পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনকে ঠিক কতটা সহায়তা দিয়েছে?
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ এর ফলে ইউক্রেন যুদ্ধে বড় ধরনের সংকট তৈরির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
কেন সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা?
হোয়াইট হাউজে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথাকাটাকাটির পর তার যুক্তরাষ্ট্র সফর ভণ্ডুল হয়ে যায়৷ বিরল খনিজ আহরণে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন চুক্তিও সই হয়নি৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে কোনো সমঝোতা নয়, জেলেনস্কির এমন বক্তব্যের পর এক ঘোষণায় ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার কথা বলেছেন ট্রাম্প৷
মস্কোর দিকে ঝুঁকছে ওয়াশিংটন?
এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকেরা৷ ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধের মাধ্যমে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের তিন বছর পর ট্রাম্প মস্কোর দিকে ঝুঁকছেন বলেই ধারণা করছেন তারা৷
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার উপর প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক এবং আক্রমণাত্মক সক্ষমতা সরবরাহ করে৷ তবে এই সামরিক সহায়তা স্থগিতের প্রভাব যুদ্ধক্ষেত্রে পড়তে সময় লাগবে৷ ইউক্রেন এখন আগের তুলনায় মার্কিন সরবরাহের উপর কম নির্ভরশীল৷ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ইউরোপীয় অংশীদাররা এখন ইউক্রেনকে বড় ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে৷
সার্বিক সহায়তা হিসাবের চ্যালেঞ্জ
ইউরোপের দেয়া সহায়তার পরিমাণ বাস্তবে আরো অনেক বেশিও হতে পারে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ন্যাটোর সদস্য সব দেশ ইউক্রেনের প্রতি তাদের সাহায্যের প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ পরিমাণ প্রকাশ করে না৷ বিশেষ করে সংবেদনশীল তথ্য বিবেচনায় সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুত পরিমাণ অনেকক্ষেত্রেই গোপন রাখা হয়৷ ফলে প্রদত্ত মোট তহবিলের পরিমাণ হিসাব করাও বেশ কঠিন৷
সামগ্রিক আন্তর্জাতিক সাহায্য
কিল ইনস্টিটিউটের গবেষণায় স্বল্পমেয়াদী এবং বহু-বছর মেয়াদী সাহায্য, ঋণ এবং সামরিক সহায়তার প্রকাশিত তহবিলের পরিমাণ জানা যায়৷ এই গবেষণায় দেখা গেছে ইউক্রেনে সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে ইউরোপ৷ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আর্থিক, সামরিক এবং মানবিক সহায়তায় ১৩২ বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে ইউরোপ৷ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সব মিলিয়ে সহায়তা দিয়েছে ১১৪ বিলিয়ন ইউরো৷ (১ ইউরো = প্রায় ১৩০ টাকা)
সামরিক সহায়তায় এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনকে আর্থিক সহায়তায় ইউরোপ এগিয়ে থাকলেও সামরিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে রয়েছে৷ ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সামরিক সহায়তা বাবদ ৬৪ বিলিয়ন ইউরোর বেশি বরাদ্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ অন্যদিকে সামরিক বরাদ্দে ইউরোপ সহায়তা করেছে ৬২ বিলিয়ন ইউরোর কম৷ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার মধ্যে রয়েছে ট্যাংক, ব্র্যাডলি যানবাহন, হাউইটজার, হাইমার্স রকেট লঞ্চার এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা৷