বাঙালির অতিপ্রিয় ফুচকা এবার দুর্গাপুজোর থিম
কুড়মুড়ে একটা গোলাকার বস্তুর ভিতরে অসাধারণ আলুমাখা এবং টক, নোনতা জল। আম-বাঙালির সেই ফুচকাই এবার পুজোর থিম।
আহা ফুচকা
ফুচকা ভালোবাসেন না, এমন বাঙালি দুর্লভ। মুখের ভিতরে পুরে কামড় দিলে জিভের সঙ্গে হৃদয়েও ঝড় ওঠে। সেই ফুচকাই দেখা গেল নতুন রূপে। বেহালা নতুন দলের মণ্ডপে।
ফুচকার কত নাম
গোলগাপ্পা, ফুলকি, টিক্কি, পানি কে বাতাসে, গুপচুপ, বাতাসি, পাকাডা, পানিপুরি কিংবা পাকোরিসহ ফুচকার কত নাম। তবে বাঙালি একে আদর করে ফুচকা নামেই ডাকে। বাংলাদেশ-সহ এই উপমহাদেশের এক অতি জনপ্রিয় স্ট্রিটফুড হলো ফুচকা।
মণ্ডপজুডে় নানারূপে ফুচকা
বেহালা নতুন দলের ৫৮ তম দুর্গাপুজোয় এবারের থিম 'তুষ্টি'। পুরো মণ্ডপটাই তৈরি করা হয়েছে ফুচকা এবং তার অনুষঙ্গ দিয়ে! এত ফুচকা ও তার উপাচার দেখে লোভ সামলানো দায়। এই মণ্ডপ দেখে যদি এরপর সবাই ফুচকা খেতে ছোটেন, তাহলে তাদের দোষ দেয়া যাবে না।
শিল্পীর দাবি
শিল্পী অয়ন সাহার পরিকল্পনায় তৈরি হয়েছে এই মনোহর ফুচকা-মণ্ডপ। তার কথায়, ‘তুষ্টি’ শব্দের মধ্যে একটা শান্তি, কোথায় যেন একটা আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়।
তিন মাসের চেষ্টার ফসল
এই ফুচকা-মণ্ডপ তৈরি করতে তিন মাস সময় লেগেছে। বহু শিল্পীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই ‘ফুচকা শিল্প’। চারিদিকে শুধু নানাভাবে ফুচকা শোভমান।
এক লাখ ফুচকা
এক লক্ষের বেশি ফুচকা দিয়ে পুরো মণ্ডপটা সাজানো হয়েছে, সঙ্গে রয়েছে ফুচকা তৈরির নানা সরঞ্জাম।
ফুচকার হদ্দমুদ্দ
মণ্ডপে ঢোকা থেকে বের হওয়া পর্যন্ত পুরোটাই ফুচকাময়। কোথাও ফুচকার বাক্স, কোথাও আবার ফুচকা রাখার বেতের পায়া- ফুচকার সরঞ্জাম দিয়ে এমন শিল্পকর্ম দেখে অবাক হচ্ছেন সকলে।
শালপাতার মোড়কে
একসময় শালপাতা মুড়িয়ে ফুচকা পরিবেশন করা হতো, সেই স্মৃতিকেও নিপুন শৈল্পিক ছোঁয়ায় জাগিয়ে তুলেছেন শিল্পী।
আছে শাতপাতার বাটিও
বর্তমানের শালপাতার বাটি দিয়ে মণ্ডপের চালা আর ঝাড়বাতি তৈরি করা হয়েছে।
ফুচকার ভিতরে দুর্গা
দেবী দুর্গা নিজেই এখানে একটি বিশালাকার ফুচকার ভিতরে অধিষ্ঠিতা। বাহন সহ চার সন্তান নিয়ে ফুচকার ভিতরেই অবস্থান করছেন অসুরদলনী।
ফুচকা উধাও হয়ে যাচ্ছে
ক্লাবের এক কর্মকর্তা সন্দীপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন , সপ্তমী যেতে না যেতেই নাকি মণ্ডপ থেকে প্রায় অর্ধেক ফুচকা উধাও! হাতের নাগালে ফুচকা পেয়ে অনেকেই লোভ সামলাতে না পেরে ফুচকা তুলে খেয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার স্মৃতি হিসেবে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
বিপদ জেনেও বেপরোয়া মানুষ
মণ্ডপে যে ফুচকা ব্যবহার করা হয়েছে, তা সবই আসল। কিন্তু গোটা পুজোয় ফুচকাগুলো মুচমুচে রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে কেমিক্যাল। সেই কেমিক্যাল পেটে গেলেই বিপদ। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বারবার মাইকে ঘোষণ করা সত্বেও কাজ হয়নি বলে জানাচ্ছেন তারা।
আছে বড়বাজারের ফুচকাও
মণ্ডপ সাজানোর জন্য যে পরিমাণ ফুচকা লেগেছে তার সিংহভাগটাই বানানো হয়েছে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে। বাকি ২০ হাজার ফুচকা কিনে আনা হয়েছে বড়বাজার থেকে।
ফুচকা বানানো শেখানো হয়েছে
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, হুগলি থেকে কারিগররা এসেছিলেন মণ্ডপ নির্মাণ করার জন্য। তাঁদেরকে ফুচকা বানানো শেখানো হয়েছে।