ভেনিস বিয়েনালেতে ভবন তৈরির নতুন উপকরণ দেখানো হচ্ছে
২৮ জুলাই ২০২৫১০ মে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত৷ এবারের বিষয় জলবায়ু পরিবর্তন৷
ভেনিস আর্কিটেকচার বিয়েনালের কিউরেটর কার্লো রাত্তি বলেন, ‘‘প্রকৃতির সঙ্গে আমরা কীভাবে আরও ভালোভাবে সম্পৃক্ত হতে পারি, এটি ধ্বংস না করে এর মধ্যেই শহর গড়তে পারি, তা আমাদের জানতে হবে৷''
কিউরেটর রাত্তির কাছে মানুষ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদের সমন্বয় করা গুরুত্বপূর্ণ৷
এমনকি লাভার মতোপ্রতিকূল প্রাকৃতিক শক্তিও৷ লাভার ধ্বংসাত্মক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে টেকসই সম্পদে রূপান্তরিত করতে চান স্থপতিরা, যা একটি শহর নির্মাণের উপকরণ হতে পারে৷
আইসল্যান্ডের প্যাভিলিয়নে বিষয়টি দেখানো হচ্ছে৷ ঐ প্যাভিলিয়নের কিউরেটর স্থপতি আর্নহিল্ডুর পালমাডটিয়ে বলেন, ‘‘আইসল্যান্ডে এখন মাঝেমধ্যে অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে৷ তাই আমরা ভাবছিলাম, লাভা নিয়ে কাজ করার জন্য এটি একটি ভালো সময়৷ নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায় কিনা ভাবছি৷ বর্তমানে ব্যবহৃত নির্মাণ উপকরণের বৈশিষ্ট্যগুলো লাভায়ও আছে: যেমন কাঠামো, কাচের ন্যায় বা ইনসুলেশন৷''
অগ্ন্যুৎপাতের সময় লাভা সরাসরি প্রক্রিয়াজাত করা হয়৷ এটি কি ভবিষ্যতে নির্মাণকাজে ব্যবহার হতে পারে?
ভেনিস বিয়েনালেতে স্থপতিরা ভবন তৈরির নতুন ধারণা ও উপকরণ খুঁজে পেতে জীববিজ্ঞানী, পদার্থবিদ এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে একসাথে কাজ করছেন৷
যেমন ভেনিসের লেগুন থেকে পাওয়া বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ইট তৈরি করে দেখাবো হচ্ছে৷ আরো আছে হাতির গোবর থেকে তৈরি ইট৷ তবে নির্মাণের সময় কার্বন নির্গমন কমানোর একমাত্র উপায় নতুন উপকরণ খুঁজে পাওয়া নয়৷ যেমন ড্যানিশ প্যাভিলিয়নে একটি বিদ্যমান ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ দেখানো হচ্ছে৷ ঐ ভবন তৈরির সময় পাওয়া উপকরণ দিয়েই এই কাজ হচ্ছে৷ স্থপতি সোরেন পিলমান বলেন, ‘‘আমরা অনেক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছি যারা আমাদের নির্মাণ বর্জ্য আবার কীভাবে কাজে লাগানো যায় তার কিছু উপায় দেখিয়েছেন৷ প্যাভিলিয়নে যা কিছু দেখতে পাচ্ছেন তা প্যাভিলিয়ন থেকেই এসেছে৷ অর্থাৎ, কিছুই সরানো হয়নি এবং উপকরণগুলো শুধু পুনর্গঠিত করা হয়েছে৷''
কাঠ, পাথর, বালি, কাদামাটিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সাধারণত যা করা হয় তা করার পাশাপাশি এগুলোকে আর অন্য কোনো কাজে লাগানো যায় কিনা তা ভাবা হচ্ছে৷
দুর্ভাগ্যবশত, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে এখন অনেক ধ্বংসাবশেষ তৈরি হচ্ছে৷ ‘সার্কুলারিটি অন দ্যা এজ' শীর্ষক ইনস্টলেশনে ইউক্রেনের স্থপতিরা দেশ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন৷ ‘রিথিঙ্ক' এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রোমান পুচকো জানান, ‘‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা যুদ্ধ ও ধ্বংসের কারণে সৃষ্ট এই অন্ধকার সময়ে ইউক্রেনীয়দের আরও উদ্ভাবনী, সবুজ, আরও ইতিবাচক পুনর্গঠনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে চাই৷ তাই আমরা ইউক্রেন পুনর্গঠনে এই উপকরণগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডিজিটাল মাধ্যমের সহায়তা নিচ্ছি৷''
এআই-এর সহায়তায় যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ একটি নতুন জীবন পাবে৷ ভেনিস আর্কিটেকচার বিয়েনালের সাড়ে সাতশর বেশি অংশগ্রহণকারীর লক্ষ্য একটাই৷ সেটি হলো, সংকটে থাকা একটি বিশ্বকে পুনর্গঠন এবং পুনর্নির্মাণ করা৷
গালা এলিজাবেত্তা/জেডএইচ