিয়ে দেয়নি। বিহারে বিজেপির অন্যতম নেতা জিতান রাম মাঁঝি ছোট এবং মাঝারি শিল্পের মন্ত্রী। ৮০ বছর বয়স হয়ে গেলেও তিনি যথেষ্ট ভালো কাজ করছেন।
কেন এই প্রশ্ন
২০১৯ সালে নির্বাচনের সময় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন অমিত শাহ। তিনি এখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেসময় একাধিকবার অমিত শাহ বলেছিলেন, যে সব ব্যক্তির ৭৫ বছর বয়স হয়ে গেছে, দল তাদের ভোটে লড়ার টিকিট দিতে চায় না। উল্লেখ্য, একথা বলেই লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো বরিষ্ঠ নেতাকে সেবার ভোটে দাঁড়াতে দেয়নি বিজেপি।
বিরোধীরা সে কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন বার বার। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, বিজেপির এই নিয়ম নরেন্দ্র মোদীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কেন? বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, তাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে এমন কোনো নিয়মের উল্লেখ নেই। শাহ ২০১৯ সালের নির্বাচনের নিরিখে ওই নিয়ম তৈরি করেছিলেন মাত্র।
এদিন ভাগবতও সে কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনিও জানিয়ে দিলেন, সংঘের সংবিধানে এমন কোনো লিখিত নিয়ম নেই।
বিতর্কের সূত্রপাত
চলতি বছরের গোড়ার দিকে নাগপুর গেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে সংঘপ্রধান ভাগবতের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এরপরেই মার্চ মাসে একটি চিঠি নিয়ে জলঘোলা শুরু করে বিরোধীরা। শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত দাবি করেন, অবসর এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নিয়ে আলোচনা করতেই আরএসএস মোদীকে ডেকে পাঠিয়েছিল। বস্তুত, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম নাগপুরে সংঘের সদর দপ্তরে গেছিলেন মোদী।
তবে বিজেপি এবং আরএসএস দুইপক্ষই এই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে।
এসজি/জিএইচ (মোহন ভগবতের সাংবাদিক সম্মেলন)