পাথরপ্রতিমায় বাজি থেকে বিস্ফোরণ, এক পরিবারের সাতজনের মৃত্যু
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় বিস্ফোরণ, আগুন, চার শিশু-সহ মৃত সাত। বাড়িতে বাজি ছিল। বাজি ও গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লাগে।
বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো গ্রাম
সোমবার রাতে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠলো ঢোলহাট থানার দক্ষিণ রায়পুরের তৃতীয় ঘেরি এলাকা। সেখানে একটি বাড়িতে মজুত করে রাখা বাজিতে ও গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়। এক পরিবারের চার শিশু-সহ সাতজনের মৃত্যু হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনজন বাইরে থাকায় বেঁচে যান।
বাজির লাইসেন্স ছিল
ওই পরিবারের কাছে বাজি বানাবার লাইসেন্স ছিল। তবে সেটা সবুজ বা পরিবেশবান্ধব বাজি। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে বাজি তৈরি হতো। বাড়িতেও বাজি মজুত থাকতো। সোমবার রাতের বিস্ফোরণ ও আগুন এতটাই তীব্র ছিল যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। গ্রামবাসীরা চেষ্টা করেও বাড়ির মানুষদের বাঁচাতে পারেননি।
প্রশ্ন উঠছে
এলাকার মানুষের দাবি, সোমবার রাতে পরপর বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। সেই শব্দ থেকে মনে হয়েছে, বাড়িতে অবৈধ বাজি মজুত ছিল। না হলে ওই শব্দ আসত না, ওরকম বিস্ফোরণ হতো না। অনেকদিন ধরেই অবৈধ বাজি তৈরি হতো, বাইরের কারিগররা আসত বলে তারা অভিযোগ করেছেন।
পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেছেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে আগুন লেগেছে। বাজি বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও আছে। বিশেষজ্ঞরা সব খতিয়ে দেখে জানাবেন, কেন এটা হয়েছে। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরকুমার জানা বলেছেন, কোনো কারণে বাজিতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়েছে।
প্রশাসনের আশ্বাস
প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। গ্রামে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ফরেনসিক দল বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে।
একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ
গত ফেব্রুয়ারিতে কল্যাণীতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে তিনজন মারা যান। গত কয়েক বছরে মহেশতলা, খাদিকুল বা দত্তপুকুরের মতো জায়গায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে। সব জায়গায় অবৈধ বাজি বানাবার অভিযোগ উঠেছে।
কেন বারবার বিস্ফোরণ?
বিরোধীরা প্রশ্ন করেছেন, কেন বারবার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হচ্ছে? বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ''যে তীব্র বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে প্রশ্ন জাগছে, এটা কি নিছক বাজি কারখানা ছিল? তার মতে পশ্চিমবঙ্গ বারুদের স্তূপের উপর আছে। তৃণমূলকে বিসর্জন না দিলে তা ঠিক হবে না।'' তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ''পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে। আমরা দলীয় স্তরেও খোঁজ নিচ্ছি।''