পশ্চিমবঙ্গ, বিহারসহ বেশ কিছু রাজ্যে ভারত বনধের প্রভাব
সম্প্রতি সংসদে চারটি শ্রম আইন পাস হয়। তার প্রতিবাদে দেশজুড়ে ভারত বনধের ডাক দিয়েছিল বামপন্থি শ্রম সংগঠনগুলি।
কেন এই ভারত বনধ?
বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, যে শ্রম আইন ও নিয়ম চালু হয়েছে, তাতে শ্রমিকদের অধিকার খর্ব হয়েছে। তাদের কাজের সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারা যাতে ইউনিয়ন গঠন করতে না পারে, ধর্মঘটে যেতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের দাবি, চারটি শ্রম আইন বাতিল করতে হবে, সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ ও সেখানে চুক্তিতে কর্মীনিয়োগ বন্ধ করতে হবে, দেশজুড়ে ন্যূনতম বেতন ২৬ হাজার টাকা করতে হবে ইত্যাদি।
বেশ কয়েকটি রাজ্যে বনধের প্রভাব
মূলত বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ভারত বনধের প্রভাব পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, গুজরাটের মতো রাজ্যে। বিহারে এই বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই বিরোধী দল আরজেডি ও কংগ্রেসও বনধের দিন সক্রিয় ছিল। বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাংক, পোস্ট অফিস, যানবাহন, অটো-টোটো চলাচলে প্রভাব পড়েছে। বেশ কিছু জায়গায় রেল ও সড়ক অবরোধ হয়েছে।
অন্য মিছিলে তেজস্বী ও রাহুল
ভারত বনধের দিন মিছিল করলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পাটনায় তাদের মিছিল ছিল বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের প্রতিবাদে। পাটনায় বনধের প্রভাবও পড়ে যথেষ্ট। বিহারে এই বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভোট। সেখানে এখন ভোটার তালিকা সংশোধন একটা বড় বিতর্কের বিষয়। বিহারে বিরোধীদের মহাজোটে আরজেডি, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলিও আছে।
পাটনায় থেমে গেছিল অটো
পাটনার অধিকাংশ অটোচালক ভারত বনধে যোগ দেন। সার সার অটোকে এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা দেয়।
পাটনায় মিছিল
পাটনায় বনধ সমর্থকরা মিছিল বের করেন। বিভিন্ন রাসল্তায় টায়ার পোড়ানো হয়। সড়ক অবরোধ করা হয়।
আহমেদাবাদে বড় মিছিল
গুজরাটের আহমেদাবাদে বনধ সমর্থকরা বড় মিছিল বের করেন। প্রচুর নারীকে সেই মিছিলে যোগ দিতে দেখা যায়।
কলকাতায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি
কলকাতায় ভারত বনধকে ঘিরে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে। যাদবপুরে রাস্তায় টায়ার জ্বালানো হয়। লেক টাউনে পথ অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ মেন স্টেশনে কিছুক্ষণ রেল চলাচল ব্যাহত হয়। পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।
কলকাতায় মিছিল
কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় বনধ সমর্থকরা মিছিল করেন। বাম শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনটি মিছিল বের করা হয় শিয়ালদহ, যাদবপুর ও খিদিরপুরে। তাছাড়া এলাকাভিত্তিক ছোট ছোট মিছিল বের হয়।
মিছিলে বাম ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা
কলকাতার মিছিলে বামপন্থি বিভিন্ন বামপন্থি ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা পতাকাসহ মিছিল করেন। সিটু, এআইটিইউসিসহ বিভিন্ন বাম ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন।
সরকারি ব্যাংকের দরজায়
কলকাতায় বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ দেখান ধর্মঘটের সমর্থকরা। অনেক ব্যাংকের দরজা বন্ধ দেয়া হয়। কলকাতায় ব্যাংক, বিমা, পোস্ট অফিসের কাজে ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে বলে বামপন্থি ট্রেড ইউনিয়নগুলি দাবি জানিয়েছে।
ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ
অনেক ব্যাংকের সামনে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়। ধর্মঘটের সমর্থকরা এই বিক্ষোভ দেখান। উপরের ছবিটি ইউকো ব্যাংকের সামনে বড় বিক্ষোভের।
পশ্চিমবঙ্গের অন্য জায়গায় প্রভাব
হুগলিতে বেশ কয়েকটি চটকলের সামনে বিক্ষোভ হয়। বেশ কয়েকটি জায়গায় রেললাইন ও সড়ক অবরোধ করা হয়। বংশীহারি থানার আইসি এক বিক্ষোভকারীকে চড় মারেন। তা নিয়ে বিতর্ক হয়। দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গে বেসরকারি বাস খুব একটা পথে নামেনি। বিভিন্ন জায়গায় বনধ সমর্থকরা মিছিল করেন। বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়।