পাকিস্তান রেঞ্জার্সের হাতে বন্দি বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ছুটলেন ফিরোজপুর
ভুল করে পাকিস্তানের সীমান্তে ঢুকে পড়েছিলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। পাক রেঞ্জার্স তাকে বন্দি করে। এখনো মুক্তি পাননি তিনি।
হুগলির ছেলে পূর্ণম
হুগলির রিষড়ায় সুশীলচন্দ্র আওয়ান রোডে পূর্ণমের বাড়ি। তিনি বিএসএফের হেড কনস্টেবল। বাড়িতে স্ত্রী, বাবা-মা ও সাত বছরের ছেলে আছে। পূর্ণমের বন্দি হওয়ার খবর পেয়ে গোটা পরিবার উদ্বিগ্ন।
ফিরোজপুর সীমান্তের ঘটনা
ফিরোজপুর সীমান্তে ডিউটি করছিলেন পূর্ণম। তখনই তিনি ভুল করে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ঢুকে পড়েন। তিনি যখন গাছের নিচে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন পাক রেঞ্জার্সরা তাকে ঘিরে ঘরে এবং বন্দি করে। তাকে এখনো মুক্তি দেয়নি পাকিস্তান। উপরের ছবিতে রিষড়ায় পূর্ণমের বাড়িতে বিএসএফের কর্মকর্তারা।
পূর্ণমের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা
পূীর্ণমের স্ত্রী রজনী অন্তঃসত্ত্বা। পূর্ণমের বন্দি হওয়ার খবর পেয়ে তিনি ভয়ংকর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। সোমবার তিনি বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে প্রথমে হিমাচলে বিএসএফ সদরদপ্তরে যান। তারপর ফিরোজপুর যান। কথা বলার পর বৃহস্পতিবার তিনি রিষড়া ফিরে আসেন।
কী কথা হলো?
রজনী জানিয়েছেন, ''হিমাচল প্রদেশের কাঁকরায় বিএসএফের হেডকোয়ার্টারের সিও জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা নাকি ঘটতেই থাকে। জম্মু-কাশ্মীরের ঘটনার জন্য ওঁকে ফেরাতে একটু দেরি হচ্ছে। তবে পূর্ণমকে ফিরিয়ে আনা হবে।''
ফিরোজপুরে কী বলা হলো রজনীকে?
রজনী জানিয়েছেন, হিমাচল থেকে তারা ফি্রোজপুরে যান। সেখানে তাদের বলা হয়, চিন্তার কারণ নেই। পূর্ণম ভালো আছেন। তার উপর নির্যাতন করা হয়নি। তিনি তাড়াতাড়ি যাতে ফেরেন সেই চেষ্টা চলছে। বার বার ফ্ল্যাগ মিটিং চলছে। কথা হচ্ছে পাকিস্তানের সঙ্গেও।
সাতদিনের মধ্য়ে না ফিরলে
পূর্ণম সাতদিনের মধ্যে না ফিরলে রজনীকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে বিএসএফের আইজি-র সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএসএফের কর্মকর্তারা। ফিরোজপুর থেকে বিএসএফের ডিআইজি ও আইজি-র সঙ্গে ফোনে কথা বলানো হয় রজনীর।
দিল্লি যেতে পারেন
রজনী জানিয়েছেন, সাতদিনের মধ্যে তার স্বামী না ফিরলে তিনি দিল্লি গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বাবা যা বলেছেন
পূর্ণমের বাবা ভোলানাথ সাউ বলছেন, তার ছেলেকে ফেরানোর দায় কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রের কাছ থেকে তিনি কোনো খবর পাননি। তাই উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে।
উদ্বিগ্ন মা
ছেলের জন্য চিন্তায় ঘুম হচ্ছে না মায়ের। চোখ জলে ভরে যাচ্ছে। উদ্বেগ এখন তার সঙ্গী।
আত্মীয়র বক্তব্য
পূর্ণমের আত্মীয় সত্যপ্রকাশ জানিয়েছেন, বিএসএফ কর্তারা ধৈর্য ধরতে বলেছেন। তারা ধৈর্য ধরবেন। অপেক্ষা করবেন পূর্ণমের মুক্তির জন্য। বিএসএফ থেকে এটাও বলা হয়েছে, ভয়ের কোনো কারণ নেই।
পহেলগামের পর ভারত-পাক উত্তেজনা
পহেলগামের ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। পাকিস্তানও পাল্টা কিছু ব্যবস্থা নেয়। দুই দেশই সীমান্তে বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছেন। এই পরিস্থিতিতে পূর্ণমের বন্দি হওয়ার ঘটনায় তার বাড়ির মানুষের চিন্তা বেড়েছে।