ভারতে বাড়ছে হাসপাতাল, সংকট ডাক্তারের
জনসংখ্যায় চীনকে অতিক্রম করে শীর্ষে ভারত৷ বাড়তি এই জনসংখ্যাকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল তৈরি করা হলেও রয়ে গেছে ডাক্তারের সংকট৷
সব জেলায় হাসপাতাল
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর ভারতের নানা অঞ্চলে বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷ সরকারের পরিকল্পনা দেশের ৭৬১টি জেলার প্রতিটিতে একটি করে বড় হাসপাতাল তৈরি করার৷ কিন্তু সেজন্য কেবল অবকাঠামো তৈরি করলেই চলবে না, প্রয়োজন পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরও৷
ডাক্তার স্বল্পতা
১৯৯১ সালে ভারতে প্রতি এক হাজার মানুষে ডাক্তারের হার ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ- এক দশমিক দুই৷ কিন্তু এরপর জনসংখ্যা দ্রুত বাড়লেও ডাক্তারের সংখ্যা সে তুলনায় পর্যাপ্ত বাড়ানো সম্ভব হয়নি৷ ২০২০ সালে এই হার নেমে আসে শূন্য দশমিক সাতে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য অন্তত একজন ডাক্তার থাকা উচিত৷ ভারতের কাছাকাছি জনসংখ্যার দেশ চীনে এই হার দুই দশমিক চার৷
তথ্যের বিভ্রান্তি
সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য প্রায়ই তথ্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়৷ যেমন মার্চেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া দেশটির পার্লামেন্টকে জানান, ভারতে প্রতি ৮৩৪ জন মানুষের জন্য একজন ডাক্তার রয়েছেন৷ কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, এই সংখ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থা যেমন আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি এবং ন্যাচারোপ্যাথির চিকিৎসকদেরও৷
দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা
বড় শহরে ডাক্তারের সংকট তুলনামূলক কম হলেও দেশটির বেশিরভাগ মানুষের ঠিকানা গ্রামাঞ্চলে ডাক্তারের অভাব প্রকট৷ ফলে চিকিৎসা নিতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, এমনকি রাতও কাটাতে হয় হাসপাতালের সামনে৷ ফলশ্রুতিতে অনেকেই শত শত মাইল দূর থেকে শহরে আসেন ভালো চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আশায়৷ এর ফলে চাপ বাড়ছে শহরের হাসপাতালের ওপরও৷
আরো বেশি মেডিকেল কলেজ
এপ্রিলে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধনের পর মোদী জানান, আরো বেশি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তার সরকারের৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে ২০১৪ সালে মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ছিল ৫১ হাজার ৩৪৮৷ ২০২৩ সালের মার্চে সে সংখ্যা বাড়িয়ে এক লাখ এক হাজার ৪৩টিতে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে৷