মরক্বোয় ‘কিছু’ গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাব দিলেন বাদশা মহম্মদ
১৮ জুন ২০১১কী কী সংস্কারের প্রস্তাব শোনা গেল
এক ঐতিহাসিক ভাষণে মরক্বোর বাদশা ষষ্ঠ মহম্মদের বক্তব্য, তিনি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা দিতে চান৷ যার অর্থ, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদের আওতায় কিছু ক্ষমতা এবার থেকে আসবে৷ আইনের অনুশাসন কার্যকরী হবে, বাড়বে মানবাধিকার, নারীর অধিকার, সুশাসনের সুযোগ৷ দুর্নীতি দমন করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তরুণদের জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধা দেওয়া হবে, ইত্যাদি৷ যদিও প্রধান ক্ষমতার কেন্দ্র বা চাবিকাঠি নিজের হাতেই রাখবেন অন্যতম শাসক বাদশা নিজে৷ এছাড়া বারবার ভাষাকে করা হবে সরকারি ভাষা৷ পাশাপাশি আরবিও থেকে যাবে যেমন ছিল৷ যাবতীয় প্রস্তাবগুলিতে সাধারণের মত সংগ্রহ করতে গণভোটের আয়োজনও করবেন বলে জানিয়েছেন বাদশা মহম্মদ৷ আগামী পয়লা জুলাই হবে সেই গণভোট৷
কেন বাদশার এইসব সংস্কারের ঘোষণা?
গত মার্চ মাস থেকেই মরক্বোতে শুরু হয়েছে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভ৷ বস্তুত মিশরের গণ অভ্যুত্থানের দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে সমগ্র এলাকা জুড়েই গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে একের পর এক দেশ৷ মরক্বোও তার বাইরে নয়৷ মার্চ মাসে গণজাগরণের আভাস পেয়ে তখনই বাদশা মহম্মদের ঘোষণা ছিল, তিনি সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রের দিকে দেশকে নিয়ে যাবেন৷ সেই প্রতিশ্রুতি রাখার অঙ্গই এই নতুন ঘোষণার চেহারা নিয়ে এসেছে৷
বিক্ষোভকারীরা কিন্তু খুশি নয়
তবে দেখা যাচ্ছে যে, যাদের উদ্দেশে বাদশার এই প্রতিশ্রুতি বা যাদের বিপ্লব বিক্ষোভ থামাতে এই গণতন্ত্রের পথে যাত্রার কথাবার্তা, তারা তেমন খুশি নয়৷ কারণটা কী? কারণটা খুবই পরিস্কার৷ বাদশা ষষ্ঠ মহম্মদের ঘোষণায় যতই সংস্কারের কথা বলা হোক না কেন, মরক্বোর সাধারণ মানুষের কাছে সেই প্রতিশ্রুতির তেমন মূল্য দেখা যাচ্ছে নেই৷ জাতীয় টেলিভিশনে বাদশার ভাষণের পরেও এর কারণেই বিক্ষোভ থেমে যায়নি বা প্রশমিত হয়নি৷ বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, মরক্বোয় গত চারশো বছর ধরে রাজতন্ত্র চলে আসছে৷ এই চারশো বছরের রাজতন্ত্রে বাদশার পরিবার এ ধরণের গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি বহুবার বিলিয়েছে, কিন্তু ক্ষমতার পূর্ণ দখল সব সময়েই রেখেছে নিজেদের হাতে৷ এবারেও নাগরিক অধিকারের যতটা সম্ভাবনার ছবি তুলে ধরা হয়েছে, বাস্তবে তার ঠিক কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে৷ আর সে কারণেই, শুক্রবার বেশি রাতে বাদশার টিভি ভাষণের পরেও হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ করে নি৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই