ব্যাপক ধরপাকড়, চাকরিহারাদের মিছিল হতে দেয়নি পুলিশ
চাকরিহারা শিক্ষকরা কলকাতায় অর্ধনগ্ন হয়ে প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। নবান্ন পর্যন্ত মিছিল হওয়ার কথা। ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়ে পুলিশ তা হতে দিলো না।
শিয়ালদহ স্টেশনে
চাকরিহারা শিক্ষকরা বলেছিলেন, শুক্রবার বেলা এগারোটা থেকে তারা শিয়ালদহ সাউথ স্টেশনের সামনে সমবেত হবেন। তারপর শুরু হবে প্রতিবাদ মিছিল। অর্ধনগ্ন হয়ে। তারা মিছিল করে রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
শুরু হলো ধরপাকড়
সাড়ে দশটা থেকে শুরু হলো পুলিশের ধরপাকড়। শিয়ালদহ নর্থ ও সাউথ স্টেশনে যাকেই সন্দেহ হয়েছে, পুলিশ তাদের আটক করেছে। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে।
প্রচুর পুলিশ মোতায়েন
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরেই মোতায়েন করা হয়েছিল মোট ৮৪০ কনস্টেবল, ২৫টি র্য়াফ বাহিনী। তাদের সঙ্গে ছিলেন পাঁচজন এসিপি, ১২জন ইন্সপেক্টর, ৬০ জন এসআই। জলকামান ছিল। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছিল। ১৫০ জন নারী পুলিশও ছিলেন। পুলিশ কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি। শিক্ষক মনে হলেই আটক করেছে।
কেন এই প্রতিবাদ?
চাকরিহারা শিক্ষকদের নেতা চিন্ময় মণ্ডল ডিডাব্লিউকে ফোনে জানান, সরকার তো তাদের মর্যাদাহানি করে রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। তাদের নগ্ন করে দিয়েছে। তাই তারা অর্ধনগ্ন হয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করতে চেয়েছেন। কীভাবে এই প্রতিবাদের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেসব তিনি বলেননি। তিনি বলেছিলেন, প্রতিবাদ হলেই আপনারা দেখতে পাবেন। কিন্তু পুলিশ তাদের কোনোরকম বিক্ষোভই দেখাতে দেয়নি।
দাঁড়াতেই দেয়নি পুলিশ
শিযালদহে পুলিশ চাকরিহারাদের দাঁড়াতেই দেয়নি। সোজা তুলে নেওয়া হয়েছে পুলিশ ভ্যানে। কয়েকজন হলেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে লালবাজার বা থানায়। আটকদের সঙ্গে সংবাদমাধ্যম যাতে কথা বলতে না পারে, সেজন্যও সচেষ্ট ছিল পুলিশ। চাকরিহারা শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা পুলিশকে আগাম জানিয়ে মিছিল করতে চেয়েছিলেন। তাদের সেই সুযোগও দেয়নি পুলিশ। ভয়ংকর তৎপরতা দেখিয়ে তারা চাকরিহারা শিক্ষকদের আটক করে।
ধর্মতলার ছবি
শিয়ালদহে এই পরিস্থিতির পর চাকরিহারারা ঠিক করেন, তারা ধর্মতলায় প্রতিবাদ জানাবেন। কিন্তু সেখানেও পুলিশ তাদের সমবেত হতে দেয়নি। শমিং মল, বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে যেখানেই তাদের সন্দেহ হয়েছে, সেখান থেকেই চাকরিহারাদের আটক করেছে।
আন্দোলনকারী ও পুলিশের বক্তব্য
ধর্মতলায় ছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষিকা শুভ্রা ঘোষ। তিনি ফোনে ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, পুলিশের তাড়া খেয়ে যাওয়ার সময় তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য চলে যান। শিয়ালদহ ও ধর্মতলায় পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণে চাকরিহারাদের নবান্ন অভিযোন করতে দেওয়া হয়নি। তারা গোলমালের আশঙ্কা করেছিলেন। সেইমতো ব্যবস্থা নিয়েছেন।
পড়ুয়া যা বললেন
আকাশ গুপ্ত এখনো পড়াশুনা করছেন। তিনি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, তার পাড়াতেও কয়েকজন শিক্ষকের চাকরি গেছে। এটা অ,ম্মানের। যাদের চাকরি গেলো, তারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কিনা, তা কেউ জানতে পারলো না। এমনিতে তিনি মনে করেন, অর্ধনগ্ন হওয়া ঠিক নয়। কিন্তু এই অর্ধনগ্ন প্রতিবাদ নিয়ে তার কোনো মতামত নেই।