নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে কারজাই-জারদারির বৈঠক
১ এপ্রিল ২০০৯এসময় তাঁরা সীমান্ত এলাকায় জঙ্গি হামলা বন্ধের উপর গুরুত্বারোপ করেন৷
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের দুই প্রেসিডেন্ট আংকারা বৈঠকে ইসলামি জঙ্গিবাদ ও মাদক পাচারের বিরুদ্ধে পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন৷ দেশ দু'টির সংঘাতপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে দ্য হেগে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের একদিন পরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল এর আমন্ত্রণে তুরস্কে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির মধ্যে এটি তৃতীয় বৈঠক৷ ২০০৭ সালের এপ্রিলে আংকারায় তাঁদের মধ্যে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ আর একই বছর ডিসেম্বরে ইস্তাম্বুলে হয়েছিল দ্বিতীয় বৈঠক৷ এবারের বৈঠকে তিন দেশের প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল তাঁদের এ বৈঠককে দু'দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সফল আলোচনা বলে অভিহিত করেছেন৷
তুরস্ক বেশ কিছুদিন থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে৷ উল্লেখ্য, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সাথে ঐতিহাসিকভাবে তুরস্কের সুসম্পর্ক রয়েছে৷ ন্যাটোর সামরিক বাহিনীর অংশ হিসেবে তুরস্কের প্রায় ৮০০ সৈন্য আফগানিস্তানে নিয়োজিত রয়েছে৷ এছাড়া তুরস্ক আফগানিস্তানে বিদ্যালয় ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ আফগান সেনা ও পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজে বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে৷
জারদারির পূর্বসুরি পারভেজ মুশাররফ এর সময় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বেশ টানা-পোড়েন চলছিল৷ ঐ সময় দু'দেশের নেতৃবৃন্দ তাদের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তাহীনতার জন্য পরস্পর পরস্পরকে দোষ দিয়ে আসছিলেন৷ প্রেসিডেন্ট জারদারির দায়িত্ব গ্রহণের পর দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উন্নত হয়৷
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের শেষ দিকে মার্কিন হস্তক্ষেপে কট্টরপন্থী তালেবান সরকারের পতন হলে আফগানিস্তান থেকে চরমপন্থীরা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম উপজাতীয় অঞ্চলে আশ্রয় নেয়৷ তখন থেকে ন্যাটো কিংবা মার্কিন সৈন্যদের উপর হামলার অধিকাংশ পরিকল্পনা পাকিস্তানের মাটিতে গ্রহণ করা হয় বলে আফগানিস্তান দাবি করে আসছে৷ এছাড়া আফগানিস্তানের অভিযোগ, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান সন্ত্রাস দমনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে না৷ পাকিস্তান অবশ্য এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে৷ পাকিস্তান বলছে, জঙ্গি দমন করতে গিয়ে ২০০২ সাল থেকে দেশটিতে দেড় হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য নিহত হয়েছে৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারুক