ভারতী ঘোষের কাছ থেকে উদ্ধার টাকা বন্যায় নষ্ট
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩উদ্ধার করা টাকা রাখা ছিল ঘাটাল মহকুমা অফিসের ট্রেজারিতে। আনন্দবাজারের রিপোর্ট বলছে, এই টাকা বন্যার জলে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
ভারতী ঘোষ একসময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি মমতাকে 'মা' বলেও ডেকেছিলেন। তিনি মুকুল রায়েরও খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মুকুল রায় বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেয়ার পর ২০১৭ সালে ভারতী ঘোষ স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নেন। তার আগে অবশ্য তাকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের থার্ড ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট করা হয়েছিল।
দ্য প্রিন্টের রিপোর্ট বলছে, ২০১৮ সালের পর ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে ১৯টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যার চেষ্টা, সরকারি তথ্য ফাঁস, দাঙ্গা, আয়ের তুলনায় বেশি সম্পত্তির অভিযোগ করা হয়েছিল।
সেনা প্রতারণা মামলায় তার নাম জড়ায়। তখনই ভারতী ঘোষ ও তার ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসারদের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানায়। ২০১৯ সালে রাজ্য বিজেপি ভারতী ঘোষকে তাদের মুখপাত্র করে।
পুলিশ সূত্র দাবি করেছে, নোটবন্দির সময় পাঁচশ ও হাজার টাকার নোট দিয়ে ভারতীরা সোনা কিনেছিলেন। বাকি কিছু নোট থেকে গিয়েছিল। সেই নোটই উদ্ধার করা হয়েছিল এবং ট্রেজারিতে রাখা হয়েছিল। এখন বন্য়ায় সেই টাকা নষ্ট হয়ে য়াওয়ার পর ট্রেজারিতে রাখা অন্যদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া টাকা মেদিনীপুর আদালতে রাখা হচ্ছে।
ঘাটাল এমনিতে বন্য়াপ্রবণ জায়গা। প্রায় প্রতিবছরই বন্যা হয়। কিন্তু ট্রেজারিতে জল ঢুকে টাকা নষ্ট হওয়াটা রীতিমতো গুরুতর বিষয়। এই ট্রেজারি হলো মহতুমা শাসকের অফিস চত্বরে। দাবি করা হচ্ছে, ২০২১ সালে বন্যার জল ট্রেজারির দেওয়াল ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। তখনই টাকা নষ্ট হয়। ঘাটাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুজিত হাজরা আনন্দবাজারকে বলেছেন, বন্যার জলে টাকা নষ্ট হলে তখন কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, তা তদন্তের পর বোঝা যাবে। কেউ দায় এড়াতে পারবে না।
প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''প্রশাসন কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। ২০২১ সালের বন্য়ায় টাকা নষ্ট হলে এখন তা নিয়ে তদন্ত হয় কী করে? সঙ্গে সঙ্গে কেন হলো না?''
তার প্রশ্ন, ''বন্যার জল ঢুকছে দেখেও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি? ট্রেজারিতে তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র থাকে। সেখানে এই টুকু সতর্কতা থাকবে না? তদন্তের পর এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া দরকার। এটাও জানা দরকার সেই নষ্ট টাকার কি কোনো চিহ্নই নেই?''
জিএইচ/এসজি (আনন্দবাজার)