‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অনেকের মধ্যে একটা শিকারী মন থাকে’
২২ মার্চ ২০২৪‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশোতে এবারের পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন৷
এই পর্বে আলোচনা হয় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়তে থাকা অন্যায়-অপরাধ ও তার বিচারের দিকটি নিয়ে৷ সঞ্চালক প্রশ্ন রাখেন যে এই ধরনের অন্যায্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিক্ষকদের কেমন ভূমিকা থাকে৷
জবাবে অধ্যাপক কাবেরী গায়েন জোর দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের ‘শিকারী' মানসিকতার কথা৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে শিক্ষকদের অনেকের মধ্যেই একটা প্রবণতা দেখা যায়, আমি বলছি না সবাই এমন, কিন্তু প্রথম ক্লাসে এসে তারা জয়েন করেন, তারপর যেসব শিক্ষার্থীদের তাদের ভালো লাগে, তাদের সাথে একটা রোমান্টিক সম্পর্ক থাকে৷ আমার এক জুনিয়র সহকর্মী বললেন যে অনেকের মধ্যে একটা ‘শিকারী মন' আছে৷ তারা দেখা যাচ্ছে, একই ক্লাসের দুই তিনজনের সাথে তারা সম্পর্কে জড়ান, যা করার কথা না৷ এখানে একটা ‘কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট' সৃষ্টি হয়৷ যদি কোনো শিক্ষক এমনটা করেন, তাহলে তিনটি অপরাধ এখানে সংগঠিত হয়৷''
অধ্যাপক গায়েন জানান যে এই তিনটি অপরাধে আসলে ভালো নম্বরের প্রলোভন দেখানো হতে পারে৷ দ্বিতীয়ত, এতে করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক দুইপক্ষেরই নীতিগত অবস্থান ক্ষুণ্ণ হয় ও শিক্ষার্থীর বাকি সহপাঠীদের জন্য তা একটি অন্যায্য আচরণ, বলে জানান তিনি৷
এই প্রসঙ্গে এর আগে ড. মীজানুর রহমান উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঘটা অপরাধ বা অন্যায়ের প্রসঙ্গে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার গুরুত্বের দিকটি৷ তিনি আরো যোগ করেন, ‘‘ধর্মস্থান বা শিক্ষালয়ে যৌন নিপীড়ন কোনো নতুন বিষয় না, এটা আগেও হতো৷ ইউরোপেও এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তাদের ঘরের দরজা বন্ধ করতে পারবেন না৷ কিন্তু বাংলাদেশে নারীরা, শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে অনেক সাহসী হয়েছেন৷ নারী আমাদের সমাজে এগিয়েছে তার সাহসের জন্য, পুরুষ তাকে জায়গা করে দিয়েছে, এমনটা নয়৷ কিন্তু তারপরেও বেশিরভাগ ঘটনা এখনও নথিভুক্ত হয় না৷''
আজকের পর্বে এছাড়াও আলোচিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটা অবিচারের পেছনে থাকা রাজনীতি ও সংশ্লিষ্ট সামাজিক সমস্যাগুলির কথাও৷
এসএস/এআই