ভূমিকম্পের পর নানামুখী বিপদে মিয়ানমারের মানুষ
মিয়ানমারের ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে আবহাওয়া নতুন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজারে পৌঁছেছে৷
ধ্বংসস্তূপ
২৮ মার্চ সাত দশমিক সাত মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমার কেঁপে ওঠে৷ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধসে পড়ে ভবন, ভেঙ্গে যায় সেতু ও সড়ক, বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭ লাখ বাসিন্দার দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালায়, যেমনটা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে৷
মৃত্যু
সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিকম্পে এখন তিন হাজার ৪৭১ জন প্রাণ হারিয়েছেন৷ আহত হয়েছেন চার হাজার ৬৭১ জন৷ নিখোঁজের সংখ্যা ২১৪৷
পাঁচদিন পর উদ্ধার
তিন এপ্রিল সাগাইং শহরের এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই উদ্ধার হয়েছেন টিন মাউং৷ হোটেলের বিছানার নীচে পাঁচ দিন আটকে ছিলেন পেশায় শিক্ষক মাউং৷ টিকে থাকার জন্য দুইটি বিষয় ভূমিকা রেখেছে বলে জানান তিনি৷ একটি প্রথাগত শিক্ষা, অন্যটি নিজের মূত্র৷
খোলা আকাশের নীচে
বাড়ি-ঘর হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন মান্দালায় শহরের বাসিন্দারা৷ শনিবার শহরটিতে ৪৫ মিনিট ধরে ভারি বৃষ্টি ও বাতাস বয়ে যায় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ এতে তাদের শেষ সহায়সম্ভবলও ভিজে যায়৷
আরো বিপদ
রাশিয়ার জরুরি তৎপরতা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যকে দেখা যাচ্ছে ধ্বংসস্তূপের উপরে৷ উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা বৃষ্টির কারণে ধসে পড়া ভবনগুলো আরো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে৷ সেই সঙ্গে জটিল হয়ে উঠবে মৃতদেহ উদ্ধারের প্রচেষ্টাও৷ এদিকে রোববার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছানোর পূর্বাভাস ছিল৷ এমন আবহাওয়া অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নেয়াদের মধ্যে রোগের প্রকোপ বাড়াবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের৷
প্রয়োজন জরুরি সহায়তা
সাগাইং শহরে খাবারের জন্য লাইন ধরেছেন ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এই মানুষেরা৷ গৃহযুদ্ধের কারণে আগে থেকেই সংকটে থাকা মিয়ানমারের মানুষের জন্য এই ভূমিকম্প ভয়াবহ বিপদ বয়ে এনেছে৷ জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান টম ফ্লেচার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, পানীয় ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রয়োজন৷ বেঁচে থাকাদের মাথা গোঁজার জন্য প্রয়োজন প্রচুর তাঁবুও৷
ত্রাণ পৌঁছানোর চ্যালেঞ্জ
বিভিন্ন দেশ থেকে এরইমধ্যে ত্রান আসা শুরু হয়েছে৷ ছবিতে থিলাওয়া বন্দরে জাহাজ থেকে প্রতিবেশী ভারতের পাঠানো ত্রাণ খালাস করতে দেখা যাচ্ছে৷ জাতিসংঘের হিসাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দেশটির পাঁচ কোটির বেশি মানুষ বিপদে রয়েছেন৷ আন্তর্জাতিক সহায়তা যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া তাই কঠিন হয়ে পড়েছে৷ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ভূমিকম্পের আগেই দেশটিতে ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত ছিলেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷