মানসিক প্রতিবন্ধী শিল্পীদের জন্য আর্ট স্টুডিও
২৬ জানুয়ারি ২০০৯কিন্তু এখন তাঁরা চাইছেন নিজস্ব একটি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করতে৷ চাইছেন শ্লুম্পারের শিল্পসংগ্রহগুলিকে সাজিয়ে গুছিয়ে জনসমক্ষে উপস্থাপন করতে৷
শীতের মিষ্টি রোদ প্রবেশ করেছে জানালা দিয়ে৷ রেডিও থেকে ভেসে আসছে উঁচু লয়ের সংগীত৷ কিন্তু শিল্পীদের কোনো দিকে ভ্রূক্ষেপ নেই তাতে৷ নিবিষ্ট চিত্তে এঁকে চলেছেন তাঁরা ছবি৷ শিল্পী নিকোল শ্মুল আট বছর ধরে শ্লুম্পারের সঙ্গে সম্পৃক্ত৷ পেশায় যে তিনি শিল্পী এটা তাঁরা কাছে বিশেষ একটা কিছু৷ তিনি বলেন, আমি আঁকতে পছন্দ করি বলেই এখানে আসি৷ এছাড়া আমি সাফল্যও পেতে চাই৷ তাই কোনো প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হলে বা ছবি বিক্রি হলে এগিয়ে যেতেও সাহস হয়৷
২৮ বছর বয়সী নিকোল একটি প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এখন৷ শিরোনামঃ ‘ভালবাসা, গর্ব ও আবেগ৷' তাঁর আঁকা বেশ কয়েকটি ছবি দেখা যাবে এই প্রদর্শনীতে৷ শ্লুম্পারের গ্যালারিতে ১০০টির মত ছবি ও ভাস্কর্য রয়েছে৷ এত স্বল্প পরিসরে কোনো প্রদর্শনী করতে হলে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয় উদ্যোক্তাদের৷ শ্লুম্পারের পরিচালক রল্ফ লাউটে বলেন, এখানে কোনো প্রদর্শনী করতে হলে খুব চাপ পড়ে ৷ এই কক্ষে আমরা এখন যেখানে বসে আছি, সেখানে সাধারণত ৩/৪ জন শিল্পী বসে তাঁদের ছবি আঁকেন৷ কোনো প্রদর্শনী উদ্বোধন করতে হলে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হয়৷ অনেক কিছু গুছাতে হয়৷ চার সপ্তাহের জন্য একটি প্রদর্শনী সুষ্ঠুভাবে করা প্রায় অসম্ভব৷
এই কারণে রল্ফ লাউটে শ্লুম্পারের জন্য একটি নিজস্ব মিউজিয়াম স্থাপন করতে আগ্রহী৷ উপযোগী একটি ভবনও খুঁজে পাওয়া গেছে এজন্য৷ হামবুর্গ শহরের অদূরে হামবুর্গ আলটোনায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ এই স্কুলটি কমপক্ষে ৫ বছর ধরে খালি পড়ে আছে৷ অযত্নে কোনো কোনো জায়গায় আস্তরও খুলে পড়ছে৷ এই দালানটি মেরামত করে মিউজিয়াম হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে৷
এজন্য প্রায় ২০ লক্ষ ৩০ হাজার ইউরো প্রয়োজন৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি৷ প্রতিবন্ধীদের শিল্পকলায় সহায়তা করলে সেভাবে হয়তো সুনাম ছড়ায়না৷ কিছুটা উষ্মার সাথেই বলেন রল্ফ লাউটে৷
এই মিউজিয়াম শুধু যে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের জন্য গড়ে তোলা হবে তা নয়৷ সব ধরনের শিল্পীদের জন্যই দ্বার উন্মুক্ত থাকবে মিউজিয়ামটির৷ প্রদর্শনী করা হবে বিষয়ভিত্তিক শিল্প নিয়ে৷ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও একজন শিল্পীর সৃষ্টি যে কতটা উন্নত মানের হতে পারে, তা তুলে ধরা হবে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে৷ অবশ্য ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের জন্য বিশেষ বোনাসের ব্যবস্থা থাকবে না৷ শিল্পকর্মের গুণগত মানই এখানে প্রাধান্য পাবে৷
‘‘শ্লুম্পার মিউজিয়ামে প্রয়াত শিলপীদের সেরা শিল্পকর্মগুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে৷ তবে জীবিত শিল্পীরাও নানা রকম সুযোগ পাবেন এখানে৷ তাঁদের বিষয়ভিত্তিক শিল্পকর্মের প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হবে এই মিউজিয়ামে৷ শুধু প্রয়াত শ্লুম্পার-শিল্পীদের মিউজিয়ামই হবেনা এটি,'' বলেন রল্ফ লাউটে৷ এছাড়া শ্লুম্পারের শিল্পীরা অন্যান্য কাজও করতে পারেন এই মিউজিয়ামে৷ দর্শকদের প্রদর্শনী ঘুরিয়ে দেখাতে পারেন তাঁরা৷ আয়োজন করতে পারেন পারেন শিল্পকলার বিভিন্নরকম কোর্স৷
এক্ষেত্রে নিকোল শ্মুলের খুব আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়৷ তিনি বলেন, একটি মিউজিয়াম পেলে, আমার খুব ইচ্ছা আছে এখানে কোর্স করানোর৷ অন্যদের আমি সেসবই শেখাব যাতে তাদের আগ্রহ রয়েছে৷