বিয়ে নিয়ে বিপাকে আরব আমিরাত
১৬ জুলাই ২০০৯কারণ তারা মনে করে, দেশটির জাতীয় পরিচয় রক্ষা করার জন্য বিয়ে করা এবং তা টিকিয়ে রাখা খুবই জরুরি৷ আরব আমিরাতে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ বর্তমানে প্রতি চারটি বিয়ের একটি সেখানে ভেঙে যায়৷ বিষয়টিকে ঐ দেশের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য খুবই ক্ষতিকর বলে মনে করছেন অনেকেই৷
কালো বড় বোরখা বা দামি কোন কাজ করা কাপড় সারা শরীরে আবৃত করে, আর মাথায় সাদা টুপি পরে এখন আমিরাতের খুব কম স্থানীয় অধিবাসীই বিয়ে করতে যান৷ বিশেষ করে স্থানীয় কোন ছেলের সঙ্গে কোন স্থানীয় মেয়ের বিয়ে হচ্ছে এমনটি এখন আরব আমিরাতে কম চোখে পড়ে৷ এদিকে বিয়ে বিষয়টি আমিরাতে একটি ধর্মীয় বিষয়ও যা দেশটির সংস্কৃতির অংশ৷ তাই দেশটির সরকার ১৯৭০ সাল থেকেই বিবাহে উৎসাহিত করার জন্য প্রতি বরকে ৭০হাজর দিরহাম বা ১৯ হাজার ডলার অনুদান দিয়ে থাকে৷ কিন্তু এতো কিছুর পরও আমিরাতের স্থানীয় তরুণ সমাজ বিয়ের ব্যাপারে উৎসাহ পাচ্ছে না৷
বিষয়টি নিয়ে খুবই জোরেশোরে কাজ করছে আল-তাওয়াসেল নামের একটি সংগঠন৷ এই সংগঠনেরই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উইদ্দাদ সামাউই বলছেন, ব্যাপারটা তাদের কাছে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মতো৷ কারণ আরব আমিরাত এখন বিশাল এক বহুজাতিক দেশ৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বর্তমানে ২০০-র বেশি জাতিগোষ্ঠীর বাস৷ তাদের রয়েছে সংস্কৃতির বৈচিত্র্য৷ আর আমিরাতের স্থানীয় অধিবাসীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৫ শতাংশ বা ৬.৪ মিলিয়ন৷ বহিরাগত মানুষদের বিপুল সংখ্যার কারণে দেশটির সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছে, স্থানীয় সংস্কৃতি এখন হুমকির মুখে৷
এই সব দিক বিবেচনা করে তাওয়াসেল, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে বিবাহ নিয়ে সেমিনার এবং ওয়ার্কশপের আয়োজন করছে৷ যা তাদের বিয়ে সম্পর্কে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম কর্মকর্তা উইদ্দাদ৷ তিনি বলছেন, প্রথম দিকে বিষয়টি বেশ জটিল ছিল তাদের কাছে৷ কারণ আমিরাতের অধিবাসীরা বিয়েকে নিজেদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জীবনের অংশ বলে মনে করেন এবং বিষয়টি নিয়ে কারো সঙ্গে আলাপ করতে চান না৷
বিয়েতে একটি বড় অর্থ ব্যয় হয় ছেলেদের বিভিন্ন নিয়মকানুন মানতে গিয়ে৷ তাই সরকার খরচ কমাতে এখন দেশটিতে যৌথ বিয়ের আয়োজন করছে৷ যেমন, কিছুদিন আগেই আমিরাতের উত্তরাংশের শহর উম আল-কুইআইন-এ ১৯ জন তরুণ তরুণীর বিয়ের আয়োজন করা হয় একসঙ্গে৷
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন এমন এক ব্যক্তি রাসেদ আল কাসাফ বলছেন, বিয়ের জন্য এই সহায়তা স্থানীয় জনগণকে উ সাহিত করার জন্যই৷ যেনো তারা দেশের ঐতিহ্য রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে পারে৷
প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারুক