ফ্রান্স ও মিশরের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
৮ জানুয়ারি ২০০৯যদিও স্থল অভিযান পুরোপুরি বন্ধ করতে এখনো রাজি হয়নি সেনাবাহিনী৷ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আভিটাল লাইবোভিচ জানান : প্রতিদিন কয়েক ঘন্টার জন্য গাজাতে অস্ত্রবিরতি জারি করা হবে৷ আর তখনই গাজাবাসীরা স্বাধীনভাবে ঘোরা-ফেরা করতে পারবে৷ পারবে ওষুধ-পত্র, খাবার-দাবার ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস লাভ করতে৷
এছাড়াও, ইসরায়েলী সেনাপ্রধানরা একটি মানবিক সাহায্য সরবরাহ করিডোর খোলার সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্টের কার্যালয়৷ এতে করে বিভিন্ন এলাকায় সাহায্য সরবরাহ সম্ভব হবে এবং ফিলিস্তিনিরা সাহায্য মজুদ রাখতে পারবে বলে জানিয়েছে তারা৷
কিন্তু এরপরও, গাজাতে একটি চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মিশর এবং ফ্রান্স৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইস-ও একটি চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি তাঁর সমর্থন প্রকাশ করেছেন৷ এর জন্য দুই বিবদমান পক্ষ এবং তাদের আরব প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ তবে অস্ত্রবিরতির মাঝ দিয়ে হামাস যেন আবারো নতুন করে অস্ত্রসজ্জিত না হয়, সে জন্যও হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷ এছাড়া, গাজাতে শান্তবাহিনী পাঠানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে জার্মানি৷
এদিকে, একটি চিরস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলী স্থল অভিযান বন্ধের জন্য এই নিয়ে দ্বিতীয় দিন বৈঠক করছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ৷ অন্যদিকে, ফ্রাঙ্কো-মিশরীয় যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছে উগ্রবাদী হামাস দলের এক মুখপাত্র৷ শুধু তাই নয়, ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজির কার্যালয় থেকেও বলা হয়েছে, যে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ – উভয়েই মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের প্রস্তাবিত ঐ ফ্রাঙ্কো-মিশরীয় যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা মেনে নিতে চলেছে৷
প্রসঙ্গত, বুধবারও গাজাতে স্থানিয় সময় দুপুর ১-টা থেকে বিকেল ৪-টা পর্যন্ত অস্ত্রবিরতি জারি করা হয়৷ সে সময় গাজাতে প্রায় ৫০০ ইসরায়েলী ট্রাক রসদ ও জ্বালানী সরবরাহ করে৷ অবশ্য এই সাময়িক অস্ত্রবিরতির পর, গাজার ওপর জোরদার হামলা চালায় ইসরায়েল৷ দুপক্ষের মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষের কথা জানায় গাজার অধিবাসীরা৷ বৃহস্পতিবার ভোরে গাজার দক্ষিণে অবস্থিত রাফাহ শহরে আবারো দু-দুটি বিমান হামলা করে তারা৷ এতে একটি বসতবাড়ি ও মসজিদ সহ সন্দেহভাজন একটি সুড়ঙ্গও গুঁড়িয়ে যায়৷
দৃশ্যত, ১২ দিনব্যাপী এই ইসরায়েলী আগ্রাসনে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে৷ আহতের সংখ্যা আরো প্রায় ৩১০০৷ মৃত্যু বরণ করেছে ৯ জন ইসরায়েলীও৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, অন্তপক্ষে ৩৫০ জন ফিলিস্তিনি জাবালা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা৷