প্রস্রাবের বিনিময়ে অর্থ দিতে রাজি ডারবান শহর
৯ নভেম্বর ২০১০স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এবং খরচ কমানোর জন্য শহরের বাড়ির বাগানগুলোতে প্রায় নব্বই হাজার টয়লেট বসিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ, যাতে একবিন্দুও পানি ব্যবহার করতে না হয়৷ এখন শহরের এই ধরণের ৫শ' টি টয়লেটে একটি করে কন্টেইনার বসাতে চাচ্ছে কর্তৃপক্ষ৷ যাতে ২০ লিটার ধারণ ক্ষমতার এই কন্টেইনারগুলোতে নাইট্রেটস, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ প্রস্রাব রাখা যায়৷ এবং পরে তা সারে পরিবর্তন করা যেতে পারে৷ নতুন এই প্রকল্পের আওতায় একজন পৌরকর্মী সপ্তাহে একদিন জেরিক্যানগুলো সংগ্রহ করবেন এবং এর বিনিময়ে ঐ পরিবারগুলোকে ৩০ ব়্যান্ড অর্থাৎ চার ডলার বা তিন ইউরো পরিমাণ টাকা দেবেন৷ যে দেশের তেতাল্লিশ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন দুই ডলারের কম টাকা দিয়ে জীবনধারণ করে সেই দেশটির জন্য সপ্তাহে চার ডলার কম নয়৷
ডারবান শহরের পানি এবং স্যানিটেশন বিভাগের প্রধান নেইল ম্যাক লিওড বলছেন, ‘‘আমরা যদি টয়লেটগুলোকে আয়ের একটা উৎস হিসেবে নিয়ে আসতে পারি তাহলে মানুষ টয়লেটগুলো ব্যবহার করতে চাইবে৷''
যুগ যুগ ধরে চলে আসা বিভিন্ন অনুশাসনের কারণে বেশিরভাগ মানুষই পানি ছাড়া এই টয়লেট ব্যবহারে নারাজ৷ পানি বিভাগের সঙ্গে কাজ করেন এমন একজন কর্মকর্তা লাকী সিবিয়া বলেন, ‘‘যখন শহর কতৃর্পক্ষ নগরবাসীর জন্য টয়লেটগুলো চালু করল তারা এটাকে ভালো চোখে দেখেনি৷ সাধরণ মানুষ এর গুরুত্ব বোঝেনি৷ তাদের ধারণা, মলমূত্র ছোঁয়াছুঁয়ি করা মানে দুর্ভাগ্য ডেকে আনা''
শতবছর আগে ইয়েমেনে পানিবিহীন টয়লেটের প্রচলন শুরু হয়৷ দক্ষিণ আফ্রিকার একজন পানি এবং স্যানিটেশন বিশেষজ্ঞ পিয়ের ইভ ওগার বলেন, ‘‘গ্রামে ভালোভাবে কাজটি করা যায়৷ কারণ মলমূত্র থেকে যে সার তৈরি করা হয় তা স্থানীয়ভাবেই ব্যবহার করা হয়৷'' তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু শহরে যাদের কাছ থেকে এই বর্জ্য আসছে এবং যারা এর পুনর্ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত করছে তারা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন৷ মানসিক এই বাধাকে অতিক্রম করে সেখানে কাজ করাটা খুব কঠিন৷''
২০০২ সালে ডারবানে কলেরা রোগ দেখা দিয়েছিল৷ সেই সময়েই লক্ষ করা যায় যে শহরের ১০ লাখ বাসিন্দার জন্য কোন মলমূত্র নিষ্কাশন ব্যবস্থাই নেই৷ তখনই চালু হয় প্রকল্পটি৷ পূর্ণাঙ্গ কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা এড়াতে এবং পানির সাশ্রয় ঘটাতে ডারবান শহর পানিবিহীন টয়লেট চালু করে৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক