নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব
১৭ মে ২০০৫�াত্ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২৫ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷
জাতিসংঘের মহাসচিব কোফি আন্নান বিশ্ব সংস্থার বড় রকমের এক সংস্কার ঘটানোর লক্ষ্যে চলতি বছরেই কিছু প্রস্তাব রেখেছেন৷ তাঁর যুক্তি ছিল - নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান যে-গঠন, সেটা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর শক্তি সাম্যেরই দ্যোতক৷ এখনকার বিশ্বরাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতি রেখে তার সংস্কার ঘটাতেই হবে৷ উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের ভিটো ক্ষমতার অধিকারী পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট বৃটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া আর চীন৷ বাকি দশ সদস্য অস্থায়ী৷ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যায়ক্রমিক ভিত্তিতে দু বছরের জন্য নির্বাচিত হয় এই অস্থায়ী সদস্যরা৷
জার্মানি, ভারত, জাপান এবং ব্রাজ়িল - এই চারটি দেশই-যে নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন পেতে আগ্রহী, এ তথ্য গোপন নয় মোটেও৷ তবে পরিষদের বর্তমান কাঠামোর সংস্কার করতে তারা যে-যৌথ প্রস্তাব রেখেছে সদ্য, তাতে কোন দেশের নাম করা হয় নি৷ তারা চায়, পশ্চিম ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকা থেকে একটি করে নতুন স্থায়ী সদস্য নেয়া হোক এবং এশিয়া আর আফ্রিকা থেকে দুটি করে৷ আরো চারটি নতুন আসন এশিয়া, আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকার অস্থায়ী সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট করার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে৷
প্রস্তাবের চার উদ্যোক্তা দেশ চায়, জাতিসংঘের ১৯১টি দেশের সাধারণ পরিষদ জুন মাসেই নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির একটি কাঠামো নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুক৷ এবং তারপর প্রার্থী দেশ নির্বাচনের পালা সম্পন্ন হোক জুলাই মাসের মাঝামাঝি৷ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অবশ্য সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য দেশের সমর্থন দরকার হবে৷ নতুন স্থায়ী সদস্যদের ভিটো অধিকার দেয়ার প্রশ্ন নিয়ে বিরোধ ও বিতর্ক দেখা দিতে পারে৷ তবে স্থায়ী আসন পেতে আগ্রহী চারটি দেশের পক্ষ থেকে এ ক্ষেত্রে নমনীয়
অবস্থানের আভাষ দেয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, ভিটো ক্ষমতার প্রশ্নে যেন জাতিসংঘের সংস্কার পদক্ষেপ ব্যর্থ না হয়৷
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যদেশের অন্যতম চীন সংশ্লিষ্ট খসড়া প্রস্তাব সম্পর্কে তার আপত্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই খসড়ার মৌল দিকগুলো এবং চীন সহ বিভিন্ন দেশের অবস্থানের মধ্যে এখনও বড় রকমের ফারাক রয়ে গেছে৷ বেজিং-এ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, এই সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে কোন কোন পক্ষের গুরুতর মতপার্থক্য রয়েছে৷ ফলে এই খসড়া প্রস্তাব জাতিসংঘের ফ্লোরে উপস্থাপিত হলে তা শুধু বিরোধের সৃষ্টি করবে এবং জাতিসংঘের সংস্কার প্রক্রিয়া হবে বিঘ্নিত৷ অতীতে চীন এ কথা আকারে ইঙ্গিতে জানিয়ে দিয়েছে যে, নিরাপত্তা পরিষদে জাপানকে কোন স্থায়ী আসন দেয়ার সে ঘোর বিরোধী৷ অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আভাষ দিয়ে রেখেছে যে, নিরাপত্তা পরিষদে ভিটো ক্ষমতার প্রসার ঘটানোর তারা বিরোধী৷ তবে ওয়াশিংটন স্থায়ী সদস্য পদের জন্য জাপানের প্রার্থীতা সমর্থন করতে আগ্রহী৷ কিন্তু সংশ্লিষ্ট কাঠামোটি সমর্থন করতে সে রাজি নয়৷ গ্রেট ব্রিটেন আর ফ্রান্সের সমর্থন আছে চার প্রার্থী দেশের প্রতিই৷