নিরাপদ বাসস্থানের সংগ্রামে মুম্বাইয়ের মধ্যবিত্ত
ভারতের মুম্বাইতে আকাশছোঁয়া বাসাভাড়া৷ তা এড়াতে বিপজ্জনক সরকারি আবাসনে কীভাবে জীবন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ, দেখুন ছবিঘরে৷
মুম্বাইয়ে বাসার দাম
মুম্বাই ভারতের সবচেয়ে জনবহুল শহর৷ ফলে এখানে বাসাভাড়া বা তার দাম অন্যান্য অনেক শহরের চেয়ে বেশি৷ সিঙ্গাপুর ও শাংহাইয়ের মতো শহরের সাথে টক্কর দেয় মুম্বাইয়ের ওয়ার্লির মতো অভিজাত পাড়ায় চার দেওয়ালের বাসার দাম৷
ওয়ার্লির এদিক ওদিক
মুম্বাইয়ের অভিজাত পাড়াগুলির অন্যতম ওয়ার্লি৷ এখানে বাস করেন ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির কন্যা৷ তার প্রাসাদসম বাড়ির পাশেই একটি ভগ্নদশা সরকারি আবাসন৷ সেখানে থাকেন প্রায় ছয়শ মানুষ৷ ও এরা প্রত্যেকেই মধ্যবিত্ত৷ ভাঙাচোরা এই আবাসনে বিপজ্জনক লোহালক্কড়ের মাঝেই খেলে বেড়াচ্ছে খুদে বাসিন্দারা৷
যেমন জীবন তাদের
এই ওয়ার্লি ডেয়ারি কোয়ার্টার আবাসনে পাঁচ বছর ধরে নিজের পরিবার নিয়ে থাকছেন অনিল আইওয়ালে৷ এখানে থাকার অভিজ্ঞতা কেমন, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বর্ষাকালে এখানে যা কিছু ভেঙে পড়তে পারে৷ এর চেয়ে উন্নত জায়গায় থাকার সাধ্য নেই বলেই এমন বিপজ্জনক জায়গায় থাকতে বাধ্য হই৷’’
বর্ষায় মুম্বাইয়ের ওয়ার্লি যেমন
জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মুম্বাই পুরোপুরি জলমগ্ন থাকে, বিশেষ করে ওয়ার্লি পাড়াটি৷ ঝুঁকি আছে জেনেও এমন বাসায় দিনের পর দিন কাটিয়ে যান এই আবাসনের বাসিন্দারা৷ আরবসাগরের কাছে থাকার ফলে এই আবাসনে অল্প বৃষ্টিতেই পানি ঢুকে যায়, দেওয়ালে শ্যাওলা ধরে যায়, যা ঠিক হতেও অনেক দিন লাগে৷
ওয়ার্লিতে থাকার খরচ
বাসাগুলি কত বড় তার ওপর নির্ভর করছে এই আবাসনের বাসা ভাড়া৷ মহারাষ্ট্রের সরকার ইতিমধ্যে এই আবাসনকে বিপজ্জনক স্থান হিসাবে ঘোষণা করলেও মানুষ এখানে থাকছেন৷ প্রতি মাসে সরকারকে ভাড়া বাবদ আট থেকে ১৩ হাজার রুপি দিচ্ছেন তারা৷ সরকারি আবাসন ছাড়া এই খরচে মুম্বাইতে বস্তির ঝুপড়ি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়না৷
বাসিন্দাদের জন্য যা করছে সরকার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করকারি কর্মচারী জানান যে, ঝুঁকি আছে জেনেও বাসিন্দাদের বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেয়নি সরকার৷ কিন্তু শহরের অন্য একটি প্রান্তে তাদের বিকল্প বাসস্থানের প্রস্তাব দিয়েছে৷ কিন্তু সেই আবাসন মুম্বাই থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় চাকরিজীবী বাসিন্দারা যেতে চাইছেন না৷
চলছে দৈনন্দিন জীবন
ওয়ার্লি আবাসনের বাসিন্দারা তাদের বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন৷ শ্যাওলা ধরা দেওয়ালে হেলান দিয়ে হোমওয়ার্ক সারছে বাচ্চারা৷ ভাঙা রেলিং, ঝুলে পড়া বারান্দাতে চলছে আড্ডার আসর৷
শুধু যাওয়া আসা
চতুর্থ তলে চলছে সারাইয়ের কাজ, তাই সেই তলের বাসিন্দারা আশ্রয় গড়ছেন এই আবাসনেরই অন্য কোনো কোণায়৷ কখনো ঘরে পানি ঢোকার ফলে বা কখনো ভেঙে পড়া ঘর সারাইয়ের জন্য, ওয়ার্লি আবাসনের বাসিন্দাদের জীবনে শুধুই অনিশ্চয়তা৷