বাংলাদেশে 'মবের ভয়ের' পরিবেশে সাংবাদিকতা
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫সাংবাদিকদের ওপর হামলা, নির্যাতনের আরো খবর এসেছে গত তিন দিনে৷
গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিক মঞ্জুররুল আলম পান্নাসহ অনেকে মব সন্ত্রাসের শিকার হন৷ মব সন্ত্রাসের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দু'জন সাংবাদিকও ছিলেন৷ কিন্তু মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, উল্টো সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬জনকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় পাঠানো হয়েছে কারাগারে। আমন্ত্রণ পেয়ে সাংবাদিক মাহবুব কামালও যোগ দিয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। সেদিনের দুর্ভোগের বিষয়ে জানাতে গিয়ে ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন," ওই দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা আমি একটি কক্ষে মবের ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম। পরে মব, পুলিশ অন্যদের নিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাকে খবর দিলে আমি ডিআরইউ থেকে নিরাপদে চলে যাই।”
"পুরোটা সময় আমি আতঙ্কে ছিলাম। আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে, এরকম একটি অনুষ্ঠানে মবের হামলা হতে পারে। ওখানে শিক্ষক ছিলেন, সাংবাদিক ছিলেন, আরো অনেকে ছিলেন। আর মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান নিয়ে এরকম আলোচনা তো টুকটাক আগেও হয়েছে। কিন্তু এবার ঘোষণা দিয়ে হামলা হলো। কিন্তু পুলিশ মবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যাবস্থা না নিয়ে উল্টো যারা মবের শিকার, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করলো। এই মামলা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন না দিলে হয় না।,”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন," আমি নিজে এখন আর কোনো চাপের মুখে নাই। নিয়মিত অফিস করছি। কিন্তু সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না, শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনকে কেন কারাগারে পাঠানো হলো? এটা তো পরিকল্পিত। এটা তো ভয়ের পরিবেশ, মবের পরিবেশ তৈরি করে।”
এদিকে রবিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের দুই সাংবাদিক। তারা হলেন, সিফায়েত উল্লাহ সিফাত ও মাহফুজ আলম। পরিচয় জানার পরও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
ময়মনসিংহে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক সাংবাদিক। দৈনিক জনতার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানা প্রতিনিধি সংবাদিক মহিবুবল্লাহ খান ১১ আগস্ট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তার পরিস্থিতির কথা জানান।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চিত্র সাংবাদিক ইমরান হোসেনের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে খবর সংগ্রহ করতে দিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিক জাবেদ আখতার। তার ওপরও টার্গেট করে হামলা চালানো হয়।
জুলাই আন্দোলনের সময়ও সাংবাদিকরা হামলার শিকার হন। ২০২৫ সালের ১৫ এবং ১৬ জুলাই দুই দিনে ২৫ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হন।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট- এই আট মাসে ২৭৪ জন সাংবাদিক হামলা, নির্যাতন ও মামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নির্যাতন ও হামলার শিকার হন। সাংবাদিক নির্যাতনে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও প্রশাসন ও পুলিশের লোবজনও আছেন।
ওই সময়ে হত্যার হুমকি পেয়েছেন ১১ জন সাংবাদিক। আর ৪৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
‘আমি প্রতিদিনই হুমকি পাচ্ছি'
সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, "এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ব্যাপক হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিদেশ থেকেও কয়েকজন ইউটিউবার নিয়মিত হুমকি দিচ্ছেন। আর সাংবাদিকরা মবের ভয়ে থাকেন। কখন না আবার কোন সংবাদ মাধ্যমের সামনে গিয়ে গরু জবাই করে জিয়াফত করার ঘোষণা দেয়।”
তার কথা, " সাংস্কৃতিক উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার দায়ে সাংবাদিকদের চাকরি গেল। তারা বলবেন, আমরা তো চাকরি থেকে বাদ দিতে বলিনি। কিন্তু কোনো -না-কোনো ভয়ের কারণে তো তাদের প্রতিষ্ঠান চাকরি থেকে ওই সাংবাদিকদের বাদ দিতে বাধ্য হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপ খুলে সাংবাদিকদের ছবি দিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কালচারাল ফ্যাসিস্ট বলে ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। একটা ভয়ের পরিবেশ।”
নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মাসুদ কামাল বলেন, "আমি প্রতিদিনই টেলিফোনে হুমকি পাচ্ছি। দেশের বাইরে থেকে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বলা হচেছ, আমাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? আমি ভয় পাই না, কিন্ত আমার আত্মীয় -স্বজন কিন্তু ভয় পাচ্ছে। তারা মনে করছেন, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার মতো আমাকেও কোনো মামলায় জেলে পাঠানো হতে পারে।”
তার কথা, "সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় কারাগারে পাঠানো আমাদের জন্য একটা মেসেজ। যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের সরকার সরাসরি কিছু বলতে হয়তো লজ্জা পায়। তাই কোনো একটা মামলায় জড়িয়ে দেয়।”
গত ৪ আগস্ট ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়নি। তারা বলেছে, গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে টিআইবি বলছে, সাংবাদিক, লেখক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন, এর মধ্যে ২৬৬ জনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। তিনজন সাংবাদিক দায়িত্ব পালনকালে হামলায় নিহত হয়েছেন (আগস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত)।
টিআইবি বলছে, এ পর্যন্ত ২৪ জনের বেশি গণমাধ্যমকর্মীকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে; ৮টি সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং অন্তত: ১৫০ জন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোতে মব তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
টিআইবির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিয়ে সরকারের বিতর্কিত কার্যক্রম তিন দফায় ১৬৭ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে তথ্য কমিশন কার্যকর করা এবং তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতার বিষয়টিও তুলে ধরেছে টিআইবি।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-এর (আরএসএফ) বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে গত বছরের তুলনায় ১৬ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের সূচকে ১৮০টি দেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম। স্কোর ৩৩.৭১। বাংলাদেশ এবার গত বছরের তুলনায় পাঁচটি বিষয়ের (ইন্ডিকেটর) প্রতিটিতে ভালো করেছে। গত ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০২৪ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম। স্কোর ছিল ২৭.৬৪।
তবে আরএসফ ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবাদলে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত হওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।তাদের প্রতিবেদনে জনপ্রিয় কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের (যমুনা টিভি, সময় টিভি এবং একাত্তর টিভি) নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এসব টিভি চ্যানেল "সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকে সমর্থন করেছে, কিন্তু এখন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা থেকে বিরত থাকে। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই দুটি দৈনিক "একটি নির্দিষ্ট (পরিমাণ) সম্পাদকীয় স্বাধীনতা বজায় রাখতে সক্ষম" হয়েছে।
আরএসএফ বলেছে, "সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হলেও, বাংলাদেশ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই অস্পষ্টতা গণমাধ্যমে প্রতিফলিত হয়, যেখানে ধর্মীয় বিষয় সম্পর্কিত যে-কোনো কিছু সীমাবদ্ধ নয়।" বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এক কোটি হলেও "মূলধারার গণমাধ্যম কখনোই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে না" বলে মনে করে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি।
গত দশকে উগ্র ইসলামপন্থিদের 'সহিংস প্রচারণায়' সাংবাদিকদের হত্যার ঘটনা ঘটার কথা উল্লেখ করেছে আরএসএফ। পাশাপাশি এই গোষ্ঠীগুলো এখন "ধর্মনিরপেক্ষতা, বিকল্প মতের অধিকার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলা সাংবাদিকদের খুঁজে বের করতে এবং হয়রানি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে" বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
‘আপনি- আমিও যে-কোনো সময় আটক হতে পারি'
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, " সমাজে এক অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরাও। আসলে এখন নানা গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকদের লেখা বা মতামত তাদের পছন্দ না হলে, বিরুদ্ধে গেলেই তারা সাংবাদিকদের ওপর নানাভাবে আক্রমণ করছেন। তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হেনস্তা করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মব উসকে দেয়া হচ্ছে।”
"সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে সন্ত্রাস দমন আইনের মামলায় আটক প্রমাণ করে সরকার এখন আর সমালোচনা সহ্য করতে পারছে না। ফলে আপনি- আমিও যে-কোনো সময় আটক হতে পারি,” বলেন তিনি।
তার কথা, "সরকার এখন আর কোনো দাযিত্বই পালন করছে না। ”
‘আগের মতো এখনো আবার দালাল মালিক, সাংবাদিক হয়েছে'
সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীর বলেন, " যদি সরকারের দিক থেকে বলেন, তাহলে আমার ওপর কোনো চাপ নেই। সরকার তো আমাকে বলছে না যে, তুমি ওটা বলতে পারবে না, ওটা লিখতে পারবে না। কিন্তু হুমকি তো আমার প্রতি আছে। বিদেশ থেকে ইউটিউবাররা হুমকি দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হুমকি দিচ্ছে। প্রকাশ্যেও হুমকি দিচ্ছে।”
"আবার মালিক পক্ষ আমাকে ব্লক করে দিচ্ছে। তারা বলছে, তাকে টক শো-তে ডেকো না। এমন দুইজনকে ডাকছে, যারা সরকারের গুণগান গাইছে। আগে যেমন শেখ হাসিনার সময়ে দালাল মালিক, সাংবাদিক ছিল, এখনো আবার দালাল মালিক, সাংবাদিক হয়েছে,” বলেন তিনি।
তার কথা, " তবে আমি ভয় পাই না। আমি আমার নীতিতে অটল থাকবো। স্বাধীন সাংবাদিকতা করে যাবো। দেখি কী হয়।”
"মবকে এখন আবার কেউ কেউ প্রেশার গ্রুপও বলছেন। এর ফলে সাংবাদিকদের ওপর মব উৎসাহিত হচ্ছে,” বলেন তিনি।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় গত কয়েকদিনেই বেশ কয়েকরেজন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন জানিয়ে সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা বিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, " সাংবাদিকদের ওপর হামলা অতীতে হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে। সাংবাদিকদের লেখনি যাদের বিরুদ্ধেই যায়, তারাই সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। রাজনৈতিক নেতা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ সবাই- যাদের বিরুদ্ধে যায় তারাই হামলা করে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নির্লিপ্ত থাকে, কোনো ব্যবস্থা নেয় না।”
তার কথা, "সরকারের দিক থেকে কোনো বাধা সাংবাকিতার ক্ষেত্রে এখন আমরা দেখছি না। তবে রাজনৈতিক নেতা, মাস্তান, চাঁদাবাজ, তারা কিন্তু হামলা,মামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।”